October 23, 2024

পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ভোট কর্মীরা রাজ্য পুলিশের উপর আস্থাহীন কেন।

1 min read
জয়ন্ত বোস, বর্তমানের কথা। নির্বাচনী উৎসব আমেজে চারিদিকে যখন হৈ হুল্লোর, পাড়ায় পাড়ায় বিভিন্ন ঠেকে যখন রাজনৈতিক চর্চা, তর্ক বিতর্ক এবং রাজনৈতিক ময়দান সরগরম ঠিক সেই সময়ে এবারেই প্রথম সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে নির্বাচন কে ঘিরে আওয়াজ উঠেছে ” নো সেন্ট্রাল ফোর্স, নো ডিউটি” । এক একটি লোকসভা কেন্দ্র সাতটি বিধানসভা নিয়ে গড়া এলাকায় গড়ে মোট ১৪০০- ১৫০০ বুথ অর্থাৎ ভোট গ্রহন কেন্দ্র। লাখো লাখো ভোটাররা ভোট দিবেন তাদের পছন্দের রাজনৈতিক দল এবং দলীয় প্রার্থী কে। কিন্তু এই জাতীয় উৎসবে প্রতিটি বুথে বুথে ভোট গ্রহন করতে দেখা যাবে ভোট কর্মীদের। 



পশ্চিমবঙ্গে এই ভোট কর্মীরাই হচ্ছেন বেশীরভাগ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারী এবং কিছু অংশে ব্যাঙ্কের কর্মচারী। এই জাতীয় উৎসব অর্থাৎ ভারতের লোকসভা নির্বাচন সম্পূর্ণ ভাবে পরিচালনা করেন জাতীয় মূখ্য নির্বাচন কমিশন। আজকের নির্বাচন কে ঘিরে এই প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে মনে পরে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক আন্দোলনের কথা। সকলেই জানেন সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচনের জন্য তিনি একটি বিষয়কে নিয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ” নো আইডেন্টিটি, নো ভোট” এই ইস্যু কে হাতিয়ার করে। সেই আন্দোলনের ফলপ্রসূ আজ দেশজুড়ে ভোটার আইডেন্টিটি কার্ড চালু হওয়া। কিন্তু কি অপ্রত্যাশিত ঘটনা আজ পশ্চিমবঙ্গে তদানিন্তন সেই ঐতিহাসিক আন্দোলনের রুপকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং তারই নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।


 আর এই সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরাই ভোট কর্মীর ভূমিকায়। আর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুলিশ প্রশাসনের উপর সম্পূর্ণ আস্থাহীন হয়ে বর্তমানে রাজনৈতিক সরগরম এর বাজার কে ছাপিয়ে গেছে এক নিরাপত্তার আন্দোলনের স্লোগান ” নো সেন্ট্রাল ফোর্স, নো ডিউটি”। এই প্রশ্ন সর্বত্র ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকার মানুষের কাছে। নিরাপত্তা নিয়ে এমন প্রশ্নের কারন খুঁজতে গিয়ে সকলেই একমত নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে প্রতিটি ভোট কর্মী এবং তাদের পরিবারের মানুষজন। বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে এবং কয়েকটি পৌরসভার নির্বাচনে ভোট কর্মীদের নিরাপত্তা এমন তলানিতে ঠেকেছিল যেখানে শুধু হুমকি, মারধর, লাঞ্ছনাই নয় ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হলো সেই রাজকুমার রায় সন্ত্রাসের বলি , তার পরিবার আজও আতঙ্কের চাদরে আচ্ছাদিত  । রাজ্য পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় এহেন নির্বাচনী সন্ত্রাস শুধুমাত্র ভোট কর্মীরাই নয় অনেক পুলিশ প্রশাসনের দ্বায়িত্বে থাকা মানুষদের এহেন পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয়। এমন পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক নির্বাচনের ময়দানের ইতিহাসে সন্ত্রাসের রক্তে লাল হয়ে আছে। সেই ইতিহাস পুনরাবৃত্তি হতে হতে আজ ভোট কর্মীদের  আতঙ্কে পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। তাদের সাথে আতঙ্কিত সাধারণ ভোটার থেকে পুলিশ প্রশাসনের মানুষও। এই লোকসভা নির্বাচনে নিরাপত্তার আস্থাহীনতায় সকলেই কিন্তু একই রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারী ভোট কর্মীরা সেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন পুলিশের উপর আস্থাহীন হয়ে পরছেন , কেন তার উত্তর ভোট কর্মীদের মধ্যে। তবে বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে আতঙ্কের মাঝে দিনরাত কাটিয়েছেন পুলিশ প্রশাসনের দ্বায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিবারের মানুষজন। আতঙ্কের কাঁটায় যখন ভোট কর্মী, পুলিশ এবং তাদের সকলের পরিবারের মানুষজন বিদ্ধ তখন কিভাবে এক আতঙ্কিত অন্য এক আতঙ্কিতের উপর আস্থা রাখবে সেই কারনেই কি এই আস্থাহীনতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *