January 16, 2025

উত্তর দিনাজপুর জেলার বিখ্যাত তুলাইপাঞ্জি ধানের গবেষণা

বর্তমান কথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুভাষচন্দ্র রায় উত্তর দিনাজপুর জেলার বিখ্যাত তুলাইপাঞ্জি ধানের সঙ্গে উন্নত প্রজাতির আইআর-৬৪ ধানের প্রজনন ঘটিয়ে তুলাইপাঞ্জির উপাদন বৃদ্ধি করছেন । তিনি বলেন তুলাইপাঞ্জি ধান নিয়ে গবেষণা করছেন  দীর্ঘদিন ধরে  । এই ধানের সঙ্গে বাঁশমতি , রঞ্জিত,  প্রভৃতি ধানেরও তিনি প্রজনন ঘটিয়েছেন। কিন্তু আইআর-৬৪ ধানের সঙ্গে তুলাইপাঞ্জির প্রজনন ঘটিয়ে যে ধান পাওয়া যাচ্ছে তা থেকে উপাদিত চালের স্বাদ ও গন্ধ তুলাইপাঞ্জির মতোই অটুট থাকছে এবং উপাদনও দ্বিগুণ হচ্ছে। আগামী দিনে স্বীকৃতি পেয়ে সর্বত্র এই ধানের চাষ হলে তুলাইপাঞ্জির স্বাদ এক রেখেই উপাদন বাড়ানো সম্ভবহবে। অধ্যাপক সুভাষচ

ন্দ্র রায় বলেন, তুলাইপাঞ্জি ধানের সঙ্গে আইআর-৬৪ ধানের প্রজননের মাধ্যমে যে ধান উপাদন হচ্ছে সেই চালের স্বাদ ও গন্ধ একেবারেই তুলাইপাঞ্জির মতো। এই পদ্ধতিতে চাষ করে উপাদনও দ্বিগুণ হচ্ছে। কালিয়াগঞ্জ ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে পরীক্ষামূলক ভাবে এই ধান চাষ করেছি। আগামী দিনে এই ধান সর্বত্র চাষ হলে ধানের উপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে ও তুলাইপাঞ্জির স্বাদের চাল সহজলভ্য হবে। আমি নতুন এই ধানের স্বীকৃতির জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় নমুনা পাঠাব। উত্তর দিনাজপুর জেলা কৃষি দপ্তরের আধিকারিক আয়ুব আলি খান বলেন, তুলাইপাঞ্জির স্বাদ ও গন্ধ বজায় থাকবে অথচ উপাদন বৃদ্ধি পাবে, এমনটা যদি হয় তাহলে সকলেরই ভালো হবে। কালিয়াগঞ্জের উত্তর কাছনা গ্রামে ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে বেশকিছু এলাকায় এই নতুন প্রজাতির ধান চাষ করেছেন সুভাষবাবু। তার আগে ল্যাবরেটরিতে তিনি তুলাইপাঞ্জি ধান ও আইআর-৬৪ প্রজাতির ধানের প্রজনন ঘটিয়ে নতুন ধানের বীজ তৈরি করেছেন। বর্তমানে উত্তর দিনজপুর জেলার রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ ও ইটাহারের কিছু জায়গায় তুলাইপাঞ্জির চাষ হয়। চলতি
বছরে জেলায় ১০ মেট্রিকটনের মতো এই ধান উ
পাদন হয়েছে। এক বিঘা জমিতে দুই টন তুলাইপাঞ্জি ধান উপাদন হয়। 



কিন্তু সুভাষবাবুর দাবি, নতুন প্রজাতির ধান এক বিঘা জমিতে চার টন উপাদন হচ্ছে। সাধারণত উপাদন কম হওয়া, রোগের আক্রমণ বেশি হওয়া, বেশি সার দিলে গাছ নুয়ে পড়া প্রভৃতি সমস্যা থাকার কারণে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষে চাষিরা উসাহ হারাচ্ছেন। এই ধান চাষের জন্য সরকারি ভাবে বিভিন্ন উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা স্বত্ত্বেও চাষ সেভাবে বাড়েনি। এই পরিস্থিতিতে নতুন প্রজাতির এই ধান চাষ করে কৃষকরা আগামী দিনে লাভবান হতে পারবেন বলে সুভাষবাবুর দাবি। পাশাপাশি এই চাষের মাধ্যমে ধানের উপাদনও বাড়ানো সম্ভবজেলা কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, গবেষণার মাধ্যমে যদি তুলাইপাঞ্জির স্বাদ ও গন্ধ এক থাকা স্বত্ত্বেও উপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হয় তাহলে তা চাষের পক্ষে মাইলফলক হবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *