December 22, 2024

এহি হ্যাঁয় বেনারসি বাবু মালগাঁও কা যাদু

1 min read
পিয়া গুপ্তা  কালিয়াগঞ্জ (মালগাঁও )উত্তর দিনাজপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রাম  মালগাও।এই গ্রামের বছর ৩৫ এর মহিলা জ্যোস্না বেগম।এক ছেলে ,এক মেয়ে আর  শ্বশুরী এই নিয়েই তার পরিবার। বছর আগেই স্বামী পাগল হয়ে ঘর ছেড়ে ভিন্ দেশে চলে যান।তার পর থেকেই জ্যোস্নার জীবনের সকল আলো যেন নিভে যায় । পয়সা উপার্জনে কখনো মানুষের বাড়িতে কখনো বা অন্যের জমিতে কাজ করে চলতেন।অভাবের সংসার স্বামী চলে যাওয়ায়  সব দায়িত্ব তার কাঁধে ।

হি হ্যাঁয়  বেনারসি বাবু  মালগাঁও কা জাদু
রৌদ  হোক কিংবা বৃষ্টি মানুষের জমিতে কখনো বা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করেতেন জোস্না।তার অভাবের সংসারে এক আশার প্রদীপ  হয়ে এলেন আবু তাহেব।আবু তাহের কোঠর পরিশ্রমে আজ জোস্না জীবনে একটু আলোর দেখা পেয়েছে ।
আবু তাহেরের কোঠর পরিশ্রমে মহিলারা আজ স্বনির্ভর হযে উঠেছে
মালগাও এ মুন্নি মালাকার,বাসন্তী দেবশর্মা,মুস্তারি খান,জাসমিন বেগমের মতো বহু মহিলারা এক সময়  কৃষিকাজ করে কিংবা  মানুষের বাড়ি দিনরাত কাজ করে দুটো পয়সা জোগার করতেন।
অভাবের সংসারে এক আশার প্রদীপ
এদের মধ্যে কারো স্বামী নেই তো কারো স্বামী থেকেও সংসারে উপার্জনে অক্ষম ।তাই বহু কষ্টে এরা দুটো পয়সা উপার্জন করতেন।তবে আজ মালগাও গ্রামের  বাসিন্দা আবু তাহেরের কোঠর পরিশ্রমে মহিলারা আজ স্বনির্ভর হযে উঠেছে ।ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে কার্পেট।এই সব বেকার অসহায় খেটে খাওয়া মহিলাদের ভগবান হয়ে উঠেছেন আবু তাহেব।মালগাও এর মহিলা জোস্না বেগম জানান একটা সময় ছিল যখন দুটো পয়সার জন্য তিনি এক বাড়ি থেকে ছুটে বেড়াতেন কাজের সন্ধানে ।
শৌখিন কার্পেট তৈরিতে সারা বছর ব্যস্ত থাকেন
পয়সা না থাকায় ছেলে মেয়েদের কেও লেখাপড়া করাতে পারতেন না।সেই অসহায় পরিস্থিতি তে যেন ভগবান হয়ে আবু সাহেব তার পাশে দাডান।তাকে প্রশিক্ষণ দেন কার্পেট তৈরি।আজ এই কার্পেট শিখে তা বাজারে বিক্রি করে তিনি দুটো পয়সার পাচ্ছেন ।
ছোট্ট একটি গ্রাম  মালগাও
আজ আবু তাহের তাদের গ্রামের মানুষ রূপে ভগবান ।কিন্তু হঠাত্ কিভাবে তিনি এই গ্রামের মানুষদের কাজের সন্ধান দিলেন এই ব্যাপারে আবু তাহেব জানানবছর পঁচিশ আগের কথা গ্রামে কাজ না থাকায় সকলে ভিন রাজ্যে চলে যেতেন কাজের সন্ধানে ।আর বাকি যাদের জমি জায়গা রয়েছেতারা  চাষ করে ভাল কিছু করতে চাইলেও মহাজনের ঋণের ফাঁস আর প্রাকৃতিক দুর্যোগে হেরে  যাচ্ছিলেন এলাকার কৃষিজীবী মানুষরা।গ্রামে কাজ না থাকায় সকলে ভিন রাজ্যে চলে যেতেন কাজের সন্ধানে ।আর্থিক অনটনের স্বীকার গ্রামের মহিলাদের  কেউ লোকের বাড়ি গিয়ে কাজ করতেন কেউ বা অভাবের তাড়নায় পাড়ি দিতেন দূরদেশে।
ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে কার্পেট
 সালটা ১৯৮০ তখন তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাস করেই  তখন কাজের খোঁজে পারি দেন বেনারসে ।বেনারস থেকে তিনি কার্পেটের শহর ভাদোহিতে পৌচে যান।ভাদোহি থেকে সুত ও উলের কারুকাজে  তৈরি  কার্পেট  শিখে তিনি ফিরে আসেন নিজের দেশ মালগাও এ।তার পর থেকেই আবু তাহের তার কঠোর পরিশ্রমে স্বনির্ভর করে তোলেন পুরো মালগাও কে।ভিন্ন রাজ্য ছেড়ে গ্রামের পুরুষ মহিলারা এখন গ্রামে ফিরে এসেছেন।উভয়ই  এখন শৌখিন কার্পেট তৈরিতে সারা বছর ব্যস্ত থাকেন।
এখানকার বহু অসহায় দরিদ্র মহিলারা আবু তাহেব এর মাধ্যমে খুঁজে পান বেঁচে থাকার মানে।আজ মালগাও গ্রামের মহিলারারং বাহারি কার্পেট, গালিচা তৈরির জন্য দেশ বিদেশে বিখ্যাত ।আজ কার্পেট ভিলেজ নামেই এই গ্রামকে চেনেন সবাই। জ্যোস্না ,বাসন্তী ,মুস্তারি,জাসমিনের মতো বহু মহিলাদের তিনি কার্পেট প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের স্বনির্ভর করে তুলেছেন।
শুধু মহিলা নয় গ্রামের বহু বেকার ছেলেদের তিনি কর্মসংস্থান দিয়েছেন ।এই গ্রামের মহিলাদের হাতের নিপুন ছোয়ায় আজ তৈরি হচ্ছে এ
কের পর এক সুদৃশ্য কার্পেট
, গালিচা উত্তরদিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মালগাওগ্রাম পঞ্চায়েতের মালগাও গ্রামে প্রায় দশ হাজার পরিবারের রুটিরুজি নির্ভর করে এই কার্পেট, গালিচা তৈরির ওপর।
এই গ্রামের মহিলাদের তৈরি আজ পৌচে যাচ্ছে আমেরিকা, ইউরোপের মতো জায়গায় ।আবু তাহের এই উদ্যেগে তিনি রাজ্য সরকারের কাছেও পুরস্কৃত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *