ব্লাড ব্যাংকে রক্তের আকাল , রক্তের চাহিদা পুরনে রক্তদান শিবিরের প্রশাসনিক ছাড়পত্রের প্রয়োজন কার স্বার্থে।
1 min readব্লাড ব্যাংকে রক্তের আকাল , রক্তের চাহিদা পুরনে রক্তদান শিবিরের প্রশাসনিক ছাড়পত্রের প্রয়োজন কার স্বার্থে।
জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ। রক্তের প্রয়োজনে রক্তদান কর্মসূচি, রক্তদান শিবির। এক ইউনিট রক্তের প্রয়োজনে একজন মূমূর্ষ রুগীর পরিবারের সদস্যরা উদভ্রান্ত হয়ে ছুটে বেড়ায়। যেমন করেই হোক তাকে বাঁচাতেই হবে। হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে রক্তের আকাল, রক্ত নেই। সেই সময় পরিবারের অন্য কোনো সদস্য, বন্ধু বান্ধব, পাড়া প্রতিবেশী এমনকি সারা বছর ধরে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে রক্ত জোগান দেওয়া মানবিক কারিগর সমাজসেবী বন্ধুরা এগিয়ে আসেন মূমূর্ষ রুগীকে বাঁচাতে এক ইউনিট রক্ত দিতে। রক্ত তৈরীর কারখানা বিশ্বের কোথাও নেই, আছে একমাত্র মানব শরীরে অর্থাৎ মানুষ হচ্ছে রক্তের কারখানা। এক ফোঁটা রক্ত একজন মূমূর্ষ রুগীর প্রান বাঁচাতে পারে। এই ডায়লগ শুনতে শুনতে পচে গেছে কারন এই শব্দগুচ্ছ প্রায়ই মানুষ মানবিক দিক দিয়ে ভাবে না বলেই।
এই বিশ্বে সবচাইতে স্বার্থান্বেষী যদি কেউ হয়ে থাকে তাহলে এই মানবজাতি। পরিবারের মূমূর্ষ রুগীর রক্তের প্রয়োজনে ঐ গভীর সঙ্কটঘন মূহুর্তে যিনি এক ইউনিট রক্তের জন্যে এক উদ্বেগ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করতে করতে হাঁপিয়ে ওঠে এক ইউনিট রক্ত জোগাড় করতে সক্ষম হোন সেই বেশীরভাগ মানুষগুলোই অন্যের প্রয়োজনে মানসিকতা, মানবিকতায় এগিয়ে আসেন না, তবে আসেন খুব কম সংখ্যক জনগন। আর বছরের প্রতিটি দিন, প্রতিটি সময়
যে মহান মানুষগুলো, অর্গানাইজেশন গুলো , সামাজিক প্রেক্ষাপটে ক্লাবগুলো ব্লাড ব্যাংকে রক্তের চাহিদা পুরনে, রক্তের জোগান দিতে কারিগরের ভুমিকা পালন করেন তারাতো মানবকল্যাণে মানবিকতায় নমস্য। নিঃস্বার্থ ভাবে রক্তদান কর্মসূচি পালন, রক্তদান শিবির , রক্তদানের সচেতনতামূলক সামাজিক দায়িত্ব পালন করেন এবং ব্লাড ব্যাংকে রক্তের চাহিদা পূরণ করেন , মূমূর্ষ রুগীদের এবং তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ান তারাই প্রকৃত ঈশ্বর। আর এই মানবিক নমস্য ঈশ্বর রাই মূমূর্ষ রুগীদের জন্য, ব্লাড ব্যাংকের রক্তের চাহিদা পুরনের জন্য রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে
প্রশাসনিক অনুমতি নিতে রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকেন, কিসের স্বার্থে বলতে পারেন কেউ। কি রক্তে ধর্ম আছে? কি রক্তে রাজনীতি আছে? কি রক্তে জাতপাত আছে? না নেই, আছে একটি ধর্ম তাহলো মানবিকতার ধর্ম ও কর্ম। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এক ত্রাস সৃষ্টি হয়েছে। আতঙ্কে মানুষের ঘুম নেই, রোজগার নেই, দুবেলা দুমুঠো অন্নের জোগাড়ে হিমসিম খাচ্ছে মানুষ, কর্মহীন হয়ে পরেছে মানুষ। আগামী দিনে কিভাবে বেঁচে থাকবে এই দুঃস্বপ্ন মানুষকে গ্রাস করছে অহোরহ। কারন বিশ্ব ত্রাস করোনা ভাইরাসের ছোবল, সংক্রমণ। এর মধ্যেই চলছে বেঁচে থাকার আপ্রাণ সংগ্রাম। ৮০০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পারি দিচ্ছে পরিবারের কাছে ফিরে আসার জন্যে পরিবারের আপনজন জীবনে বেঁচে থাকার তাগিদ নিয়ে । এমন পরিস্থিতিতে মানুষ যখন দিশেহারা তখনই হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে রক্তের আকাল। চাহিদা পূরণ হবে কিভাবে। লকডাউন , লকডাউন আর লকডাউনের ফাঁদে সকলে গৃহবন্দি, সকলেই চিন্তিত , উদ্বিগ্ন এই বুঝি করোনা এসে ডাকছে। তবুও হাল ছেড়ে দেয়নি সমাজের মানবিক নমস্য ব্যাক্তি, অর্গানাইজেশন, ক্লাব কর্তৃপক্ষরা এমনকি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। যেনতেন প্রকারে মূমূর্ষ রুগীদের এবং তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতেই হবে এক ইউনিট রক্ত নিয়ে, ব্লাড ব্যাংকে রক্তের চাহিদা পুরনে। তাই জন্য চলছে রক্তদান কর্মসূচি, রক্তদান শিবির। স্বার্থ তো এখানেই জড়িয়ে আছে তা হলো মানবিকতার স্বার্থ। এই মানবিক স্বার্থে প্রয়োজন কি এই মুহূর্তে প্রশাসনিক অনুমতি , জিজ্ঞাসা বছর ধরে রক্তদান শিবির গড়ে তোলা সমাজসেবী মানবিক মুখ সন্তোষ বেঙ্গানীর। তবুও মানবজাতির প্রয়োজনে নিঃস্বার্থ ভাবে এগিয়ে আসা মানবিক নমস্য ব্যাক্তি দের ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে কখন প্রশাসনিক কর্তা মহোদয় অফিসে প্রবেশ করবেন। আবার উপস্থিত থাকলেও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে দেখিয়ে দিচ্ছেন উপরতলার প্রশাসনিক কর্তাদের। কিসের স্বার্থে একটু ব্যাখ্যা করা যাবে কি? আজ এই প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে একটি বিশেষ ঘটনা প্রসঙ্গের সাক্ষী হয়ে নিজেকে ভাবতে অবাক লাগছে সত্যি আমরা কি মানুষ। ঘটনা প্রসঙ্গে ১৭ মে রবিবার রাত ৭.৪৫ মিনিট নাগাদ কালিয়াগঞ্জ থানার সামনে জনা পাঁচজনের মধ্যে একজন মাস্ক পরা ভদ্র মহোদয় প্রতিবেদকের নাম ধরে ডাকলেন। যিনি ডাকলেন তিনিই কালিয়াগঞ্জ এতদ অঞ্চলের এক মানবিক মুখ , যিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে মূমূর্ষ রুগীদের রক্তের প্রয়োজনে এবং ব্লাড ব্যাংকের রক্তের চাহিদা পুরনে নিজেকে দীর্ঘদিন ধরেই আত্মনিয়োগ করেছেন তিনিই সন্তোষ বেঙ্গানী। সঙ্গে আছেন কালিয়াগঞ্জ মুস্তাফানগর ( যনডিপীড়) অঞ্চলের কালিয়াগঞ্জ রাজবংশী গোভুড় সংঘের ৪ জন সদস্য । উক্ত সংঘের পরিচালনায় আগামী ১৯ মে একটি রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হবে সরকারি নির্দেশাবলী অনুসরণে সর্বাধিক ৩০ ইউনিট রক্ত যেখানে রক্তদান করবেন রক্তদাতারা। ঐ সময়ে উক্ত সংঘের সভাপতি সুধীর সরকার মৌখিক ভাবে বিষয় সম্পর্কিত জানিয়ে একটি আবেদন পত্র বের করেন যেখানে কালিয়াগঞ্জ পুলিশ প্রশাসনের কাছে ১৯ তারিখে রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সেই বিষয়ে একটি ইনটিমেশন পত্র। উক্ত সংঘের সভাপতি সহ তিনজন কর্তাব্যক্তিরা কালিয়াগঞ্জ পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন পত্রটি জমা করতে গেলে বলা হয় তাহারা এই রক্তদান শিবির করার বিষয়ে কোনো অনুমতি দিতে পারবেন না। জেলা প্রশাসন জেলা শাসকের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। উক্ত সংঘের সভাপতি সহ অন্য কর্মকর্তারা বারবার বলেন তাদের কাছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট তথা উপাধ্যক্ষ মহাশয়ের করা ১১/৫/২০২০ তারিখের ১০৯১ মেমো নং যুক্ত পত্রে মোট ৯ জন রক্তদান শিবির করেন এমন অর্গানাইজর দের এই লকডাউন পরিস্থিতিতে ব্লাড ব্যাংকের রক্তের চাহিদা পুরনের জন্যে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক সর্বাধিক ৩০ ইউনিট রক্ত জোগাড় করবার ক্ষেত্রে রক্তদান শিবির করতে অনুমতি দিয়েছেন। এমনকি উক্ত তারিখের উক্ত মেমো নং পত্রে পরিষ্কার উল্লেখ করা হইয়াছে রক্তদান শিবির যে থানার অন্তর্গত অনুষ্ঠিত হইবে সেই থানার পুলিশ প্রশাসনের কাছে রক্তদান শিবির সম্পর্কে শুধুমাত্র অবগত করতে হবে, কখনোই উল্লেখ করা নেই পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুমতি নিতে হবে। উক্ত সংঘের সভাপতি সহ অন্য কর্মকর্তারা কালিয়াগঞ্জ থানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার কে বিষয়টি জানালেও পুলিশ প্রশাসন বারবার একটি বার্তাই দেন জেলা শাসকের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। বিষয় সম্পর্কিত ভাবনা চিন্তার অবকাশ নেই যে এই মুহূর্তে দৈনন্দিন কয়েকশো মূমূর্ষ রুগী কে বেঁচে থাকার জন্য রক্তের প্রয়োজনে পরিবারের সদস্যরা উদভ্রান্ত হয়ে কিভাবে ছুটে বেড়াচ্ছেন এই বর্তমান এই পরিস্থিতির মাঝে। বেঁচে থাকার রসদ এক ইউনিট রক্ত একজন মূমূর্ষ রুগীর জন্যে যে মানবিকতায় সামিজিক প্রচেষ্টা , যে উদ্যোগ তার জন্য কি উদ্যোক্তাদের প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরতে হবে ? ঘন্টার পর ঘন্টা অফিসারের সাথে দেখা করতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে? এই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েই আজকের এই প্রতিবেদন। মানবিক তুমি একগুচ্ছ অমানবিকের সামনে দাঁড়িয়ে। বিপদ সঙ্কটঘন মূহুর্তে নিজেদের প্রয়োজনে , নিজেদের স্বার্থে অমানবিক মুখগুলো মানবিক চেতনা সম্পন্ন সমাজসেবী দের কাছে গিয়ে যখন এক ইউনিট রক্তের জন্য আকুল ভাবে কাকুতি মিনতি করেন তাদের প্রিয়জন কে বাঁচানোর তাগিদে তখন কি তারা একবারের জন্য ভাবেন অন্য মূমূর্ষ রুগীদের কথা সহ তাদের পরিবারের কথা। না কখনোই ভাবেন না, অকপটে ভুলে যান ইচ্ছাকৃত ভাবেই, এক জঘন্য মানসিকতায়। আর মনে রাখেন না বলেই বছর ধরে মানুষের পাশে দাঁড়ানো ঐ সকল মানবিক মুখ সম্পন্ন ব্যাক্তিদের, অর্গানাইজেশন কর্তাদের এক প্রশাসনিক ঘর থেকে অন্য প্রশাসনিক দরজায় দরজায় ঘুরতে হয়, ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। কিসের স্বার্থে আপনারাই বলবেন। শতশত বছর ধরে বেঁচে থাকুক সমাজের মানবিক মুখগুলো, জন্ম নিক আরো সহস্রাধিক মানবিক মুখ অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।