কালিয়াগঞ্জে বন্ধ হয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী হরেন্দ্র মেমো রিয়াল শিল্ডের ফুটবল খেলা আবার নামানো নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু
1 min readকালিয়াগঞ্জে বন্ধ হয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী হরেন্দ্র মেমো রিয়াল শিল্ডের ফুটবল খেলা আবার নামানো নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু
তপন চক্রবর্তী–কালিয়াগঞ্জ(উত্তর দিনাজপুর)–সত্তর দশকে বন্ধ হয়ে যাওয়া রাজ্যের একসময়কার ঐতিহ্যবাহী হরেন্দ্র মেমোরিয়াল শিল্ডের ফুটবল খেলা পুনরায় যাতে কালিয়াগঞ্জ শহরে শুরু করা যায় তার জন্য শুরু হল নতুন উদ্যমে চিন্তা ভাবনা।খবর নিয়ে জানা যায় ১৯৬০সালে সেই সময়কার কালিয়াগঞ্জের মত প্রত্যন্ত গ্রামে প্রয়াত প্রফুল্ল গুহ,তড়িৎ মজুমদার,সমাজসেবী মনিন্দ্র নাথ কুন্ডু,অরুন চক্রবর্তী(বুড়া দা),খাজিরুদ্দিন আহম্মেদ,যা মিনী তালুকদার,মিহির ভৌমিক আন্তঃরাজ্য ফুটবল টুর্নামেন্ট নামানোর চিন্তা ভাবনা করেছিলেন।চিন্তা ভাবনা করেই চুপ করে বসে থাকেনি।
১৯৬০ সালে প্রথম কালিয়াগঞ্জ টাউন ক্লাবের প্রয়াত সম্পাদক তড়িৎ মজুমদারের সাথে উৎসাহী ফুটবল পাগল একঝাঁক যুবকের তৎপরতায় শুরু করা হয় “হরেন্দ্র মেমোরিয়াল চ্যাম্পিয়ন শিল্ড ও কালিয়াগঞ্জ টাউন ক্লাব রানার্স আন্তঃ রাজ্য ফুটবল টুর্নামেন্টের বড় আকারের খেলা।হরেন্দ্র মেমোরিয়াল শিল্ডের নামকরণ হয় সমাজসেবী ও ক্রীড়া প্রেমী প্রয়াত মনীন্দ্র নাথ কুন্ডুর প্রয়াত পিতা হরেন্দ্র নাথ কুন্ডুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে।
জানা যায় হরেন্দ্র মেমোরিয়াল নামাঙ্কিত শিল্ডটি সেই সময় ১৪০ ভরি রুপা দিয়ে বানিয়ে আনা হয়েছিল সুদূর কলকাতা থেকে।হরেন্দ্র মেমোরিয়াল শিল্ডের প্রথম ফুটবল খেলা শুরু হয় কালিয়াগঞ্জের হাসপাতাল পাড়ার রানিং বুলেট ক্লাবের মাঠে।পরবর্তীতে এই খেলার পরিচালনার দায়িত্ব নেয় কালিয়াগঞ্জ স্পোর্টস এসোসিয়েশন।যার সম্পাদক ছিলেন শিক্ষক তথা ক্রীড়া সংগঠক প্ৰফুল গুহ।বৃহস্পতিবার কালিয়াগঞ্জে প্রয়াত সমাজসেবী ও ফুটবল ক্রীড়া প্রেমী মনিন্দ্র নাথ কুন্ডুর ছেলে নাট্যপ্রেমী রবীন্দ্র নাথ কুন্ডু তার বাসায় বসে
ঐ তিহ্যবাহী হরেন্দ্র মেমোরিয়াল শিল্ড নিয়ে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলছিলেন।রবীন্দ্র নাথ কুন্ডু আলাপচারিতায় বলেন সেই সময় তিনি বিদ্যালয়ের ছাত্র।তিনি বলেন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সেই সময় তার প্রয়াত বাবার সাথে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক প্ৰফুল গুহ,অরুন কাকু,খাজিরুদ্দিন কাকু,তড়িৎ কাকুর কতটা উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল তা দেখেছে।সেই সময় ১৯ পয়সার টিকিট কেটে মাঠের চারপাশে উৎসাহী ক্রীড়া প্রেমী মানুষদের কি
পরিমান ভীড় ছিল খেলা দেখার জন্য।যোগাযোগ বিহীন সেই সময়কার কালিয়াগঞ্জে হরেন্দ্র মেমোরিয়াল শিল্ডের খেলায় অংশগ্রহণ করতে আসানসোলের বার্নপুর,বিহারের কোশি,হালিশহর,জেএমসি(মালদা),ফরবেশগঞ্জ,কলকাতার এরিযান ক্লাবের হয়ে খেলতে আসতেন স্বনামধন্য এ রিয়ান্সের খেলোয়াড় বীরেন গুহের মত খেলোয়ারগন।রবি বাবু বলেন কালিয়াগঞ্জ শহরে পুনরায় হরেন্দ্র মেমোরিয়ালের মত ঐতিহ্যবাহী শিল্ডের খেলা নিয়ে কালিয়াগঞ্জের ক্রীড়া প্রেমীদের এগিয়ে আসা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।এই ধরনের একটি বড় টুর্নামেন্ট কালিয়াগঞ্জে সব সময় হতে পারে।শুধু চাই আন্তরিকতা।এই খেলা শুরুকে কেন্দ্র করে সবার এগিয়ে আসা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।প্রয়াত সমাজসেবী ও ক্রীড়া প্রেমী মনীন্দ্র নাথ কুন্ডুর ছোট ছেলে ব্যবসায়ী পার্থ কুন্ডু বলেন আমরা সেই হরেন্দ্র মেমোরিয়াল শিল্ডটি সযত্নে অনেক আশায় রেখে দিয়েছি এই ভেবে যে আবার একদিন না একদিন এই শিল্ডের খেলা দেখতে পাবো।কিন্তু দীর্ঘ দিন হল এত সুন্দর একটি ফুটবল টুর্নামেন্টে বন্ধ আছে যা মোটেও কাম্য নয়। তিনি বলেন কালিয়াগঞ্জ বর্তমানে বড়সড় একটি বাণিজ্য শহর বলা যায়।যখন কালিয়াগঞ্জে কিছু বলতে কিছু ছিলনা তখন যদি বিশাল আকারের আন্তঃরাজ্য ফুটবল খেলা হতে পারত তাহলে এখন কেন হতে পারেনা। পুনরায় নুতন উদ্যমে আমাদের একসময়কার ঐ তিহ্যবাহী হরেন্দ্র মেমোরিয়াল শিল্ডের ফুটবল খেলা সবার সহযোগিতায় শুরু করা দরকার। তিনি বলেন সেই সময়কার যোগাযোগ বিহীন গ্রাম্য কালিয়াগঞ্জে খেলতে আসতো ইস্টবেঙ্গল,মহামেডান,স্পোর্টিং ইউনিয়নের মত ক্লাবগুলি।আমরা কালিয়াগঞ্জ পার্বতী সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে খেলা দেখতে যেতাম । টুর্নামেন্টের খেলা ছাড়াও কলকাতার বিখ্যাত টিমগুলি প্রদর্শনী ম্যাচে অংশগ্রহণ করত।কিন্তু এখন খেলার মাঠ আছে কিন্তূ খেলা উঠে গেছে।।আমরা চাই কালিয়াগঞ্জের ফুটবল ক্রীড়া প্রেমীরা এ ব্যাপারে এগিয়ে আসুক।আবার নুতন উদ্যমে শুরু হোক ঐতিহ্যবাহি হরেন্দ্র মেমোরিয়াল আন্তঃরাজ্য ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা।কারন।কালিয়াগঞ্জ থেকে একরকম খেলা ধুলা উঠেই গেছে।রাজ্য সরকার থেকে ক্লাবদের প্রচুর অর্থ দিচ্ছে কিন্তূ খেলা ধুলার ব্যাপারে ক্লাবগুলোর কোন উৎসাহ দেখা যাচ্ছেনা।এ ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ ক্রীড়া পর্ষদের অন্যতম সদস্য তথা উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের কো-মেন্টর অসীম ঘোষ এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন এই ধরনের প্রস্তাব অনেকদিন আগেই আসা উচিৎ ছিল।অসীম বাবু বলেন আমি নিজেও দেখেছি কালিয়াগঞ্জের সত্তর দশকের হরেন্দ্র মেমোরিয়াল শিল্ডের ফুটবল খেলা কত উন্নত মানের ছিল।অসীম বাবু বলেন লকডাউন শেষ হলেই কালিয়াগঞ্জের ক্রীড়া প্রেমিদের এবং ব্লক প্রশাসনের সবাইকে নিয়ে সিধান্ত নেব কিভাবে কোন সময় আমাদের বন্ধ হয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী হরেন্দ্র মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা পুনরায় শুরু করা যায়।কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার পৌরপিতা কার্তিক চন্দ্র পাল বলেন এই প্রস্তাব কালিয়াগঞ্জের আগামীদিনের উঠতি খেলোয়াড়দের অক্সিজেন যোগাবে।তাছাড়া আমাদের এই এলাকার ছেলেরা ভালো ফুটবলারদের সামনে থেকে খেলা দেখার সুযোগ পাবে যার প্রভাব সুদূরপ্রসারী হবে বলে তিনি মনে করেন।এটা অত্যন্ত ভালো প্রস্তাব।লকডাউন শেষ হলেই এটা নিয়ে সবাইকে নিয়ে বসবো।তাই তিনি সর্বতভাবে এই খেলা আবার শুরু করা হলে সমস্ত রকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক তপন দেবসিংহ বলেন কালিয়াগঞ্জের মত একটি পৌর শহরে একটি ঐতিহ্যবাহী হরেন্দ্র মেমরিয়ালের মত একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা বন্ধ থাকবে এটা হতে পারেনা।ছোট বেলায় দেখেছি নামকরা ফুটবল দল এই টুর্নামেন্টে খেলতে আসতো।।সবার সহ যোগীতা নিয়ে আবার শুরু করা হলে তিমি এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন বলে জানান।