December 26, 2024

লকডাউনে হাত স্যানেটাইজ, পাশাপাশি লিভার স্যানেটাইজে সরকারি দাওয়াই।

1 min read

লকডাউনে হাত স্যানেটাইজ, পাশাপাশি লিভার স্যানেটাইজে সরকারি দাওয়াই।

জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ।করোনা এসে গেছে, বিশ্ব জুড়ে থাবা বসিয়ে ভারতে প্রবেশ করছে, রাজ্যে প্রবেশ করছে সুতরাং জনতা কার্ফু থেকে লকডাউন শুরু। সরকারি ভাবে প্রচার বাড়ির বাহিরে অকারণে কেউ বের হবেন না, মুখে মাস্ক বাধ্যতামূলক, সোশ্যাল দূরত্বকে মান্যতা, সাবান দিয়ে বারবার হাত ধুয়া, স্যানেটাইজ করা ইত্যাদি সতর্কতা অবলম্বন জারি কারণ ঐ মহান নোবেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণ

প্রতিরোধে আগাম সতর্কতা। ব্যবসা বাণিজ্য সব বন্ধ। প্রত্যেক প্রশাসনিক অফিসগুলোর প্রবেশ পথে স্যানেটাইজ ক্যাম্প। জনগন প্রবেশ করলে ভালো করে হাত ধুয়ে প্রবেশের অনুমতি।

পকেটে পকেটে ছোট ছোট স্পিরিট মেশানো স্যানেটাইজের শিশি নিয়ে ঘুরছেন ছোটবড় সকল কর্তারা, সমাজ সচেতক মহোদয়গন, জনসমক্ষে একটু স্টাইলে পকেট থেকে বেড় করে পাবলিক শোতে হাত স্যানেটাইজ করে নেওয়ার কম্পিটিশন। এর মধ্যেই ছোট, বড়, মাঝারি সব ব্যবসার ঝাঁপ বন্ধ। খোলা থাকলো দৈনন্দিন এসেনশিয়াল প্রোডাক্টের দোকানের ঝাঁপ। স্তব্ধ হয়ে গেল চারিদিক। শুধু হাহাকার, কিভাবে চলবে সংসার, রোজগার বন্ধ।

 

 

তবুও প্রশাসনিক কড়া পদক্ষেপের মাঝে একটু চায়ের দোকান, চপ ভাজার দোকান, পান সিগারেটের দোকান সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ী দোকান খুলতে গেলেই জুটছে প্রশাসনিক মোটা লাঠির বাড়ি। বিশেষ করেতো মোড়ের মাথায় গোবিন্দ দার চা, ঘুগনির দোকান আজ প্রায় ৩৬ দিন ধরে বন্ধ। রোজগার স্টপ। বাড়িতে চারজনের সংসার। সারাদিন ঐ চা ঘুগনি বিক্রি করেই কোনোরকমে সংসার টা চলে আর কি গোবিন্দ দার। বাড়িতে হাত ধোয়ার সাবান কিনবে নাকি চালের ব্যবস্থা করবে। আর হাত স্যানেটাইজ করা কি জিনিস গোবিন্দ দা আজও ভাবছে। এই মুহূর্তে গোবিন্দ দা সকাল থেকেই রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, গোবিন্দ দার সহধর্মিনী গিয়েছেন নাকি স্থানিয় কোনো মন্দির থেকে ত্রান দিচ্ছ, সেই ত্রান আনতে, বাড়ির বড় ছেলেটি বাজারে গেছে কয়েক আঁটি শাক নিয়ে বিক্রি করতে। এই ধরনের সংসারের সংখ্যা অসংখ্য, দিন আনে দিন খাওয়া মানুষগুলো একদিকে অর্থ সঙ্কটে ভুগছে এবং অন্যদিকে করোনার আতঙ্কে। সরকার নাকি এদের পাশে, এদের সাথে। যদি সাথেই থাকতো তাহলে হাজার হাজার গোবিন্দদা চা ঘুগনির দোকানটা খুলতে পারতো হয়তো। মোড়ের মাথায় মনোজের ছোট্ট হোটেল টাও হয়তো খুলতে পারতো। লেডিস জেন্টস এর ছোট্ট কাপড়ের দোকান টাও হয়তো একবেলা খুলতে পারতো। কিন্তু দেশের কথা, রাজ্যের কথা সরকার যেটা ভেবে তাদের নির্দেশ দেন সেটাতো মানতেই হবে কিন্তু সরকারি নির্দেশক্রমে লিভারের যে দাওয়াই গতকাল থেকে লকডাউনে বন্ধের আওতার বাইরে থেকে গেল সেই বিষয়ে ঐ গোবিন্দ, মনোজের মতো দৈনন্দিন করে খাওয়া অগনিত মানুষগুলোর ভরষা কিন্তু এই মুহূর্তে উপর ওয়ালা ছাড়া আর কেউই না। ৫ টাকার সাবান দিয়ে হাত স্যানেটাইজ শরু হয়ে ৩৫% দাম বেড়ে যাওয়া মূল্যবান লিভার স্যানেটাইজ করা বর্তমানের সরকারি নির্দেশের দাওয়াই বিক্রি আজ ভারতবর্ষের বেশিরভাগ জায়গার সাথে কালিয়াগঞ্জের কর্মহীন গৃহবন্দী রোজগার বিহীন দুঃস্থ গরীব অসহায় পরিবারগুলোর কাছে এক স্বপ্ন হয়ে থাকলো। বিপিন বাবুর কারন সুধা , মেটাই জ্বালা মেটাই ক্ষুদা,,,,,,করোনা সংক্রমন দাওয়াই য়ের খোঁজে এমনি যে তার যাদু,,,,,। আর এই যাদুতেই মিলবে সরকারের লক্ষ্মীলাভ কিন্তু চা, ঘুগনি, ছোট্ট হোটেল থেকে কি মিলবে লক্ষ্মীলাভ। আর মিলবে না বলেই দোকান খুলতে দেওয়ার অনুমতিতে লিভার স্যানেটাইজ হবে , করোনা ফ্রী সুরা বিক্রি হবে, লম্বা লাইন হবে কিন্তু দুঃস্থ গরীব মানুষের রোজগারের ঝাঁপ বন্ধ থেকেই যাবে। সত্যি করোনা তুমিও কত নির্মম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *