October 27, 2024

সুচিকিৎসার জন্য শিকল বাঁধা অবস্থায় মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েকে নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ বৃদ্ধা মা

1 min read
বিশ্বজিৎ মন্ডল, মালদা : সুচিকিৎসার জন্য শিকল বাঁধা অবস্থায় মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েকে নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ বৃদ্ধা মা। শুক্রবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ হঠাৎই শেকলবাঁধা যুবতীকে রাস্তায় হাটতে দেখে অবাক শতাধিক মানুষ। চোখে জল নিয়ে পা এবং হাতে তালাবন্ধ অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে মালদা জেলা আদালত চত্বরে যায় মা। জানা গিয়েছে, তাদের বাড়ি মালদা থানার মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহনবাগান এলাকায়।
 গত কয়েক বছর আগে বাবার মৃত্যু হয়। দাদা ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। অসহায় মা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। জানা গিয়েছে ,গত পাঁচ বছর আগে প্রিয়া বিশ্বাস সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশোনা করত। হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে সে। ওই অবস্থায় তার চিকিৎসাও করে পরিবারের লোকেরা। কিন্তু ভালো হয়নি।  দিনে, দিনে তার মানসিক অবস্থার অবনতি হয়। মা কনেকা বিশ্বাস পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। তার পক্ষে সংসার চালানোর পর মেয়ের চিকিৎসা করানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে বাড়ির একমাত্র ছেলে বিদ্যুৎ বিশ্বাসে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয় শ্রমিকের কাজ করতে। এলাকার সহৃদয়  কিছু মানুষ এবং স্থানীয় বিধায়কের চেষ্টায়, শুক্রবার ওই যুবতীকে নিয়ে আদালতে যান মা। তিনি জানিয়েছেন, মেয়ের চিকিৎসা করানোর জন্য অনুমতি নিতে আদালতে এসেছেন তারা। সেখান থেকে অনুমতি পেলে বহরমপুরে নিয়ে যাওয়া হবে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবতীকে। এক প্রতিবেশী জগৎপতি রায় জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন ওই যুবতী।  সুচিকিৎসার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা। সেখান থেকে অনুমতি নিয়ে যাওয়া হবে বহরমপুরে।
    মা মেনোকা দেবী অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে আদালত চত্বরে আসেন। মেয়ের চিকিৎসা হবে, এই আশায় বুক বেঁধেছেন তিনি। শিকল বাঁধা দৃশ্য দেখে শতাধিক মানুষ অবাক হয়ে যান। একজন যুবতীর পা এবং হাতে শিকল বাঁধা, শুধু তাই নয় সেই শেকলে বন্ধ করা রয়েছে দুটি তালা। চাবি রয়েছে মায়ের হাতে।  তারা জানিয়েছেন তালা খুললেই মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে কাউকে আঘাত করতে পারে। সেই ভয়ে সর্বক্ষণ শিকলে তালা বন্ধ করে রাখা হয়। করুণ দৃশ্য দেখে অনেকে দাঁতে আঙুল কাটেন। সরকারি সাহায্য পেয়ে ওই যুবতী চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে আবার যেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক এই কামনা করেন পথ চলতি মানুষেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *