October 24, 2024

৯০য়ের কাঞ্চু বালা আজও পথে পথে,শরীর না চললেও জোর করে ক্রাচে ভর দিয়ে পেটের তাগিদে হেঁটে হেঁটে ঘুরছে, নেই খাবার,না আছে মাথা গোঁজার আস্তানা

1 min read

৯০য়ের কাঞ্চু বালা আজও পথে পথে,শরীর না চললেও জোর করে ক্রাচে ভর দিয়ে পেটের তাগিদে হেঁটে হেঁটে ঘুরছে, নেই খাবার,না আছে মাথা গোঁজার আস্তানা

তপন চক্রবর্তী,কালিয়াগঞ্জ,২৭ সেপ্টেম্বর: পেট বয়স মানেনা।তাই বয়সের ভারে নরতে চড়তে অসুবিধা হলেও দুটি ক্রাচে ভর করে পেট ভরানোর তাগিদে ৯০ বছরের কাঞ্চু বালা ক্রাচে ভর করে গোটা কালিয়াগঞ্জ শহর ঘুরে বেড়ায়।সকালে শহরে এসে পাড়ায় ঘুরে বিকেলে শান্তি কলোনিতে চলে যায়।বুধবার সাত সকালে কালিয়াগঞ্জ শহরের মহেন্দ্রগঞ্জ বাজার এলাকায় প্রতিদিনের মতই কাঞ্চুবালা ক্রাচে করে খুবই ধীরে ধীরে ভিক্ষায় বের হলে এই প্রতিবেদকের সাথে দেখা হলে দীর্ঘক্ষণ কথা বার্তা হয়।৯০ বছরের বৃদ্ধা এই প্রতিবেদককে বলেন আর পারিনা বাবা।সকলকে উপরআলা নিয়ে গেলেও আমাকে কেন টেনে নেয়না?

 

এই বয়সে আর চলতে পারিনা। কিন্তূ আমাকে কে চালাবে বল?আমার এই পৃথিবীতে কেও নেই বাবা।দুই ছেলে ছিল তারাও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে অল্প বয়সে।নিজের স্বামীর ভিটা ছিল বেটা মারা যাবার পর বৌমা আমাকে সেই বাড়ি থেকেও জোর করে তাড়িয়ে দিলে দুর্গাপুরের বাড়ি ছেড়ে কালিয়াগঞ্জের শান্তি কলোনিতে আমি থাকি।কালিয়াগঞ্জের মানুষ আমার আত্মীয় পরিজন।তারাই আমার দুটা খাবার জোগাড় করে দেয় বাবা।এক হাজার টাকা করে আমাকে একটা পেনশন করে দিলেও কয়েক মাস পাবার পরে আর পাইনা।কিভাবে বেচেঁ থাকবো।নিজের কোন বাড়ি ঘর নেই।

পরের একটা বাড়িতে দয়া করে আমাকে থাকতে দেয়।সেই ঘরেও জল পরে।একটা পলিথিনের জন্য কালিয়াগঞ্জ পৌর সভায় চাইতে গেলেও পৌর সভা থেকে পলিথিন পাওয়া যায়নি।এখন নেই পুজোর আগে পাওয়া যাবে বলে চেয়ারম্যান জানান।কোন চিন্তা করবো বাবা,পেটের জোগাড় করবো না মাথার উপর জল পরা বন্ধ করবো?সরকার থেকে একটু সাহায্য করলে যে কয়টা দিন আমাকে উপরওআলা না নিয়ে যাচ্ছে সেই কটা দিন একটু ভালো থাকতে পারতাম।আমার কপালে কি সেই সুখ ভগবান দিবে? দিবেনা বাবা।যদি দিত তাহলে কি আমার এই হাল হত? কালিয়াগঞ্জের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বাপ্পা বাবা আমাকে খুব সাহায্য করে বলে কাঞ্চুবালা জানান।

 

ও আমার পেটের ছেলে না হলে কি হবে তার চেয়েও বেশি। কাঞ্চুদেবি দুঃখ করে বলেন আমার মত গরীব যদি সরকার থেকে কোন সাহায্য না পায় তাহলে সরকারি সাহায্য কোন গরীব লোকগুলা পাচ্ছে বলে প্রশ্ন করেন কাঞ্চুবালা। রেশন 6থেকে কেন আমাকে চাল দেওয়া হয় না? আমার চাল তাহলে কোথায় যায়? খুব ইচ্ছা ছিল সরকারের দেওয়া পাকা বাড়িতে জীবনের কয়েকটা দিন নিশ্চিন্তে ঘুমাবো তা কই আর হল?স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল।আমাদের মত যাদের জমি জমা কিছুই নাই তাদের জন্যইতো সরকারের আগে ঘর বানিয়ে দেওয়া উচিৎ ছিল।

এই জন্মে আর সেই স্বাদ পুরন হবেনা বলে শুধুই কাঞ্চুবালার আফসোসের শেষ নেই। এ ব্যাপারে কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিরন্ময় সরকার (বাপ্পা) এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন কাঞ্চুবালাকে এই পঞ্চায়েত সমিতি থেকে নানা ভাবে সাহায্য করা হয়ে থাকে।তবে আইনের কারনে ইচ্ছা থাকলেও সবকিছু করা যায়না বলে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জানান। কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার পৌর পিতা রাম বিলাস সাহা বলেন এই বয়সেও যে ভাবে ক্রাচের উপর ভরসা করে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করছে তা খুবই কষ্টকর ব্যাপার বলেই তিনি মনে করেন।পৌর সভা থেকে যতটুকু সাহায্য করা যায় নিশ্চয় করা হবে।কালিয়াগঞ্জ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক প্রশান্ত রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

1 thought on “৯০য়ের কাঞ্চু বালা আজও পথে পথে,শরীর না চললেও জোর করে ক্রাচে ভর দিয়ে পেটের তাগিদে হেঁটে হেঁটে ঘুরছে, নেই খাবার,না আছে মাথা গোঁজার আস্তানা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *