ফিরে দেখা গাইসাল।
1 min read
মেহেদি হেদায়েতুল্লা। [লেখক,বিশিষ্ট সাংবাদিক ]
|
কেটে গেছে ১৯ টা বছর।দুদশকের দৌড়গড়ায় এসে গাইসালে এখনো কাটেনি দুঃস্বপ্নের বিষাদ। আজও সেইসব স্মৃতি চোখে জ্বল জ্বল করছে অভিশপ্ত রাতটি। একটি অচেনা নাম।রাতারাতি দেশ তো বটে গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল অবধ অসম এক্সপ্রেস এবং ব্রহ্মপুত্র মেইল এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুর্ঘটনার জেরে।সরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা৩০০।যদিও বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা অনেক বেশি। ১ লা আগস্ট এই দিনটিতে ঘটেছিল সেই বিভৎস দুর্ঘটনা। গাইসালকে কে কিভাবে মনে রেখেছে তা হয়ত জানা নেই নরেন দাসের। গাইসাল ষ্টেশনের পাশে আজও তিনি ফি বছর মোমবাতি জ্বালিয়ে এই দিনটিকে স্বরন করেন।ষ্টেশনের ধারে নরেন দাস চায়ের দোকান।ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বরণে আত্নার শান্তি কামনায় মোমবাতি জ্বালিয়ে আসছেন চা বিক্রেতা নরেন দাস।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
১৯৯৯ সালে ১ লা আগষ্ট সেই বীভৎস রাতের এদিন তাঁর সাথে কথা হচ্ছিল সেই গাইসাল ট্রেন দুর্ঘটনার নিয়ে। কিন্ত সেই দিনের মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনা এখনো তাঁর কাছে জ্বল জ্বল করে ভাসছে। সেই স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে নরেনবাবু চোখে জল ভিজে যায়।।তিনি তখন ঘুমের ঘোরে। রাত তখন পৌনে দুটো।আচমকা বিস্ফোরণ শব্দ।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বিস্ফোরণ আওয়াজের এতটাই তীব্র ছিল পাড়ার সকলের ঘুম ভেঙে যায়। প্রথমে বেরিয়ে পড়ি ঘর থেকে।সেই সময়কার রেলকর্মী পবন নাগিন বাবু পাড়ার দিকে আতঙ্কে ছুটে চলেছেন। জিজ্ঞেস করতে বলতে বলতে লাগলেন, ট্রেনে বোমা বিস্ফোরণ। আতঙ্কে অন্যন্য রেলকর্মীরা। কে কি করবেন। ঠিক কিছুক্ষণ বাদে দুটো ট্রেনের মধ্যেই দাউ দাউ করে জ্বলছিল আগুন।ধোঁয়ায় ভরে গেছিল চারদিক সেদিনের প্রথমে সেই গাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন।সেই গাছটাকে দেখিয়ে দিলেন। সকাল গড়তে যেন এই গাইসাল যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হল। লাশের পাহাড়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
চারিদিকে স্বজনহারা আর্তনাদ। উদ্ধার কাজে বিএসএফ পুলিশ সেনা সবাই যৌথভাবে নেমেছিল। কিন্ত সেই দৃশ্য তাঁর কাছে এখনো জলজ্যন্ত একটি ঘটনা। দুই দশকের দোরগোড়ায় গাইসাল ট্রেন দুর্ঘটনা আজও নাড়া দেয়। ভারতের যে কোন ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটলে মনে পড়ে গাইসালকে।গাইসালে জড়িয়ে আছে বহু স্মৃতি। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে এসেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী নীতিশ কুমার। মৃত্যুপুরী গাইসালকে দেখে রেলমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।গাইসাল দুর্ঘটনা রেলকর্মীর গাফিলতি না নাশকতা এইসব নিয়ে জল্পনার শেষ ছিলনা। যদিও জল্পনার মাঝে এই দুর্ঘটনায় সিবিআই তদন্ত করে প্রমাণিত হয় রেলকর্মীরদের গাফিলতি। আদালত ২০০৭ সালে ছয়জন কর্মীর সাজা হয়।দুবছরের জেল এবং ১১৫০০ টাকা প্রতিজনকে জরিমানা ধার্য্য করেছিলেন। অর্থাৎ একটি মানুষের মূল্য ছিল ২৩০ টাকা। সেদিনের বীভৎস দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ৩০০ জন।আর এই সংখ্যা ভাগ করলে তাতে দেখা যাচ্ছে মানুষের মূল্য ২৩০ টাকা।এদিন গাইসাল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল,স্টেশন মাষ্টার রাকেশ কুমার গাইসলাকে সামলাতে ব্যস্ত। একের পর ট্রেনে খবর আসছে। পাস করাতে এক ফাঁকে বললেন, ১০ বছর ধরে এই ষ্টেশনে আছি। গাইসাল সেদিন হয়ত গাইসালকে দেখা হয়নি।কিন্ত যা শুনেছি তা এখন আমার কাছে আতঙ্ক। ওই সময়ের কর্মীদের মধ্যেইএকজন মাত্র কর্মীকে পাওয়া গেল।বাস্কো ওরাও।ওয়াচ ম্যান। যে দৃশ্য দেখেছি তা এখনো চোখে ভাসছে।শুধুই একটাই কামনা করি আর যেন দ্বিতীয় গাইসাল না হয়।একই কামনা এই গঞ্জের মানুষদের ।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});