আভ্যন্তরীণ ইগোতে নিজেদের সম্পর্কের চীড়ে দলীয় ভাবমূর্তিকে বিসর্জন কালিয়াগঞ্জ এ ।
1 min readআভ্যন্তরীণ ইগোতে নিজেদের সম্পর্কের চীড়ে দলীয় ভাবমূর্তিকে বিসর্জন কালিয়াগঞ্জ এ ।
২০ নভেম্বর শুক্রবার। জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ, উঃ দিনাজপুর।কে সাফল্যের শিখরে পৌঁছল আর কে ব্যার্থতার নিরিখে একশোর মধ্যে শূণ্য পেল এই ভাবনায় ভাবনা কাঠি। কিন্তু এই মুহূর্তে আলোচনার বিষয় পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন আর ২৯৪ টি আসনের মধ্যে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ লোকসভা আসনের অন্তর্ভুক্ত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনকে ঘিরে। গতবছর কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল কারণ কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথ নাথ রায়ের মৃত্যুর কারনে উপনির্বাচন। আর এই উপনির্বাচনে প্রথম কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনটি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে চলে যায়।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন ইসলামপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বর্তমানে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল যিনি লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে বিজেপির বর্তমান সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর চেয়ে প্রায় ৪০ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকায়। লোকসভা নির্বাচনের কয়েকটি মাস পর পরেই কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচন হয়। সেই উপনির্বাচনে বিজেপির লিড নেওয়া কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচন এলাকার ভোট সংখ্যা কে এক জাদুর বলে ওভারটেক করে বিজেপি কে পিছনে ফেলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তপন দেব সিংহ জয়ী হোন এবং বিধায়ক পদে বসেন। এই প্রথম কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকা তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে যায়। কি এমন জাদুর ছোবলে দংশিত হলো ভোটের রেজাল্ট কালিয়াগঞ্জে কয়েক মাসের ব্যবধানে যা এখনও অনেক ভাবেই চর্চিত। তবে সব চর্চার মাঝে উঠে এসেছিল কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচন প্রাক্কালে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব বৃন্দের একতা এবং শুভেন্দু অধিকারী পর্যবেক্ষক হিসাবে তার কৌশলগত স্ট্রাটেজি এমনকি বিধানসভা নির্বাচনে জনগন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কে জিতিয়ে আনলে উন্নয়নের চাদরে মূড়ে দেওয়ার শর্তে অনেক প্রতিশ্রুতি যা তৃণমূল কংগ্রেস দলের থেকে বলা হয়েছিল এবং বিধায়ক প্রার্থী হিসেবে তপন দেব সিংহ বলেছিলেন। কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকার মানুষ বিশ্বাস করেছিল সেই প্রতিশ্রুতি কারণ ইতিমধ্যেই কালিয়াগঞ্জ পৌরসভায় শুরু হয়ে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের পৌর বোর্ডের নেতৃত্বে কালিয়াগঞ্জ পৌর শহরের উন্নয়নের কর্মকাণ্ড যাহা পশ্চিমবঙ্গে মা মাটি মানুষের সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের থেকে আর্থিক সহযোগিতায় সেই উন্নয়নের কাজ মানুষ দেখতে পেয়েছিল সচক্ষে। জনগন ভেবেছিল পৌরসভার মতো যদি বিধায়ক পদে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনা যায় তাহলে পৌর এলাকার পাশাপাশি পঞ্চায়েত এলাকাতেও উন্নয়নের কর্মকাণ্ড শুরু হতে পারে , তার উপরে নির্বাচন প্রাক্কালে প্রতিশ্রুতির বার্তা। জনগন দেখেছে তৃণমূল কংগ্রেসের কালিয়াগঞ্জ শহর ও ব্লকের সকল নেতৃত্ব দের একতার চেহারা যেখানে একটা সময় কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার পৌরপতির ঘড়ে , কখনও উপ পৌরপতির ঘড়ে দৈনন্দিন বসতো শহর ও ব্লকের নেতাদের ঠেক। ঠাট্টা, তামাশা, গল্পে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্লক ও শহর নেতৃত্বরা মজে থাকতেন, কোনো রাজনৈতিক মঞ্চে এক সাথে এসে পাশাপাশি বসতেন একরাশ হাসি তামাশায় মত্ত থেকে। তাদের মধ্যে এক অনাবিল পরিবেশ। কিন্তু সেই পরিবেশ উধাও হয়ে গেল কালিয়াগঞ্জ শহর ও ব্লক নেতৃত্ব দের মাঝে, ভুল বলা হবে। একচুয়ালি গোষ্ঠী তৈরি হয়ে গেল নিজেদের মধ্যে যেখানে নিজেরা নিজেদের মুখ দেখেন না, কথা বলেন না, একে অপরের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করতে শুরু করে দিয়েছেন। এহেন দৃশ্য মাছ মারার বড়শির টোপ এর মতো ব্যবহৃত হতে লাগলো সংবাদ মাধ্যমে এবং বিরোধী দলগুলোর কাছে। প্রতিশ্রুতি পালন হলো কিনা বা কতটুকু হলো, উন্নয়নের চাদরে কালিয়াগঞ্জ মুরলো কিনা বা একশোর মধ্যে কে শূন্য পেল আর কে লেটার নং পেল সেইসব বড় কথা নয়, আসল কথা তৃণমূল কংগ্রেসের সামগ্রিক উন্নয়নের ফল কালিয়াগঞ্জ ব্লক ও শহরের প্রতিটি জনগনের ঘড়ে প্রবেশ করেছে এই কথা একশো শতাংশ নিশ্চিত কিন্তু কালিয়াগঞ্জ ব্লক ও শহরের নেতৃত্বের বর্তমান হালহকিকত ও তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এবং নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি, একতার অভাবের দৃশ্য যেভাবে প্রতিনিয়ত প্রস্ফুটিত হচ্ছে তাতে করে আসন্ন ২১ শের বিধানসভা নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনটি নিজেদের দখলে ধরে রাখতে পারবে কিনা তৃণমূল কংগ্রেস সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকায় বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি উদ্বোধন অনুষ্ঠান মঞ্চে দেখা পাওয়া যাচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তপন দেব সিংহ কে, দেখা পাওয়া যাচ্ছে না কালিয়াগঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম লগ্নের নেতা তথা উঃ দিনাজপুর জেলা পরিষদের কো- মেন্টর অসীম ঘোষকে। কিছুদিন আগেই দেখা পাওয়া যেত বর্তমানে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার পৌর প্রশাসক তথা প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক পালের পাশে। অনেক কে বলতে দেখা যেত পাশাপাশি ইনারা এমন ভাবেই বসে থাকেন মঞ্চে যেন মনে হচ্ছে একে অপরের কোলে বসে আছেন। আর এখন কোথায় পাশের চেয়ারে ঐ ব্যাক্তিবর্গ রা , কোথায় সেই এক আত্মার প্রাণ ভ্রমরেরা। কে একশোর মধ্যে শূণ্য, কে একশোর মধ্যে একশো সেই প্রশ্ন নিয়ে ও তার উত্তর খোঁজার সময় নিন্দুকদের হাতে থাকলেও যে অস্ত্র টি সকলের হাতে আছে তা হলো ইভিএম বোতাম টেপার। এই অস্ত্র টিই ছাড়খার করে দিতে পারে সব ইগোকে, সব অহংকার কে, সকল বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস দলের ভাবমূর্তি কে বিসর্জন দিয়ে ফেলেছেন কালিয়াগঞ্জের সকল নেতৃত্বরা। কোনো সরকারি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিধায়ক কে অনুপস্থিত দেখে কেউ যখন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন বিধায়ক কে যে আপনাকে দেখা যাচ্ছে না কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার সকল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। ঠিক উত্তর আসছে কালিয়াগঞ্জ পৌর প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল নাকি তাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন না। অথচ দুইজনেই তৃণমূল কংগ্রেস বেষ্টিত চেয়ারে বসে আছেন। এতদিন শোনা যেত বিরোধী রাজনৈতিক দল হলে সেই দলের বিধায়ক কে নাকি আমন্ত্রণ জানানো হতো না কিন্তু তপন দেব সিংহ যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তাহলে তিনি আমন্ত্রণ পাচ্ছেন না। এই উত্তর টি তিনি কিংবা তার হয়ে যিনিই দিচ্ছেন লজ্জা লাগছে না এই উত্তর দিতে বা বিধায়ক কেন্দ্রিক কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকায় কোনো অনুষ্ঠানে নাকি পৌর প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল আমন্ত্রিত হচ্ছেন না , এই উত্তর টিও দিতে কি লজ্জা হচ্ছে না? আসল কথা লজ্জা কোথায়, লজ্জা বলে কোনো সাবজেক্ট আছে? দলের জন্য যদি ইনারা সকলে ভাবতেন তাহলে তো সেই উত্তর খোঁজার দায়ভার তাদের প্রথমে এবং এই মুহূর্তে কোথাও কোনো নিজেদের মধ্যে এক অহংকার চাঁপা ইগো তৈরী হয়ে থাকে ও সেই ইগোকে দলের স্বার্থে প্রশমিত করতে তাহলে কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেসের সিনিয়র নেতৃত্বের অবদান কোথায় বলে কালিয়াগঞ্জে নীচু তলার দল দরদী কয়েকজন কর্মীরা বললেন। আজ কালিয়াগঞ্জ নয় , বাংলার সর্বত্র তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিক দলের প্রকৃত নীচুতলার দরদী কর্মীদের মানসিক অবস্থা তলানীতে ঠেকেছে। নেতা নেতায় যখন গলায় গলায় পীড়িত তখন কর্মীদের জন্য তাদের সময় নেই। এক জায়গায় বসে আছেন সেই নেতা ঠাট্টা, ইয়ার্কি, গল্পে মশগুল ঠিক সেই সময় কোনো কর্মীর ফোন আসলে তাকে মিথ্যা কথা বলছেন তিনি এখন অমুক জায়গায় আছেন , দলের মিটিং চলছে , ব্যস্ত আছেন। আর এখন সেই গলায় গলায় মিল নেই, ঠেক মারার জায়গা নেই , এখন সময় কাটানোর জন্য সেই নেতাই ফোন করে ঐ কর্মীকে ডাকছেন। এইতো নেতাদের কোয়ালিটি কালিয়াগঞ্জে। আর ইনারাই মঞ্চে উঠে জনসমাগমে ভাষন দেন যে কোন সময় বিপদে পরলে আমাকে ফোন করবে সে যত রাতেই হোক। কালিয়াগঞ্জ ব্লক ও শহরের বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের মাঝে এক ধরনের ছুচালো ইন্টেলেকচুয়াল নব্য নেতৃত্বের জন্ম হয়েছে যারা নিজেদের স্বার্থে এত সুন্দর ব্যালান্স খেলছে যা দেখলে সার্কাসের প্লেয়াররা থমকে যাবে। সব মিলিয়ে নিজেদের মধ্যে এক ইগোর চীড় এতটাই বাড়ি য়ে তুলেছেন যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস দলের ভাবমূর্তি কে বিসর্জন দিয়ে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। বিভিন্ন জনহিতকর প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষের জন্য মা মাটি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই রাজ্যের তথা কালিয়াগঞ্জ ব্লক ও শহরের প্রতিটি পরিবারের কাছে ঢেউয়ের মতো আছড়ে পরেছে এবং এই সকল প্রকল্পের অধীনে মানুষ যেভাবে উপকৃত হয়েছেন সেখানে দাঁড়িয়ে নেতৃত্বরা কর্মীদের নিয়ে সুন্দর ভাবে যদি মনিটরিং করে সময় কাটাতেন তাহলে হয়তো ভোট ব্যাঙ্কে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের পার্সেন্টেজ বৃদ্ধি পেতে পারতো। সেই কাজে এতটাই নিরবতা যার ফলে তৃণমূল কংগ্রেসের ফসল সেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে না। আর এই কাজ থেকে বিরত থেকে নিজেদের মধ্যে এতটাই বাকযুদ্ধে , মনোমালিন্যে নিজেদের দুর্বলতা কে জনসমক্ষে ছড়িয়ে দিতে উঠে পরে লেগেছেন তাতে করে ভোট ব্যাঙ্কে শুধু নয় বিরোধী শিবিরের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেস দলের প্রতি আনুগত্যে কয়েকজন দরদী তৃণমূলী কর্মী বলছিলেন কালিয়াগঞ্জে নেতৃত্ব দের নিজেদের ইগোকে বিসর্জন দিয়ে এক জায়গায় বসে নিজেরাই যদি দলের বৃহত্তর সংগঠনের স্বার্থে এককাট্টা হয়ে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে নিজেদের ব্যাস্ত রাখেন তাহলে আখেরে লাভ তো সকলের। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে? উল্টে বিভিষনের রোল করে কালিয়াগঞ্জ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তির বিসর্জন দিতেই উঠেপড়ে লেগেছে। মার্কশিটে শূন্য পাওয়া সেও যেমন ছাত্র তেমনি লেটার নং পাওয়া সেও একজন ছাত্র। স্কুলের নাম কালিয়াগঞ্জ ব্লক ও শহর তৃণমূল কংগ্রেস। এই স্কুলের সকল ছাত্ররাই লেটার মার্কস নং নিয়ে পাশ করুক এই কামনাই করছে প্রচুর তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষানুরাগী ব্যাক্তিরা। তবে পরীক্ষার দিন আর বাকি নেই, করোনা আবহের মধ্যেই ঘোষনা হয়ে যেতে পারে পরীক্ষার দিন।