December 21, 2024

পঞ্চায়েত যাত্রা ২০১৮ , পালাপথ – হাতে হাতুড়ি কাস্তে ভ্যানিশ নাকি কাস্তে দিয়ে হাত কাটা।

1 min read

জয়ন্ত বোস, বর্তমানের কথা। ‘না না না আজ রাতে আর যাত্রা শুনতে যাবো না’- মান্নাদের কণ্ঠে বিখ্যাত গান। কিন্তু যাত্রার আকর্ষণ এমনি যে না গিয়েও পারা যাবে না। বাংলার জনজীবনের এমনই এক অবিচ্ছেদ্য বিনোদন ছিল যাত্রা। যাত্রা  ভারতীয় রাজ্য  পশ্চিমবঙ্গ  ও  বাংলাদেশের  একটি জনপ্রিয় লোকনাট্য ধারা। এগুলি প্রধানত চারঘণ্টাব্যাপী বিপুল আয়োজনের বিনোদন। উচ্চ শব্দ ও চড়া আলোর ব্যবহার এবং দৈত্যাকার মঞ্চে নাটকীয় উপস্থাপনা যাত্রার বৈশিষ্ট্য। অতিনাটকীয় ভাবভঙ্গি ও আবৃত্তির মাধ্যমে প্রায়ই যাত্রার উপস্থাপনা করা হয়ে থাকে। রাতের পর রাত জেগে বাংলার সাধারণ মানুষ কৃষক, তাঁতী, কামার ,কুমার, জেলে দেখেছে যাত্রায় কাহিনি আর মেতেছে পালা গানের সুরে। কখনো ভক্তি, কখনো ভালোবাসা, কখনো দেশপ্রেম তাকে কাঁদিয়েছে, হাসিয়েছে। আবার সামন্ত রাজা, জমিদার ও অভিজাত শ্রেণির মানুষও যাত্রা দেখেছে। বাংলা আমাদের জন্মভূমি  । একই সাথে এই দেশে নানা শ্রেণীর ও জাতের মানুষের বসবাস । ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকলে একই সাথে স্বাধীন ভাবে বসবাস করে এবং যে যার ধর্ম পালন করে । স্থান, শ্রেণী ও জাত অনুস্বারে এদের মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা আলা
দা ধরনের হয়ে থাকে । শহরের মানুষের জীবনযাত্রা কিছুটা আলাদা ধরনের আর গ্রামগঞ্জের মানুষেরও জীবনযাপন আলাদা হয়ে থাকে । সামাজিকতা ও অঞ্চলভেদে এদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি  আলাদা হয়ে  থাকে । গ্রাম বাংলার মানুষের ও গ্রামীণ সংস্কৃতির অন্যতম সেরা মাধ্যম যাত্রা বা পালা গান । আবহমান কাল থেকে বাংলার অতি সাধারন মানুষ যেমনঃ কৃষক , শ্রমিক,তাঁতি, জেলে সকলে মিলে রাতের পর রাত জেগে মেতেছে যাত্রাপালা ও লোকগীতির সুরে । কখনও তারা কেঁদেছে আবার কখনও মনের সুখে হেঁসে খেলে উপভোগ করেছে ।
 যাত্রা বা পালাগান এই দেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রানের স্পন্দন । তাদের দুঃখ , সুখ, হাসি কান্না ও আনন্দ বেদনার বাস্তব গল্প  বা বাস্তবতা ফুটে ওঠে এই যাত্রা নাটকে ।আজকের এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে এ এক অন্য যাত্রা – ২০১৮ পঞ্চায়েত যাত্রা। তবে এই যাত্রা পালা নাকি পথ ,কোনটি  নিয়ে পাঠকদের কাছে  উপস্থাপন করা যায় সেই দোটানায় না গিয়ে পালা ও পথ কে একত্রিত করে যাত্রা  পালাপথ শব্দ বিন্যাসে উপস্থাপন করা হল। যাত্রাপথ আগামী দিনে অনুষ্ঠিত হতে চলা ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচন আর যাত্রাপালা খবরের শিরোনাম। অনুষ্ঠিত হবে বাংলার প্রতিটি গ্রামে। আয়োজক ও পরিবেশক  দীগবীজয়ী কিংবা নট্ট কোম্পানি নয় , পরিচালিত হবে লালসেলামি কংগ্রেস এর পরিচালনায়। ৩৪ বছরের আগে ও ৩৪ বছর ধরে বাংলার গ্রাম গঞ্জের মানুষ যে যাত্রা দেখে এসেছে সেই দর্শন ও অভিজ্ঞতায় এখন এক নতুন পালার সম্মুখীন হচ্ছেন আর পালা শুরুর পূর্বেই ভাবছেন হাতে হাতুড়ি কাস্তে ভ্যানিশ কারা করবে এবং ভ্যানিশ করা কাস্তে দিয়ে হাত কে কারা কাটবে। পালায় যেভাবেই হোক  এই প্রশ্ন গুলো একের পর এক দৃশ্যে ফুটে উঠুক না কেন বাস্তবে কিন্তু হাতুড়ি থেকে কাস্তে উধাও।
 আর ৩৪ বছর ধরে যে হাতুড়ি দিয়ে হাত কে থেঁতলে দেওয়া হয়েছিল সেই হাত যখন হাতুড়ি ধরেছে তখন কাস্তে দিয়েই হাত কে কেটে ফেলা হচ্ছে । কিন্তু ২০১৮ পঞ্চায়েত যাত্রাপথে ভ্যানিশ ও কাটার সংমিশ্রণে যে পালা অভিনীত হতে চলেছে সেই যাত্রা প্যান্ডেল গ্রাম গঞ্জের মানুষের দ্বারা হাউসফুল হবে কি হবে না লাখো টাকার প্রশ্ন কারন পাশাপাশি এই অত্যাধুনিক কালচার যুগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ” হাঙ্গামা ” নামক যাত্রাপালার যাত্রাপথ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *