রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানীর অনন্য নজির

তন্ময় চক্রবর্তী :-শিক্ষা স্বাস্থ্য কমিউনিটি ওয়েলফেয়ার এবং অন্যান্য যে  সরকারি পরিষেবা রয়েছে তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার তাগিদে এবার রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর নিজস্ব প্রচেষ্টায় প্রকাশিত হলো ডকুমেন্টারি অফ development and সোশ্যাল ওয়ার্ক  শ্রীকৃষ্ণ কল্যাণী শীর্ষক একটি বই। যেখানে রয়েছে শিক্ষা ,স্বাস্থ্য, কমিউনিটি ওয়েলফেয়ার এবং অন্যান্য যে সরকারি পরিষেবা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য তিনি যে সমস্ত কাজগুলো করে গিয়েছেন তার একটি বিস্তারিত পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। বিধায়ক থাকাকালীন সাড়ে তিন বছরে তিনি কি কি কাজ করতে পেরেছেন সেগুলো বিস্তারিতভাবে এই রিপোর্ট কার্ডে প্রকাশিত হয়েছে। হঠাৎ করে এই ধরনের ডকুমেন্টারি রিপোর্ট কার্ড সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরার প্রয়োজন কেন হল সম্প্রতি বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে রায়গঞ্জের বিধায়ক  শ্রীকৃষ্ণ কল্যাণী বলেন আমি যবে থেকে বিধায়ক হয়েছি তার এক বছর পরেই আমি আমার একটি রিপোর্ট কার্ড তৈরি করি। বিধায়ক আপনার দরজায় সেই কার্যক্রমে  আমি লিফলেট তৈরি করে প্রতিটি মানুষের দরজায় দরজায় গিয়ে তাদের হাতে তুলে দিয়েছি। এবং তার একটা মাস্টার কপি আমাদের দলের সুপ্রিমো মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়েছি। শ্রীকৃষ্ণ কল্যাণী বলেন পরপর দুই বছর আমি এটা করতে পেরেছি। কিন্তু তারপর আমি লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছিলাম তারপর উপ নির্বাচন ছিল। সেই ক্ষেত্রে তৃতীয় বছর বিধায়ক আপনার দরজায় এটা গ্যাপ হয়ে গিয়েছিল। এবার সেই গ্যাপ পরিপূরণ করার জন্য এই বই আমি প্রকাশ করেছি।

তাতে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে আমি বিধায়ক থাকাকালীন কি কি কাজ করতে পেরেছি কি হিসাবে ডেভেলপমেন্ট কাজ হয়েছে। তিনি বলেন আমি বিধায়ক হওয়ার আগে রায়গঞ্জের ইনফার স্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট বলতে কিছুই ছিল না। রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আমি বিধায়ক হওয়ার পর আমি চেষ্টা করি মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় রায়গঞ্জের কম বেশি ৬০ শতাংশ ইনফারট্রাকচার সেটা ডেভলপমেন্ট করতে পেরেছি।

কৃষ্ণ কল্যাণী আরো বলেন এই বইয়ের মধ্যে আরো উল্লেখ রয়েছে যে সমস্ত রাস্তার কাজ হয়ে গিয়েছে সেটা যেমন এখানে উল্লেখ রয়েছে তেমনি বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে আরও অনেক রাস্তা যেগুলো কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে সেগুলো এখানে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি কারণ এই বইটি যখন ছাপানো হয়েছে তখন এই রাস্তাগুলো কাজ সম্পন্ন হয়নি। তিনি বলেন মোট ১০০ টি রাস্তার মাস্টার প্ল্যান আমরা তৈরি করেছিলাম সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ৬০ টি রাস্তা হয়ে গিয়েছে বাকি চল্লিশটি রাস্তা আমরা সার্ভে করে কনসান ডিপার্টমেন্ট কে আমরা প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করি ২০২৬ এর আগেই এই রাস্তাগুলো তৈরি সম্ভব হবে। তিনি বলেন এই বই বার করার পর অনেক এমনও মানুষ রয়েছে তারা হয়তো তাকে বলবেন যে আর কি কি কাজ করলে ভালো হবে আগামীতে ।

আমি তাদের সাজেশন নিয়ে সে কাজগুলো আগামীতে করব। তিনি বলেন এই ধরনের বই নিশ্চিত মানুষকে সজাগ করবে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তাদের বিধানসভায় কি কি কাজ হয়েছে এবং আগামী দিনে কি কি কাজ করতে পারবো তারও একটি  রূপরেখা এই বই এর মধ্যে দিয়েছি।আগামী ২৬ শে বিধানসভা ভোট। অনেক সময় দেখা যায় ভোট যত এগিয়ে আসে নেতা নেত্রীদের ব্যস্ততা ততই তুঙ্গে উঠে যায়। আবার যখন ভোট চলে যায় তখন গ্রামে গঞ্জে এমপি এম এল এদের সেইভাবে দেখা যায় না কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে একটু আলাদা আমরা দেখতে পাচ্ছি একটু ব্যতিক্রমী চরিত্রের? এটা কেন। এই প্রশ্নের উত্তরে রায়গঞ্জের বিধায়কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম কাজ করার মানসিকতা নিয়ে আর এই কাজ করে আমি মানসিকভাবে খুবই স্যাটিস্ফেকশন পাই।

আর সেই জন্যই মনে করি যে সাধারণ মানুষের আমার কাছ থেকে তাদের একটা প্রত্যাশা থাকে । আর সেটা যাতে আমি ফুলফিল করতে পারি তাদের প্রত্যাশা। সাধারণ মানুষ আমার উপর যে প্রত্যাশা রেখেছে সেটা যে ভুল না তার জন্যই আমার একটা প্রয়াস থাকে।আমি যখন যে কাজ করতে নামি তখন আমি ১০০ শতাংশ উজাড় করে দিই সততার সাথে। তিনি বলেন বিধায়ক হওয়ার আগে থেকেই সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত। এতে আমার তৃপ্তি দেয়। তিনি বলেন কোভিড  চলাকালীন আমি সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করেছি সকলেই জানে।

তিনি বলেন একা কৃষ্ণ কল্যানীর পক্ষে সবার সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়, সমাজে অনেক দুঃখ কষ্ট আছে। সেই দুঃখ কষ্ট একা কৃষ্ণ কল্যাণীর নিবারণ করতে পারবে না। সেখান থেকেই আমার একটা চিন্তাধারা জন্মায় তখন কিছু শুভকাঙ্ক্ষী আমাকে বলে রাজনীতিতে আসার জন্য। কারণ রাজনীতিতে আসলে সাধারণ মানুষদের জন্য আরো অনেক বেশি বেশি করে কাজ করা যাবে। আজকে যারা রাজনীতিতে আসার জন্য আমাকে বলেছিল তার দের কথা মনে রেখে আজকে আমি মানুষকে নিরন্তন ভাবে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার পর রাজনীতিতে এসেছি। সেই জন্যই আমার সামাজিক কর্মকাণ্ড আমার হৃদয়ে রয়েছে। যেটা আমি করছি আগামী দিনেও করবো।।

তিনি বলেন রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাকবে আর সামাজিক কর্মকাণ্ড সামাজিক কর্মকাণ্ডের জায়গায় থাকবে। কারণ এমন আজকে একটা জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে কৃষ্ণ কল্যাণের কাছে গেলে খালি হাতে ফিরব না । আমিও চেষ্টা করি সাধারণ মানুষ কে কিছু সাহায্য করার কিন্তু একটা কথা  কোন মানুষ ই ১০০%  মানুষকে স্যাটিসফাই করতে পারেনা। তাও আমার দ্বারা যতখানি হয় আমি চেষ্টা করি। আমার কাছে কেউ আসলে পরে কেউ কোন সমস্যা নিয়ে আসলে আমি কোন কাজ তার পেন্ডিং রাখিনা ইনস্ট্যান্ট সেটাকে সল্ভ করার চেষ্টা করি।। আমি জানি কার যদি জমে যায় পরবর্তী সময়ে বাড়তি পেসার থেকে একটা আশঙ্কা তৈরি হয়ে যায়। তাই যখন যেরকম সমস্যা নিয়ে সাধারণ মানুষরা আসুক না কেন আমি চেষ্টা করি তৎক্ষণা ৎ সেই কাজ সমাধান করার।

সেই তাগিদের কথা মাথায় রেখে আজকে আমি এই ধরনের প্রয়াস নিয়েছি। আজকে আমরা যেমন সমাধানের অফিস করেছি। সেই সমাধানের অফিস থেকে আজকের টোটাল ১ লক্ষ ৯৮ হাজার সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে পেরেছি। আর এই সমাধান অফিস থেকে আমরা সাধারণ মানুষের প্রায় সাত হাজার সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি।তিনি বলেন বিগত দিনে যিনি সাংসদ ছিলেন সেই দেবশ্রী চৌধুরীর তাকে সাধারণ মানুষেরা দেখতে পেত না তার সংসদীয় এলাকায় কি কাজ করছেন কোথায় যাচ্ছেন। সেই জন্য মাঝেমধ্যেই তার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়াতে মিসিং ডায়েরি পড়তো। কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন তিনি চান না তার বিরুদ্ধেও সোশ্যাল মিডিয়াতে  মিসিং ডায়েরি পড়ুক। সেই জন্য আমি প্রতিনিয়ত মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ রাখি।

 

মানুষের কাছে পৌছাই। তাই আজকে আমি সমাজের বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করি।তিনি বলেন তার সাথে দেখা করতে হলে কোন বাইন্ডিং নেই কাউকে ধরে আসতে হবে না সরাসরি আসলেই তাদের সমস্যার কথা আমাকে বলতে পারে। কৃষ্ণ কল্যানী বলেন সপ্তাহে ছয় দিন যেমন তিনি রয়েল এনফিল্ড শোরুমে তার চেম্বারে তিনি বসেন তেমনি একদিন করে সমাধান অফিসে তিনি বসেন সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শুনতে। তিনি বলেন এমনটা সাধারন মানুষ আগে কোনদিনও কোন এমপি কিংবা এমএলএ র কাছে পাইনি। যে পরিষেবাটা আমি দিচ্ছি। তিনি বলেন সাধারণ মানুষের আস্থা যেমন আমার উপরে রয়েছে তেমনি সেই আস্তা আমাকে আরো জাগ্রত করে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের কাজকর্ম করার জন্য।সম্প্রতি রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। পাবার পর রোগী দের স্বার্থে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজের পরিষেবা যাতে ভালো হয় তার জন্য তিনি প্রথম যে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক করেছেন সেখানে বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন প্রতিদিন হাসপাতালে কি কাজকর্ম হচ্ছে তার আপডেট ডাটা ওয়েবসাইটে যাতে তোলা হয় সেটাও তিনি রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন।তিনি বলেন অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার মধ্যে কোন যাতে দুর্নীতি না থাকে তার জন্য তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *