মানুষের বৃদ্ধাশ্রম নয়, কালিয়াগঞ্জ এর বেশ কিছু উৎসুক মাড়োয়ারি সমাজের সমাজ সেবীরা শ্রী রাম লীলা দেবী গোশালা বানিয়ে সমাজকে সচেতন করে তুলতে চলেছে
1 min readমানুষের বৃদ্ধাশ্রম নয়, কালিয়াগঞ্জ এর বেশ কিছু উৎসুক মাড়োয়ারি সমাজের সমাজ সেবীরা শ্রী রাম লীলা দেবী গোশালা বানিয়ে সমাজকে সচেতন করে তুলতে চলেছে
তপন চক্রবর্তী,কালিয়াগঞ্জ,৭ জানুয়ারী_আমরা জানি সমাজের যারা বর্ষিয়ান মানুষ থাকে তাদের অনেককেই তাদের পরিবারের ছেলে বউ সাধারণত বৃদ্ধাশ্রমে রাখার চেষ্টা করে থাকে। কারণ তাদের কাছে নাকি বাবা মা বয়স হলেই বোঝা হয়ে থাকে। কিন্তু আমি এমন একটি বৃদ্ধাশ্রমের কথা বলব যেখানে মানুষ থাকে না সেখানে মারওয়ারি সমাজের বেশ কিছু সমাজসেবী তারা সবাই মিলে একটি গরুদের থাকবার জন্য বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করেছে ২০০২ সালে। এই সমস্ত সমাজসেবীদের মধ্যে বিশেষ করে সুরেশ সারাফ নরেশ মুন্দ্রা, বীরেন্দ্র মুন্দ্রা, বন্ধুরা বিন্দেশ্বর বীরেন্দ্র মুন্দ্রা বনুয়ারী লাল দীনদয়াল শর্মা হোলাস রাঠির মতো ব্যক্তিরা এই বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা বলা যায় তারা এই ধরনের বৃদ্ধাশ্রম করে কালিয়াগঞ্জের অধিকাংশ মানুষকেই অবাক করে দিয়েছে।কালিয়াগঞ্জ শ্রী রামলীলা দেবী গোশালার সম্পাদক রাজু ভূতিকা মঙ্গলবার তাদের গোশালায় এক সাক্ষাৎকারে জানান এই গোশালা ২০০২ সালে তৈরি হয়েছিল। মারবাড়ি সমাজে গরু কোনদিনও বিক্রি করে না তাই সবাই মিলে একত্রে ঠিক করেছিল তারা গরুকে বিক্রি না করে একটি বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করবে। এবং সেই বৃদ্ধাশ্রমে তারা বাড়ি থেকে যে সমস্ত গরুদের দেওয়া হবে তাদের শুধু যত্ন নয় অতি যত্ন সহকারে তাদের রাখা হবে। সম্পাদক রাজু ভূতিকা বলেন এই গোশালায় যেখানে 130 গরু থাকে সেই স্থানটি সবসময়ের জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয় ।
সম্পাদক রাজু ভূতিকা বলেন আমরা যারা সনাতনী তারা গরুকে দেবতা মনে করে থাকি।সম্পাদক রাজু ভূতিকা এই প্রতিবেদককে বলেন তাদের গোশালায় মোট ১৩০ টি গরু তারা পালন করে থাকেন। প্রতিদিন এই ১৩০ টি গরু পরিচালনা করতে মোট খরচ হয় 9000 টাকা। এই গোশালা চালানোর জন্য কালিয়াগঞ্জের মারওয়ারী সমাজের প্রত্যেকেই এই গোশালার জন্য আর্থিক সাহায্য করে থাকে। সংস্থার সভাপতি ব্যবসায়ী তথা সঙ্গীত শিল্পী গোপি চন্দক বলেন এই ১৩০ টি গরুকে সবসময় পরিচর্যা করার জন্য ছয় জন কর্মী সবসময়ের জন্য থাকে। তিনি বলেন ১৩০ টি গরুর মধ্যে 17 টি গরু দুধ দিয়ে থাকে ৬০ কেজি করে। আমরা প্রত্যেকেই সেই দুধ ক্রয় করে থাকি এবং সেই পয়সা গো শালার ফান্ডে গিয়ে জমা পড়ে থাকে। এই গরুর বৃদ্ধাশ্রমে গরুদের কোনরকম যাতে অসুখ বিসুখ সহজেই না হয়। তার জন্য সব সময়ের জন্য চিকিৎসক দেখাশোনা করে। সম্পাদক রাজু থেকে বলেন মোট আড়াই থেকে তিন বিঘার উপর এই গোশালা নির্মাণ করা হয়েছে। শ্রী রামলীলা দেবী গোশালার কর্মী রবি ভট্টাচার্য বলেন তিনি এখানে সবসময়ের জন্য কাজ করে থাকেন। সকালে গরুদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গরুরে যেখানে থাকে সেই সব জায়গায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। এরপর গরুদের স্নান করানো হয়। তিন বেলা খাবার দিতে হয় নানান ধরনের খাবার যে সমস্ত খাবার খেলে তাদের বৃদ্ধাশ্রমের গরুগুলি শরীর সবসময় ঠিকঠাক থাকে ঠিক সেই ভাবেই তাদের প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার দেয়া হয়ে থাকে। কর্ণধার মোহন মহেশ্বরী বলেন তারা এই ঘোষালাকে নিজেদের পবিত্রতম স্থান মনে করে থাকেন। সেই কারণে এখানে গোপষ্টমী অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করা হয় এছাড়াও রাধা কৃষ্ণের জন্মতিথি এই গোশালার মন্দিরে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করা হয় হাজার হাজার মানুষ সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রসাদ নিয়ে থাকেন। কালিয়াগঞ্জ এর মারোয়ারী সমাজ এই রামলীলা দেবী গোশালাকে নিজের চোখের মনির মতো করে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। ভবিষ্যতে এই রামলীলা ঘোষণা আরো এতে অনেক বড় ধরনের আকার ধারণ করতে পারে সেদিকেই এদের সবার দৃষ্টি বলে তারা জানান।