December 21, 2024

নিরাপত্তার বলয়ে অসাধারণদের নিরাপত্তার অভাব , সাধারনদের ?

1 min read
জয়ন্ত বোস, বর্তমানের কথা। দিনটি ২১ তারিখ । সেই দিনের মাস ছিল মে মাস আর এবারের ২১ তারিখ ছিল ফেব্রুয়ারি মাস । সেদিনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী পৌঁছেছিলেন তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে, আর বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ২১তারিখে পৌঁছলেন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরে। রাজনৈতিক ঘরানায় একই জায়গায় রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত দুইজনের মধ্যে একজন প্রাক্তন অপরজন বর্তমান।  রাজীব গান্ধী শ্রীপেরামবুদুর শহরের জনসভাস্থলে পৌছান রাত ১০টায়। আর তার হত্যাকারী ধানু পৌছায় দুই ঘন্টা আগে, রাত ৮টায়। তারিখ ১৯৯১ সালের ২১শে মে। ধানু ছিল শ্রীলংকার লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম (এল টি টি ই) বাহিনীর আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য। সে শ্রীলঙ্কা থেকে নৌ-পথে দুই মাস আগে এল টি টি ই প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের নির্দেশে ভারতের মাদ্রাজ ( এখনকার চেন্নাই ) শহরে আসে রাজীব গান্ধীকে হত্যা করার জন্য। ঐদিন ধানু মানববোমা হয়ে নিরাপত্তার ফাঁকে  কঠিন নিরাপত্তার বলয় টপকে ফুলের মালা নিয়ে রাজীব গান্ধীর কাছে পৌঁছে যান এবং মালা পরাতে গিয়ে  আচমকাই বিস্ফোরণে রাজীব গান্ধীর দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । আর একদিন পর ২২তারিখ বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সঠিক বেলা ১:১০মিনিট হেমতাবাদ সরকারি সভাস্থলের মঞ্চে এসে উপস্থিত হন এবং বক্তব্য শুরু করেন । ঐদিনের ধানুর মতোই সকলে

র অগোচরে করণদিঘী থেকে খুব সকালেই  হেমতাবাদের সভাস্থলে মঞ্চের পাশে এসে উপস্থিত হয়েছিল রূবেয়া খাতুন ও তার দিদি। সুপরিকল্পিতভাবে দুই বোন নিজেদের বোঝাপড়ায় মঞ্চের দুইদিকে ঘাঁটি গেলে বসে এবং সুযোগের সন্ধানে তাক করে থাকে মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কখন পৌঁছে যাওয়া যায়। ত্রিস্তর নিরাপত্তা বলয় কে ভেদ করে প্রবেশ করা এক সাহস আর এক প্রখর সুকৌশলী বুদ্ধি না থাকলে হবে না।দুই বোনের  এমন বুদ্ধিতে হার মেনে গেল ত্রিস্তর নিরাপত্তা। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যর শেষ লগ্নে এক বোন মঞ্চের এক দিক থেকে মঞ্চে উঠতে গেলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সকলের নজর যখন সেইদিকে ঠিক তখনই আচমকাই অপর বোন মঞ্চের অন্য দিক দিয়ে মঞ্চে বক্তব্যরত মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের কাছে এসে লুটিয়ে পরে কিন্তু চরম সৌভাগ্য ঐদিনের মঞ্চে ধানুর মতো ঐ মেয়েটির কাছে কোনো মানববোমা ছিল না। ভাগ্যবান মুখ্যমন্ত্রী, ভাগ্যবান পশ্চিমবঙ্গ বাসী , ভাগ্যবান রাজনৈতিক মঞ্চ। ঐদিনের ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কোথায় নিরাপত্তা? এক নিরাপত্তার অভাবে দেশ ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী কে হারিয়েছে আর সেই একই নিরাপত্তার অভাব প্রকট ভাবে  দেখা দিল উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ ময়দানে। এই ঘটনায় এক দিকে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার প্রশ্ন, একদিকে পুলিশ প্রশাসনের দ্বায়িত্বে গাফিলতির প্রশ্ন আর এই দুইয়ের মিলনে যেখানে পুলিশ মন্ত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য এই নিরাপত্তার গাফিলতি ও নিরাপত্তার অভাববোধ সেখানে পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষের জন্য পুলিশি নিরাপত্তা কোথায় ও কোন জায়গায় বর্তমানে দাঁড়িয়ে আছে এই আলোচনা সর্বত্রই। শুধু আলোচনাই নয় সর্বস্তরে ছিঃ ছিঃ ধিক্কার পুলিশ প্রশাসন, পুলিশি দ্বায়িত্বর জ্ঞানহিনতা নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার অভাবকে । উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া বর্তমানের কথা নিউজ পোর্টালের সংবাদ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো । সকল স্তরের মানুষ
মঞ্চে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্যদের সুস্থ ও দীর্ঘায়ু জীবন কামনা করেছেন। পাশাপাশি সকল স্তরের পুলিশি নিরাপত্তার বিষয় ও দ্বায়িত্ব এমনকি উক্ত ঘটনায় যাদের দ্বায়িত্বর গাফিলতির জন্য একটি বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্যরা সকলেই বেঁচে গেলেন এই বিষয়ে পূর্নাঙ্গ তদন্তের দাবীও জানিয়েছেন। কোন বিষয় কে ছোট করে না দেখে বিগত দিনের অনেক শিক্ষা আগামীদিনের পথ চলার জন্য যথেষ্ট বিশেষ করে নিরাপত্তার প্রশ্নে , যেখানে কোনো আপোষ নেই তাও আবার মুখ্যমন্ত্রী বলে কথা কিন্তু জনসাধারণের জন্য এই প্রশ্ন আগামীদিনেও কি থেকে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *