এই দোলে সাবধান সস্তা আবিরে হতে পারে কোনো বডো অঘটন
1 min readপিয়া গুপ্তা ,বর্তমানের কথা, নীল দিগন্তে ফুলের আগুন লেগে গিয়েছে। সময় চলে আসছে একে-অন্যকে রাঙিয়ে দেওয়ার । হাতে আর সময় নেই।বিক্রেতারা সাজিয়ে বসেছেন রঙের পসরা। আর দোল মানেই তো রং আর আবিরের উত্সব। ছোটরা রংয়ের দিকে ঝুঁকলেও বয়স্কদের মধ্যে এখনও দোলে আবিরের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।দোলে প্রতিবারই ছোটো দের জন্য নতুন কিছু না কিছু থাকেই। তবে এবারো থাকছে দোলে স্পেশাল, আবিরের পটকা। দোলের বিশেষ বিশেষ আতসবাজি। এতে আগুন লাগালেই ছড়িয়ে পড়বে আবীর। রঙের নেশায় মাতবে ভুবন। এছাড়াও রয়েছে অটোমেটিক বেলুন। রয়েছে থ্রি ডি কালার, যা শরীরে বসে যাবে না, উঠে যাবে খুব সহজেই । পিচকিরির বাজারও জমজমাট। তবে প্রতিবারই দোলে সবথেকে বেশী চাহিদা থাকে আবিরের।ছোটো হোক কিংবা বড়ো সকলেই লাল,হলুদ,সবুজ রংয়ের আবিরে নিজেদের সাজিয়ে তুলতে চায় ।উত্তর দিনাজপুরে বহু পরিবারই এই আবির ব্যবসার সাথে যুক্ত ।তবে চাহিদা থাকলেও সেভাবে লাভের মুখ দেখেন না এমনি বক্তব্য কারিগরদের।সারা বছর ধরে আবির তৈরি হলেও দোলের সময় চাহিদাটা বেড়ে যায় কয়েকগুন। তাই নাওয়া খাওয়া ভুলে কারিগররা লেগে পড়েন আবির তৈরির কাজে । ছোট মেশিনে ডলোমাইটের গুঁড়ো, রঙ, তেল, জল দিয়ে তৈরি হয লাল, হলুদ, সবুজ, গোলাপিসহ সাতটি ভিন্ন রঙের আবির। ব্যবসায়ীরা জানান প্রতি দিন গড়ে ৫০ প্যাকেট আবির তৈরি হয়। প্রতি প্যাকেটে ২৫ কিলো করে আবির থাকে। তবে কাঁচা মালের তার সাথে সাথে জি এস টির ধাক্কায় দাম বেড়ে যাওয়ায় আবির তৈরির খরচ বেড়েছে। তাছাড়া ভাল মানের আবির তৈরির খরচ অনেক এবং ভাল আবির তৈরির উপকরণও সহজ লভ্য নয়। তাই চাহিদা অনুযায়ী আবিরের যোগান দেওয়ার জন্য অনেক সময় ভুটান ও বিহার থেকে নিম্নমানের ডাষ্ট এনে ভেজাল আবির তৈরি করা হয় । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান সস্তার বাজার ধরতে ভেজাল আবির চাহিদা প্রচুর ।ক্যালসিয়াম পাউডার বা টেলকম পাউডার দিয়ে আবির তৈরি খরচ ও সাপেক্ষ। তাছাড়া, আবির তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি ।যা সকলের পক্ষে কেনা সম্ভব হয় না তাই অনেক জায়গায় নিম্নমানের চকের গুঁড়ো কিংবা টেলিকম পাউডার ,সস্তার ক্যামিকাল ব্যবহার করেই তৈরি হচ্ছে আবির।বর্তমানে অনেক কারখানাতেই কোদাল, বেলচা দিয়ে ডাস্ট ও কেমিক্যাল মিশ্রণ তৈরি করা হচ্ছে। আর মাটিতেই তৈরি হচ্ছে সেই মিশ্রণ। যার ফেলে ধুলা- বালি, নোংরা সবই মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে ওই আবিরে । এরপর বিপদ এড়াতে শ্রমিকেরা মুখ মাথা ঢেকে, হাত না লাগিয়ে শুধু পা দিয়ে আরো ভাল করে তাতে মেলাচ্ছেন নানা রং। তুলনায় ভারী এই আবিরকে আকর্ষণীয় করে তুলতে শেষে ছড়ানো হচ্ছে সুগন্ধী। আর এই আবিরের পাইকারি মূল্য কিলোগ্রাম প্রতি মাত্র ১০ টাকা। আর যদিও দোলের সময় খোলা বাজারে এর দামই বেড়ে দাঁড়ায় তিন থেকে চারগুণ। উত্তর দিনাজপুরে চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ ঘোষ জানিয়েছেন, এ ধরনের নিম্নমানের আবির থেকে নানা ধরনের চর্মরোগ, এলার্জি এমনকি বিষক্রিয়া পর্যন্ত হতে পারে। ত্বক পুড়ে যাওয়া বা কালচে হয়ে যাওয়াও অসম্ভব নয়। ক্ষতি হতে পারে চোখেরও। বসন্ত উৎসবে ভেষজ আবির না পেলে সস্তা আবির না ব্যবহারেরই পরামর্শ চিকিৎসকদের।