কালিয়াগঞ্জের নাটমন্দিরে উদযাপিত হলো হোলিকা দহন উত্সব
1 min readপিয়া গুপ্তা ,বর্তমানের কথা,কালিয়াগঞ্জের নাটমন্দিরে আজ সন্ধ্যায় হোলিকা দহন উত্সব পালন করা হলো ।বহু মানুষ আজ এই হোলিকা উত্সবে উপলক্ষে নাটমন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন।বহু মহিলারা এদিন হোলিকার পূজো করে এই উত্সব উদযাপন করেন।
এদিন খড়, কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি জ্বালিয়ে এক বিশেষ বহ্ন্যুৎসবের আয়োজন করা হয়। এই বহ্ন্যুৎসব হোলিকাদহন বা নেড়াপোড়া নামে পরিচিত।এদিনে এই হোলিকা দহন উত্সব কে ঘিরে বহু মানুষের সমাবেশ ঘটে নাট মন্দির প্রাঙ্গণে ।উল্লিখিত বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির ও গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপিনীর সঙ্গে রঙ খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। উত্তর ভারতে হোলি উৎসবটি বাংলার দোলযাত্রার পরদিন পালিত হয়। হোলি নামটা এসেছে ‘হোলিকা’ থেকে। দৈত্যরাজ হিরণ্যকশিপুর বোন হোলিকা।প্রচণ্ড নিষ্ঠুর ছিল দুই ভাইবোন। হিরণ্যকশিপু অপরাজেয় থাকার বর পেয়েছিল। তাই কোনও দেবতাকেই মানত না।
বলত দেবতা নয়, পুজো তাকেই করতে হবে। কিন্তু হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত। সে তার বাবার আদেশ মানতে রাজি নয়। হিরণ্যকশিপু ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। নানা ভাবে ছেলেকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করল, কিন্তু ফল হল না। শেষে প্রহ্লাদকে ভুলিয়ে ভালিয়ে জ্বলন্ত চিতায় বসল হোলিকা। নিজে গায়ে দিল অগ্নি- নিরোধক শাল। কিন্তু আগুন জ্বলে উঠতেই সেই শাল উড়ে গিয়ে প্রহ্লাদকে ঢেকে ফেলল। অগ্নিদগ্ধ হল হোলিকা। বিষ্ণুর আগমন ঘটল। তাঁর হাতে নিহত হল হিরণ্যকশিপু। ওই আগুন হল অশুভের বিরুদ্ধে শুভের জয়ের প্রতীক। হোলিকা দগ্ধ হওয়ার পরের দিন পালিত হয় হোলি।তাই সেদিনের পর থেকে প্রতি দোল পূর্ণিমার দিনে হোলিকা নামক পরম শক্তিশালী দৈত্যের পরাজয় ও আগুনে পুড়ে যাওয়া হলিকার ধংসস্তুপের ছাই মেখে অসুরদের আক্রমণ থেকে নিস্তার ও মুক্তির পরম আনন্দে প্রতিবছর দোল পূর্ণিমার আগের রাতে এই হোলিকা দহন উত্সব পালিত হয় ।এই আনন্দ অনুসরন করে বধ করার পর সকলে আনন্দ করে। এই অন্যায় শক্তিকে ধ্বংসের আনন্দ মহাআনন্দে পরিণত হয়। অন্যায়কারী, অত্যাচারী এই অসুর বধের আনন্দ কালক্রমে মহা আনন্দে পরিনত হয়। দোল বা হলি অনুষ্ঠানে নানান রঙের ছাই মেখে মনের অসুরকে বধ করে ইন্দ্রীয় দমনের অভ্যাস বা প্রতিজ্ঞা পালন আর হিন্দু বা ধর্মের গন্ডি পেরিয়ে সামাজিক ও সাংষ্কৃতিক উৎসবে পরিনত হয়। এ যেন হিংসা বিদ্বেষ, জাতি, ধর্ম ও বর্নবাদের উর্ধে উঠার প্রক্রিয়া ও সভ্যতার উৎস।