কেদারনাথ_জ্যোতির্লিঙ্গ সম্পর্কে ইতি বৃত্তান্ত।
1 min readকেদারনাথ_জ্যোতির্লিঙ্গ সম্পর্কে ইতি বৃত্তান্ত।
জয়ন্ত বোস,কালিয়াগঞ্জ।কথিত আছে, শিবের বয়স যত, কেদারখণ্ড ততটাই প্রাচীন৷ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধর পর ভীষণরকম অনুতাপে ভুগতে থাকেন পঞ্চপাণ্ডব৷ এই ধর্মযুদ্ধে আত্মীয়-পরিজনের নিধন করেছিলেন তাঁরা৷ সেই পাপক্ষালনের উদ্দেশ্যে পঞ্চপাণ্ডব মহর্ষি বেদব্যাসের পরামর্শে হিমালয়ে গেলেন মহাদেব দর্শনে, কেদারখণ্ডে৷ কিন্তু দেবাদিদেব পাণ্ডবদের দর্শন দিতে চান না, তাই তিনি পালিয়ে যান৷ পাণ্ডবরাও শিবের পিছু নেন৷
শেষে পথ না পেয়ে শিব মহিষের রূপধারণ করেন৷ সেই মহিষরূপী শিবকে জাপটে ধরেন ভীম৷ যখন তিনি জাপটে ধরেন মহিষের মুখ ছিল পৃথিবীর দিকে এবং পশ্চাদভাগ ছিল কেদারের দিকে৷ মহিষরূপী শিবের অঙ্গ টুকরো হয়ে পাঁচটি স্থানে ছিটকে পড়ে৷ কেদারে পশ্চাদ্ভাগ, মদমহেশ্বরে নাভি, তুঙ্গনাথে বাহু, রুদ্রনাথে মুখ, কল্পনাথ বা কল্পেশ্বরে জটা৷ হিমালয়ের এই পাঁচ পুণ্যভূমি ‘পঞ্চকেদার’ নামে পরিচিত৷ কথিত আছে, কেদারে এসে পঞ্চকেদার দর্শন না করলে নাকি কেদার-দর্শনের পুণ্য সম্পূর্ণ হয় না৷ একদা ভগবান নরনারায়ণ মাটি দিয়ে মূর্তি গড়ে পুজো করেন শিবের৷ ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন শিব এবং কেদারে বাস করতে শুরু করেন৷ সেই থেকে কেদারে বাস দেবাদিদেবের।কেদারনাথ মন্দির হিন্দুদের অন্যতম প্রধান তীর্থস্থান। এটি ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের গাড়োয়াল হিমালয় পর্বতশ্রেণীতে অবস্থিত কেদারনাথ শহরে মন্দাকিনী নদীর তীরে স্থাপিত একটি শিব মন্দির। এই অঞ্চলের প্রাচীন নাম ছিল কেদারখণ্ড ; তাই এখানে শিবকে কেদারনাথ (অর্থাৎ, কেদারখণ্ডের অধিপতি) নামে পূজা করা হয়। মন্দিরটি খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ-নবম শতাব্দীর তামিল নায়ানার সন্তদের দ্বারাপাডল পেত্রা স্থলম বা মহাদেশের ২৭৫টি অতি পবিত্র শিবক্ষেত্র হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।এই মন্দিরটি ভারতের একমাত্র মন্দির যার প্রকৃত বয়স অজ্ঞাত। কিছু তথ্যের মতে এই মন্দির প্রায় ৬ হাজার বছরের পুরানো। ভূতত্ব বৈজ্ঞানিকদের মতে এই মন্দিরটি প্রায় ৪০০ বছর বরফের নীচে চাপা পড়েছিল। কিছু তথ্য অনুসারে এই মন্দিরের নির্মান করেন মালওয়ার রাজা ভোজ, যিনি বিক্রম সম্বৎ ১০৭৬ থেকে ১০৯৯ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। কিছু তথ্যের মতে, খৃষ্টিয় ৮ম শতাব্দীতে, আদি শঙ্করাচার্য বর্তমান মন্দিরটি নির্মান করেন।বর্তমান কেদারনাথ মন্দির উচ্চতায় ৮৫ ফুট, লম্বায় ১৮৭ ফুট ও চওড়ায় ৮০ ফুট। সম্পূর্ন মন্দিরটি পাথর দিয়ে নির্মিত।এখন পর্যন্ত বৈজ্ঞানিকরা বুঝে উঠতে পারেন নি যে, কি করে ওই সময়ে এত বড় পাথর দিয়ে প্রতিকূল পরিবেশে এই মন্দিরটি নির্মান করা হয়েছিল।