লকডাউনে ত্রান নিয়ে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা নজির গড়লেও ত্রান পাওয়া এরা কারা।
1 min readলকডাউনে ত্রান নিয়ে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা নজির গড়লেও ত্রান পাওয়া এরা কারা।
জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ।সরকারি সহযোগিতায় রেশন মাধ্যমে সকলের জন্য চাল, গম, আটা ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকার পরেও কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার দুঃস্থ অসহায় কর্মহীন বেরোজগার গৃহবন্দী পরিবারদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পালের নেতৃত্বে পৌর প্রশাসন। আর মাত্র কয়েকটি দিন পরেই বর্তমান নির্বাচিত পৌর বোর্ডের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। বর্তমানের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পৌর বোর্ডের পরিচালনায় কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার উন্নয়নে যে বাতাবরণ তৈরি হয়েছে তা এককথায় সকল স্তরের পৌর নাগরিকরা স্বীকার করেছেন।
এর মধ্যেই বিশ্ব ত্রাস করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ছোবলে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে লকডাউন এবং এই পরিস্থিতিতে সকলেই কর্মহীন, গৃহবন্দী। দৈনন্দিন খেটে খাওয়া মানুষগুলো তাদের পরিবার পরিজন দের নিয়ে এক অসহায় পরিস্থিতির সম্মুখীন।
দুবেলা দুমুঠো অন্নের সংস্থান করতে গিয়ে নাজেহাল, দিশেহারা সেইসাথে মারাত্মক নোবেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ছোবলের আতঙ্কে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার ১৭ টি ওয়ার্ডের বর্তমান সকল নির্বাচিত কাউন্সিলর দের নিয়ে এমতাবস্থায় দুঃস্থ গরীব কর্মহীন পরিবারগুলোর পাশে কিভাবে দাঁড়ানো যায় সেই আলোচনায় পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পাল সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেন প্রতিটি ওয়ার্ডের ঐসকল পরিবারদের হাতে খাদ্য সামগ্রী ত্রান বিতরণ করবেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে দুই তিনজন সুপার ভাইজারদের মাধ্যমে খাদ্য
সামগ্রীর ত্রান স্লিপ বিলি করার সিদ্ধান্তে ঐ সকল নিযুক্ত সুপার ভাইজাররা খাদ্য সামগ্রী ত্রান স্লিপ প্রতিটি ওয়ার্ডে বিলি করতে থাকেন। এদের সাথে উক্ত স্লিপ বিলি বন্টনে প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা নিজেরাও মনিটরিং করছেন বলে জানা যায়। শুরু হয় প্রতিটি ওয়ার্ডের থেকে স্লিপ পাওয়া জনগনদের পৌরসভা থেকে খাদ্য সামগ্রী ত্রান সংগ্রহের কাজ। বিভিন্ন সুত্র মাধ্যমে জানা যাচ্ছে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার এমন মহৎ উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডের অনেকাংশ ত্রানের স্লিপ পাওয়া জনগনের মুখগুলো নিয়ে বিস্তর সমালোচনা কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ কে নিয়ে নয়। কেন এই সমালোচনা তার গোপন খোঁজে
আজকের প্রতিবেদনে বিস্তারিত আলোচনা। পৌর এলাকার বেশ কিছু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাগরিকগন বলছেন এই লকডাউন পরিস্থিতিতে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা দুঃস্থ গরীব পরিবারগুলোর পাশে ত্রান বিতরণ নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সেখানে বর্তমানে রোজগার বন্ধ হয়ে গেলেও অনেকাংশে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকা সত্ত্বেও এমন পরিবারগুলো তারা যেনতেন প্রকারে ত্রানের স্লিপ সংগ্রহ করতে ময়দানে ঝাঁপ মেরেছেন। এই সকল পরিবার গুলো ইচ্ছে করলেই নিজের এলাকায় ২-৫ জন গরীব পরিবারগুলো কে নিজেরাই ৩ কেজি চাল, ১ কেজি আলু, ১ প্যাকেট সোয়াবিন, ৫০০ গ্রাম সঃ তেল সহ সর্বমোট ২০০-২৫০ টাকা মূল্য খরচ করতে পারেন। সেই আর্থিক স্বচ্ছলতা এই পরিবারগুলোর আছে এমনকি তার বেশিই আছে। নেই শুধু মানসিকতা, মানবিকতা। আর নেই বলেই এক নোংড়া আবর্জনাময় মানসিকতায় মুখোশধারী দুঃস্থ গরীব সেজে ত্রানের স্লিপ জোগাড় করে পৌরসভার ত্রান
নিজেদের ঘড়ে ঢুকিয়েছেন। সুপার ভাইজার কে ওভার টেলিফোনে হুমকি দিয়েও নাকি পৌরসভার ত্রান স্লিপ জোগাড় করেছেন, কাউন্সিলর কে বলেছেন ফোন করে” কি হলো আমার বাড়ির স্লিপ টা কোথায়, মনে নেই ভোটের সময় টাকাটা কে দিয়েছিল, সামনে কিন্ত আবার ভোট আসছে ” এমন উক্তিও কানাঘুষা তে লকডাউন পরিস্থিতিতে দূষণমুক্ত বাতাসে ছড়িয়ে পরছে। যেহেতু পৌরসভায় ত্রান বিতরনের সময় শুধু স্লিপ দেখেই খাদ্য সামগ্রীর ত্রান বিতরন হচ্ছে এবং নামের কোনো লিস্ট রাখা হয় নি , এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের অনেকাংশ ইন্টেলেকচুয়াল আর্থিক স্বচ্ছলতা সম্পন্ন মুখোশধারী দুঃস্থ গরীব সেজে থাকা নাগরিকরা। স্লিপ নিয়ে নিজেরা জাননি অনেকেই, পিছে আবার প্রেস্টিজ ইস্যু মনে করে। ইনারা বাড়ির কাজের লোক আবার কেউ পাড়ার দুঃস্থ কে দিয়ে স্লিপ পাঠিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে পৌরসভার খাদ্য সামগ্রী ত্রান বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে ওয়ার্ডের সুপার ভাইজাররা প্রকৃত দুঃস্থ গরীব পরিবারগুলো কে ছাপিয়ে ওয়ার্ডের তথাকথিত ইন্টেলেকচুয়াল মুখোশধারী দুঃস্থ হয়ে পরা পরিবারের কাছে ত্রানের স্লিপ পৌঁছে দিয়েছে এবং কতিপয় কাউন্সিলর দিয়েছেন বলে গোপন সুত্রে পাওয়া খবর। এই তথাকথিত ইন্টেলেকচুয়াল আর্থিক স্বচ্ছলতা সম্পন্ন মুখোশধারী দুঃস্থ জনগন বলছেন পৌর কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে তো নিব না কেন। ভাবতেই গা শিউরে উঠে এদের মানসিকতা মানবিকতা কি পদার্থ দিয়ে তৈরি হয়েছে ভেবে। এমন পরিবার আছে যে বাড়িতে তিনটে হাড়ি চরে দৈনন্দিন অর্থাৎ বাবা মা এর হাড়ি, বড় ছেলের হাড়ি, ছোট ছেলের হাড়ি। ঐ ওয়ার্ডে দুর্গাপূজার সময় পাড়ার বাড়োয়ারী কমিটি যখন চাঁদা তুলতে গিয়ে তিনটি রশিদ কাটে তখন সকলে মিলে বলেন একটি পরিবারে তিনটি চাঁদার রশিদ কেন , আর এই আর্থিক স্বচ্ছলতা সম্পন্ন মুখোশধারী পরিবার জোড় করে তিনটি ত্রান স্লিপ নিতে পিছপা হয় না। কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার সকল স্তরের মানুষের আজ দুর্ভাগ্য যে রেকর্ড বিহীন এই সকল ইন্টেলেকচুয়াল মুখোশধারী আর্থিক স্বচ্ছলতা সম্পন্ন দুঃস্থ দের মুখ প্রকাশ্যে দেখতে পেল না পৌরসভার ময়দানে ত্রান নিতে আসা লাইনে। স্লিপ দেওয়ার সময় প্রত্যেকের ছবি তুলে ত্রানের রেকর্ড রাখা যেত তাহলে করোনার ছোবল থাকা সত্ত্বেও আতঙ্কগ্রস্ত কালিয়াগঞ্জ বাসী বেঁচে গেলে আগামী বছর পৌর উৎসবে এদের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে দেখা যেত হয়তো এই আশাই করে মত প্রকাশ করলেন কালিয়াগঞ্জ শহরের প্রকৃত শিক্ষিত সমাজের কিছু মানুষজন। অনেকে আবার মত প্রকাশ করলেন ফটো তুলে রেকর্ড রাখলে হয়তো কালিয়াগঞ্জ পৌরসভায় ত্রান বিতরণে ত্রানের স্লিপ প্রকৃত দুঃস্থ গরীব অসহায় কর্মহীন বেরোজগার পরিবাররাই শুধু পেতেন। আর এই ইন্টেলেকচুয়াল নাগরিকরাই আবার পৌরসভার সমালোচনায় মুখর। এই প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে মহানায়ক উত্তম কুমারের সর্বশেষ অভিনীত ছবি “ওগো বন্ধু সুন্দরীর ” একটা গান উত্তমকুমার গাইছিলেন ” নারী চরিত্র বেজায় জটিল, কিছুই বুঝতে পারবে না,,,,,,,ওরা যুক্তি তর্কের ধার ধারে না , সেন্টিমেন্টে চলে ,,”। এক্ষেত্রে নারী শব্দটির পরিবর্তে” ইন্টেলেকচুয়াল ” শব্দটি ব্যবহৃত হলে আজকের প্রতিবেদন টি আরো একটু বেশি সার্থক হয়ে উঠতো কিনা আপনারাই বলবেন।