টীমের হীরো একাই মাঠ দাপিয়ে খেলছেন কিন্তু সতীর্থ স্ট্রাইকার কে পাস না বাড়িয়ে।
1 min readটীমের হীরো একাই মাঠ দাপিয়ে খেলছেন কিন্তু সতীর্থ স্ট্রাইকার কে পাস না বাড়িয়ে।
জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ। বিংশ শতাব্দীতে ফুটবল খেলা নিয়ে মান্না দের গাওয়া সেই বিখ্যাত গানটি এখনও অবধি ফুটবল খেলা নয়, ফুটবল ময়দান ঘিরে দর্শকদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। ” সব খেলার সেরা বাঙালি তুমি ফুটবল, আহা কি মধু আছে ঐ তোমার নামেতে আহা ফুটবল” – এই গানটি মাতিয়ে দিয়েছিল বাংলার ময়দানে ফুটবল খেলা ঘিরে। আর এই ফুটবল জগতে বাংলা তথা দেশের সর্বকালের সেরা দুই ফুটবল নক্ষত্র কে আমরা হারালাম কয়েকদিন পূর্বে। ইনারা হলেন প্রবাদ প্রতিম বাঙালি ফুটবল খেলোয়াড় প্রদীপ ব্যানার্জি ডাক নাম পি,কে ব্যানার্জি বলেই খ্যাতনামা ছিলেন এবং অপরজন হলেন শৈল্পিক জাদু খেলোয়াড় চুনী গোস্বামী।
এই প্রজন্মের কাছে ইনারা অধরাই থেকে গেলেন। ঐ সময়ে এই সেরা খেলোয়াড় দুইজন বিপক্ষ দলের ত্রাস ছিলেন। নিজেদের নিজস্ব নৈপুণ্যে পায়ের কাজে যেমন নিজেরাই গোল করেছেন তেমনি বেশিরভাগ সময়েই সতীর্থ খেলোয়াড় দের বল সাজিয়ে পাস বাড়িয়ে গোল করিয়েছেন। নিজেদের টীমের সতীর্থ প্লেয়ারদের মধ্যে কি বোঝাপড়া ছিল তা না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না। তেমনি মনে পরে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ ফুটবলে কিংবদন্তি ফুটবল জাদুকর দিয়েগো মারাদোনা একক কৃতিত্বে যেমন বিপক্ষ দলের ৯ জন প্লেয়ার কে নিজস্ব দক্ষতায় কুপোকাত করে জালে বল ঢুকিয়ে গোল করেছিলেন তেমনি প্রায় প্রতিটি ম্যাচে সতীর্থ খেলোয়াড় দের বল পাস বাড়িয়ে গোল করাতেন। ১১ জনের টীমে সকলেই মাঠ জুড়ে খেলতেন, কি অসাধারণ ছোটো ছোটো পাস নিজেদের মধ্যে দেওয়া নেওয়া করে বিপক্ষ দলের গোলে বল ঢুকিয়ে গোল করতো সেই দৃশ্যে চোখের পাতা পরতো না দর্শকদের। তখন মারাদোনার পাশে বুরুচাগা, আলমিরন, বাতিস্তা, বোচিনি, বরঘি, ব্রাউন, পাসেরেলা, ভালদানো, কুসিউফো ইত্যাদি নামকরা সব খেলোয়াড়। টীমের ইউনিটি দেখবার মতো। কিন্তু আজকের প্রতিবেদনে টীমের হিরো একাই সারা মাঠ দাপিয়ে খেলছেন তবে নাকি সতীর্থ খেলোয়াড় কে কোনোসময় বল পাস করছেন না। সতীর্থ খেলোয়াড়ের এমনি বার্তায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় দর্শকরা হতচকিত। একই সাথে মাঠে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন, ঘাম ঝরাচ্ছেন কিন্তু বল পাস পাচ্ছেন না। টীম ওয়ার্ক। একটি ময়দানে গোটা টীম খেলছে। বল এই পা থেকে ঐ পা হয়ে তবেই তো স্ট্রাইকারের কাছে আসে আর স্ট্রাইকার কখনো নিজে গোল করছেন আবার বেশিরভাগ সময়েই সতীর্থ খেলোয়াড় দের দিয়ে গোল করাচ্ছেন। কিন্তু এই ময়দানে তো সতীর্থ খেলোয়াড় আফশোষ করে বলছেন সংবাদ মিডিয়ার কাছে তিনি মাঠ জুড়ে দৌড়াচ্ছেন কিন্তু বল পাস পাচ্ছেন না। তার এই আফসোসের কথা টীমের অন্য খেলোয়াড় দের মধ্যে নেইতো এই বিষয়ে দর্শকরাই বলাবলি করছেন। দর্শকরা আবার এটাও বলাবলি করছেন আপসোস তো বেশীরভাগ সতীর্থ খেলোয়াড় দের মধ্যেই আছে কিন্তু সামনের ফাইনাল ম্যাচে যদি টীমের প্রথম একাদশে থেকে সরিয়ে রাখে এই সংশয়। কারন টীমে নাকি এখন রিজার্ভ বেঞ্চে অনেক প্লেয়ার। বর্তমানে ময়দান জল কাঁদায় পরিপূর্ণ। আপাততো ফাইনাল ম্যাচ ঘোষণা কবে হবে তা বলা যাবে না। তবে যেদিনই ঘোষণা হোক দর্শকরা কোন ঘরানার ফুটবল খেলা দেখবেন সেটার অপেক্ষায়। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা দলের মতো শৈল্পিক ঘরানার নাকি জার্মানি, বেলজিয়াম এর মতো রাফ এন্ড টাফ ঘরানার। ময়দানের দর্শক কিন্তু অধিকাংশই শৈল্পিক ফুটবল ঘরানায় পছন্দ করে। সতীর্থ খেলোয়াড় থেকে যেন খেলোয়াড় গনে পরিনত না হয়ে যায়। আউটডোর এই খেলা কিন্তু একটি টীম গেম। বল পাস না পেলে গোল হবে নাকি পাস দেওয়া নেওয়া করেই তো গোল হবে এটাই কি সতীর্থ খেলোয়াড়ের বহিঃপ্রকাশনা।