December 25, 2024

প্রশাসনিক চেয়ারে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক চিকিৎসক অপর চিকিৎসকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এমনি অভিযোগ মৃত পরিবারের ও চিকিৎসকের।

1 min read

প্রশাসনিক চেয়ারে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক চিকিৎসক অপর চিকিৎসকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এমনি অভিযোগ মৃত পরিবারের ও চিকিৎসকের।

জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ।চিকিৎসা জগতে রুগীদের কাছে চিকিৎসকরা যে ঈশ্বর সে কথা সকলেই জানে কিন্তু একজন প্রশাসনিক চেয়ারে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক যে একজন ডিউটিরত কলিক চিকিৎসকের জীবন নিয়ে খেলা করে তার জীবন কেড়ে নিতে পারে এমন দুঃসংবাদ ভূ- পৃথিবীর কেউ না জানলেও মৃত চিকিৎসকের পরিবারের মানুষজন এবং মৃত চিকিৎসকের কলিক চিকিৎসকের অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে পেরে সকলেই কিংকর্তব্যবিমূঢ় এবং গভীর ভাবে শোকাহত।

মৃত চিকিৎসকের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন অগনিত সাধারণ সকল স্তরের মানুষ। মৃত চিকিৎসক উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা সকলের মনের মানুষ বি,এইচ,এম,এস চিকিৎসক প্রয়াত নিলয় পাট্টাদার। অভিযোগের ভিত্তিতে চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদারের জীবন যিনি কেড়ে নিলেন তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক ( BMOH) চিকিৎসক রাকেশ চক্রবর্তী যিনি আবার উত্তর দিনাজপুর জেলা TDO, ঘটনায় প্রকাশ প্রয়াত চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার বর্তমানে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চিকিৎসার দায়িত্বে চিকিৎসক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন ইটাহার ব্লকের এবং ইটাহার ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীন ইটাহারের সোনাপুর পঞ্চায়েত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। প্রতিদিনের মতো চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার নিজস্ব প্রাইভেট গাড়ি করে কালিয়াগঞ্জের বাড়ি থেকে উক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপস্থিত হতেন নিজের দায়িত্ব পালনের জন্য। সাথে তার গাড়ির চালক থাকতেন। বি,এইচ,এম,এস স্বীকৃতি প্রাপ্ত সকল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগন জেলা পরিষদের অধীন বিভিন্ন পঞ্চায়েত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তারা চিকিৎসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রতিরোধে চিকিৎসার স্বার্থে জেলা মুখ্ স্বাস্থ্য আধিকারিক অফিস থেকে এই সকল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত এলাকায় জনগনের করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসার স্বার্থে। কিন্তু প্রশাসনিক ভাবে তাদের সুরক্ষার জন্য একমাত্র সার্জিক্যাল মাস্ক ছাড়া অন্য কিছুই চিকিৎসা জনিত সরঞ্জাম দেওয়া হয় নি কোনোরকম প্রটেকশন হিসাবে। এমনিতেই এক আতঙ্ক সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে চিকিৎসক এবং সকল স্বাস্থ্য কর্মীদের ভাবনার ও চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই সোনাপুর পঞ্চায়েত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রচুর মানুষদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রিক চেক আপ করাচ্ছিলেন চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার। প্রতিদিনের মতো গত ২১ এপ্রিল চালকসহ নিজের গাড়ি নিয়ে কালিয়াগঞ্জ থেকে পৌঁছে যান ইটাহারের সোনাপুর পঞ্চায়েত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। দুপুর ১২ টা থেকে তিনি রুগী দেখতে শুরু করেন এবং সেখানে অন্য চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। রুগী দেখতে দেখতে আচমকাই তিনি অসুস্থবোধ করতে শুরু করেন। এমন অবস্থায় তার পাশে থাকা অন্য চিকিৎসক কে তিনি বলেন তার শরীর ভালো লাগছে না, তিনি থাকতে পারছেন না , তিনি রায়গঞ্জ যাবেন চিকিৎসা করাতে ও চিকিৎসক দেখাতে। এই কথা শুনে অপর চিকিৎসক যিনি ছিলেন তিনি তখন নিলয় পাট্টাদার কে বলেন এত রুগী তার একার পক্ষে চিকিৎসা করা কিভাবে সম্ভব। কিন্তু চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার কোনো কথা না বলে তার গাড়ির চালককে বলেন গাড়ি বের করতে এবং রায়গঞ্জ যাবেন। গাড়ির চালক চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার কে নিয়ে রায়গঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হতেই অপর চিকিৎসক যিনি ঐ সেন্টারে ছিলেন তিনি টেলিফোন মারফত ইটাহার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক রাকেশ চক্রবর্তী কে জানান। বি,এম,ও,এইচ সাথে সাথে ইটাহার চৌপথি মোড়ে লকডাউন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন এমন একটি মারুতি গাড়ি যাচ্ছে আপনারা সেটিকে আটকান। ঐ সময়ে ঐ স্থানের পুলিশ নিলয় পাট্টাদারের গাড়িটির পথ অবরোধ করে তাকে জিজ্ঞাসা বাদ ও বাদানুবাদ করেন। নিলয় পাট্টাদার নিজেকে চিকিৎসক হিসাবে পরিচয় দেন এবং তার শারীরিক অবনতির কথা জানান। উক্ত স্থানের দায়িত্বে থাকা পুলিশ ব্যাক্তিরা নিলয় পাট্টাদার কে বলেন বি,এম,ও,এইচ ফোন মারফত তাদের জানিয়েছেন গাড়িটিকে যেন না যেতে দেওয়া হয়। এমনিতেই শরীরের অবস্থা অবনতি তারপরে তর্ক বিতর্কের মাঝে নিলয় পাট্টাদার মোবাইল মারফত বি,এম,ও,এইচ রাকেশ চক্রবর্তী কে ফোন করলে তিনি নিলয় পাট্টাদার কে উক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফিরে এসে কাজে যোগদান করতে বলেন। অগত্যা ঐ কঠিন শারীরিক অবনতির মধ্যেই নিলয় পাট্টাদার ফিরে আসতে আসতে তার বাড়িতে তার স্ত্রী কে মোবাইল মারফত সমস্ত ঘটনা বলেন। নিলয় পাট্টাদার ফিরে আসেন ইটাহার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং বি,এম,ও,এইচের কাছে গিয়ে তার ভীষন অসুস্থতার কথা বলেন। বি,এম,ও,এইচ বলেন এ তেমন কিছুই না, ওরকম শরীরের অবস্থা একটু কমবেশী সকলের হয়ে থাকে। বি,এম,ও,এইচ নিলয় পাট্টাদার কে বলেন রায়গঞ্জে কোথায় যাচ্ছিলেন চিকিৎসা করাতে। এতে অসুস্থ নিলয় পাট্টাদার বলেন তিনি জীবন দীপ নার্সিং হোমে যাবেন চিকিৎসক শান্তানু দাসকে দেখাবেন। এই কথা শুনে বি,এম,ও,এইচ রাকেশ চক্রবর্তী বলেন জীবন দীপ নার্সিং হোম তো এখন কোয়ারেন্টাইন হাউসে পরিনত। এভাবে ততক্ষণে আড়াই ঘন্টা অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় নিলয় পাট্টাদারের স্ত্রী সহ বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। নিলয় পাট্টাদারের প্রেসার চেক করে দেখা যায় তার প্রেসার ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির লোকেদের আকুতি মিনতিতে শেষে বৈকাল ৪.৩০- ৪.৪৫ মিঃ টে নিলয় পাট্টাদার কে তিনি ছেড়ে দেন পরিবারের কাছে এবং পরিবারের সদস্যরা অতিদ্রুত নিলয় পাট্টাদার কে নিয়ে এসে জীবন দীপ নার্সিং হোমে ভর্তি করান। চিকিৎসক সান্তানু দাস তৎক্ষণাৎ ইসিজি টেস্ট করে দেখতে পান হার্টের অবস্থা ভালো না। ততক্ষণে নিলয় পাট্টাদারের খিঁচুনি শুরু হয়ে গেছে এবং জ্ঞান থাকলেও কাউকেই চিনতে পারছিলেন না। এমার্জেন্সি চিকিৎসা পরিষেবা শুরু করলেও ঐ অবস্থায় নিলয় পাট্টাদার কে বাহিরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় নার্সিং হোম থেকে। বিষয়টি ততক্ষণে উঃ দিনাজপুর জেলা মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং ডি, এমের কাছে পৌঁছলে জেলা মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিজে চলে আসেন উক্ত নার্সিং হোমে এবং খবর পেয়ে উক্ত স্থানে পৌঁছে যান রায়গঞ্জ পৌরসভার পৌরপতি সন্দীপ বিশ্বাস। এর মধ্যেই ডি,এমের তত্বাবধানে নিলয় পাট্টাদার কে বাহিরে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস পৌঁছে গেলেও নিলয় পাট্টাদার কে আর বাহিরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় নি কারণ ততক্ষণে চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার সকলের অজান্তেই মৃত্যুর কোলো ঢোলে পরে স্ত্রী, বাচ্চা শিশু, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু বান্ধব, কলিকদের থেকে চিরতরে বিদায় নিয়ে নিয়েছেন। এই অকল্পনীয় ঘটনাচক্রে চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদারের আকস্মিক মৃত্যু কে ঘিরে এক গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবার সহ কালিয়াগঞ্জ শহরে এবং চিকিৎসক মহলে। সমবেদনা দেওয়ার ভাষা নেই তার পরিবারের কাছে, তার স্ত্রী ও ছোট্ট বাচ্চা সন্তানের কাছে। আত্মীয় পরিজনদের, এলাকার মানুষের, পরিচিতদের, বন্ধু বান্ধব দের চোখে শুধুই অশ্রু ধারা বয়ে চলেছে চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার আর নেই শুনেই। তবে এহেন পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যরা, স্ত্রী এবং নিলয় পাট্টাদারের কলিক চিকিৎসকরা সকলেই বি,এম,ও,এইচ রাকেশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সরব হয়ে অভিযোগ করছেন। তারা সকলেই চাইছেন উক্ত ঘটনা প্রবাহে চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদারের অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী বি,এম,ও,এইচ। এই প্রশাসনিক স্বাস্থ্য কর্তার বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হোক চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদারের মৃত্যুর আকস্মিক ঘটনায়। উক্ত প্রশাসনিক স্বাস্থ্য কর্তা রাকেশ চক্রবর্তীর এহেন অমানুষিক, অসহযোগিতা, অসহিষ্ণুতা এবং তার একজন চিকিৎসক হয়েও সাধারণ ভাবে নিলয় পাট্টাদারের অসুস্থতায় তার পাশে সহানুভূতিশীল না হয়ে ঘটনার শুরু থেকে চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদারের উপর তিনি যেভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে এক অদৃশ্য পীড়া, যন্ত্রনা এবং আঘাত করেছেন তা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। উপযুক্ত সময়ে যদি চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার চিকিৎসা পেতেন তাহলে হয়তো সকলকে ছেড়ে পৃথিবী থেকে, স্ত্রী সন্তানের কাছে থেকে, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব দের কাছ থেকে চিরতরে এই অল্প বয়সে বিদায় নিতে হতো না। অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘক্ষণ সময় সুচিকিৎসার স্বার্থে নিলয়ের জীবন থেকে শুধু কেড়ে নেন নি বি,এম,ও,এইচ রাকেশ চক্রবর্তী , তিনি অচিরেই কেড়ে নিলেন তার সমস্ত রকম ইচ্ছাকৃত গাফিলতি ও সক্রিয় কার্যকলাপে চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদারের জীবন। হেরে গেছে নিলয়ের আকুতি মিনতি তবুও শেষ রক্ষা হলো না। চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার আর কোনদিন চেম্বারে বসবেন না, নিজের শিশু সন্তান কে চেম্বার থেকে ফিরে কোলে তুলে নিতে পারবেন না। ইটাহার ব্লক স্বাস্থ্য অধিকর্তা রাকেশ চক্রবর্তী এ কি করলেন। প্রশাসনিক স্তরে নাকি আপনার লম্বা হাত যাহা আপনি দম্ভের সাথে প্রকাশ করেন কিন্তু চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার তো আপনার কাছে চেয়েছিল দুই ফুট হাতের সহযোগিতা, পারলেন কোথায় দিতে। আপনার চরমতম শাস্তির দাবি করছেন আপামর সকল স্তরের জনগন, নিলয়ের পরিবার পরিজন এবং নিলয়ের কলিক ও সহ চিকিৎসক বন্ধুরা। জনগনের ভাষায় উঃ দিনাজপুর জেলার স্বাস্থ্য দপ্তরের অপদার্থ ইটাহার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং চিকিৎসক রাকেশ চক্রবর্তীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। নিলয় আর নেই কিন্তু এই সমাজে, সবার হৃদয়ে বেঁচে থাকুক চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদারের মৃদু হাসি, ব্যবহার এবং চিকিৎসক হিসেবে তার রুগীদের কাছে সাবলীল গ্রহনযোগ্যতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *