রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অনির্বাণ চৌধুরি নর্দমায় জমে থাকা জলকে মাটির নীচে পাঠিয়ে নর্দমাকে জলমুক্ত করার অভিনব উপায় উদ্ভাবন করলেন বর্তমানের কথা রায়গঞ্জ:-রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অনির্বাণ চৌধুরি নর্দমায় জমে থাকা জলকে মাটির নীচে পাঠিয়ে নর্দমাকে জলমুক্ত করার অভিনব উপায় উদ্ভাবন করলেন ।
এর ফলে নর্দমার দূষিত জলকে একদিকে যেমন নদীতে মেশার হাত থেকে আটকানো সম্ভব হবে, তেমনি নর্দমায় মশার বংশবিস্তারও আটকানো যাবে। নর্দমায় জল জমে থাকলে শহরে বৃষ্টির দিনে জল উপচে পড়ে। কিন্তু এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে তা রোধ করা সম্ভব বলে দাবি অনির্বাণের।
তবে শুধু মডেল উপস্থাপনই নয়, ব্যবহারিক ক্ষেত্রেও মডেলটি কাজে লাগিয়ে সফল হয়েছেন অনির্বাণ। রায়গঞ্জের শিশুসদনে গত অক্টোবর মাসে এই ড্রেনেজ সিস্টেমটি কাজে লাগিয়ে তার উপরে ৮০ জন বাচ্চাকে স্নান করানোর পর দেখা গিয়েছিল সমস্ত জলই শোষিত হয়ে যাচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র অনির্বাণ জানালেন, নর্দমা তৈরির সময় পাথর, বালি ও সিমেন্ট দিয়ে য়ে ঢালাই করা হয়, সেখানে বালি ব্যবহার করা যাবে না। তাহলেই নর্দমার সমস্ত জল সেখানকার মাটির রন্ধ্রের মধ্যে দিয়ে নীচে চলে যাবে।
এর ফলে পরিবেশ দূষণও কমবে। তবে নর্দমায় যে কাদা জমে থাকবে তার জন্য চেম্বার করতে হবে। সেই চেম্বার থেকে সহজেই কাদা তুলে নেওয়া যাবে। অনির্বাণের এই মডেলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এবছরের বার্ষিক অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয়। অনির্বাণের সঙ্গে ছিলেন জয়ন্ত সরকার, বর্ণালি পাল, শিপ্রা সরকার ও তিথি সিং। শিশুসদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সাধন সিংহরায় বলেন, মাস তিনেক আগে অনির্বাণ এখানে এসে ওই ড্রেনেজ সিস্টেমটি তৈরি করেন। খুব ভালোভাবেই কাজ করছে সিস্টেমটি।তবে এমন উদ্ভাবনী চিন্তাধারা অনির্বাণের এই প্রথম নয়। কয়ে মাস আগে একমুখী হর্ন বানিয়ে রায়গঞ্জ শহরে সাড়া ফেলেছিলেন অনির্বাণ। তারপর এমন ড্রেনেজ সিস্টেম বানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়া ফেললেন তিনি।অনির্বাণ জানালেন, আসলে রায়গঞ্জ শহরে একটু বৃষ্টিতেই রাস্তায় জল জমে য়ায়। নর্দমায় জল থাকার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই খুব তাড়াতাড়ি নর্দমার জল উপচে পড়ে। পাশাপাশি নর্দমায় মশার বংশবিস্তার, আবর্জনা, দূষণ এসব তো থাকেই। তাই গত অগাস্ট মাসে আমার বোন নন্দাশ্রীকে নিয়ে কাজটি শুরু করি। বোনের স্কুলের শিক্ষক উত্তম মিত্র বোনকে কিছুটা সাহায্য করেছিলেন। তারপর মডেলটিকে আরও উন্নত করেছি। নর্দমার নীচে আন্ডারগ্রাউন্ড শোক সিস্টেম করতে হবে। ইটভাটার ৩ নম্বর ইট দিয়ে তা বানাতে হবে। তাহলেই খুব সহজেই উদ্দেশ্য সফল হবে।রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির বিভাগীয় প্রধান সুব্রত সাহা বলেন, অনির্বাণ খুব সুন্দর এবং প্রাসঙ্গিক একটি বিষয় তুলে ধরেছে। এর মাধ্যমে মাটির নীচে জলের স্তর গরমের সময় অনেক নীচে নেমে যাবে না। ড্রেনেজ সিস্টেমটি বিভিন্ন জায়গায় প্রয়োগ হোক এটাই চাই। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকার বলেন, অসাধারণ একটি বিষয় অনির্বাণ তুলে ধরেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে জল সংরক্ষণের কাজে যাতে এটা ব্যবহার করা যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।