October 26, 2024

বিক্ষোভ থেমে গেলেও গাছের সন্ধানে পাখিদের কলরব নাটমন্দির চত্ত্বরে।

1 min read

জয়ন্ত বোস, বর্তমানের কথা :- উত্তর দিনাজপুর জেলার এক প্রাচীন শান্তিপ্রিয়
গঞ্জ থেকে পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হয়ে পৌর পরিষেবায় পৌর অঞ্চল  কালিয়াগঞ্জ শহর। বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতি মূলক
মনোভাবাপন্ন মানুষের মধ্যে বেশিরভাগই ব্যবসায়ী এবং চাকুরীজীবিদের বাসস্থল শ্রীমতি
নদীর তীরে এই ছোট্ট প্রাণচাঞ্চল্য শহর কালিয়াগঞ্জে।

 দেশভাগের কারনে অগনিত মানুষ
পূর্ববঙ্গের ( অধুনা বাংলাদেশ) ভিটা মাটি ছেড়ে কালিয়াগঞ্জে তাদের ভবিষ্যতের
বাসস্থান গড়ে তুলেছিলেন। গরীব
, নিম্নবিত্ত,
মধ্যবিত্তের সমন্বয়ে
আস্তে আস্তে জনসংখ্যায় বর্ধিত হতে থাকে কালিয়াগঞ্জের জনবসতি। এই শহরের ধর্মপ্রাণ
মানুষের জন্য গড়ে ওঠে মন্দির ও মসজিদ। এগুলির মধ্যে কালিয়াগঞ্জের নাম বিস্তির্ণ
এলাকায় ছড়িয়ে পরেছে  মা বয়েরা মন্দির
এবং মহেন্দ্রগঞ্জের নাটমন্দির প্রতিষ্ঠানের জন্য।

এই সেই গাছ
 মহেন্দ্রগঞ্জের নাটমন্দির প্রাঙ্গণ
আজও একাধিক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। যাত্রার আসর বলতেই মহেন্দ্রগঞ্জের
নাটমন্দির প্রাঙ্গণ
, বিভিন্ন রাজনৈতিক
দলের তাবড় তাবড় নেতাদের রাজনৈতিক সভাস্থল বলতে মহেন্দ্রগঞ্জের নাটমন্দির
প্রাঙ্গণ
, সরস্বতী পূজার
হাট বলতেই মহেন্দ্রগঞ্জের নাটমন্দির প্রাঙ্গণ
, দুধ ও বাঁশ হাটি বলতে নাটমন্দির প্রাঙ্গণ,
চৌষট্টি প্রহরের মেলার
সাথে জিলাপি কেনার দোকান বলতেই নাটমন্দির প্রাঙ্গণ। নাটমন্দিরের এত এত সেন্টিমেন্ট
সুদীর্ঘকাল ধরেই শান্তিপ্রিয় ধার্মিক ভাবাপন্ন কালিয়াগঞ্জ বাসীর হৃদয়ের খোপে ও
পাঁজরের খাঁজে খাঁজে গেঁথে আছে।

ঐতিহ্যবাহী মহেন্দ্রগঞ্জের নাটমন্দির
 তার সাথে খোলা মাঠে নব নির্মিত অত্যাধুনিক শিল্প
কারুকার্যে নয়নাভিরাম মন্দিরের আকর্ষণে। এই প্রতিষ্ঠানটি কোনো ব্যবসায়িক
প্রতিষ্ঠান নয়। হরে কৃষ্ণ হরে রাম ধ্বনি কীর্তন সঙ্গীতে  উচ্চারণে চারিদিক মুখরিত করে তোলা মনের ধার্মিক
পাগল মানুষদের ধার্মিক প্রতিষ্ঠান।

ঐতিহ্যবাহী মহেন্দ্রগঞ্জের নাটমন্দির
 নিত্যদিনের সান্ধ্যকালীন এই কীর্তনের রস অগনিত
মানুষ যেমন রসনায় তৃপ্ত হতেন তেমনি নাটমন্দির প্রাঙ্গণের গাছগুলোতে আশ্রয় নেওয়া
পাখিরাও তৃপ্ত হতো। আজ কিন্তু নাটমন্দির চত্ত্বরে গাছগুলো নেই। নেই বলতে
মহেন্দ্রগঞ্জের নাটমন্দির পরিচালন সমিতি নাটমন্দিরের অত্যাধুনিক ব্যবসায়িক
উন্নয়নের স্বার্থে গাছগুলো কেটে ফেলেছেন
, কারন মন্দির প্রাঙ্গনের খোলামাঠ কে আর নাকি খোলা রাখা যাবে না।

নাটমন্দিরে চৌষট্টি প্রহরের জিলাপির দোকান
 দুইদিকে দোকান
ঘড় তৈরী করে আর্থিক আমদানির একটা প্রচেষ্টায় এই বৃক্ষ নিধন বলে মত প্রকাশক এবং
বৃক্ষ নিধনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা নাটমন্দিরের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য রক্ষায় অগনিত
ভক্ত বৃন্দ মানুষ।
 একটি গাছ একটি প্রানের তকমা কে বূড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বৃক্ষ
নিধনে নাটমন্দির চত্ত্বরের শতাধিক পাখীর প্রান ওষ্ঠাগত। বিক্ষোভ থেমে গেলেও
বৃক্ষের সন্ধানে পাখিদের কলরব আজও মহেন্দ্রগঞ্জের নাটমন্দির চত্ত্বরে। এরই মধ্যে
কীর্তনের সুরে এক ভক্ত বৃন্দ গান ধরেছেন ” ও পাগল মন মনরে
,মন কেন এত কথা বলে “।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *