October 20, 2024

২৯বছর পূর্বে ভান্ডার গ্রামের জমিতে পাওয়া কষ্টি পাথরের লক্ষী নারায়নের মূর্তি আজ গ্রাম্য দেবতা হিসাবেই পুজিত হয়

1 min read

২৯বছর পূর্বে ভান্ডার গ্রামের জমিতে পাওয়া কষ্টি পাথরের লক্ষী নারায়নের মূর্তি আজ গ্রাম্য দেবতা হিসাবেই পুজিত হয়

তপন চক্রবর্তী,কালিয়াগঞ্জ,১৫ অক্টোবর:২৯ বছর পূর্বে জমিতে পাওয়া কষ্টি পাথরের লক্ষীনারায়ণের মূর্তি আজ পূর্ব ভাণ্ডার গ্রামের বাসিন্দারা মন্দির বানিয়ে গ্রাম্য দেবতা হিসেবে পূজা করে থাকে। সারা বছর নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে দু বেলা পুজো হয়। তবে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনটিতে মহাসমারোহের সঙ্গে পুজোর আয়োজন করা হয় এখানে।দশমীর পর থেকে গ্রামের কোন বাড়িতে আমিষ হয় না। কারণ দশমী শেষ মানেই এই গ্রামের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মীর পুজো শুরু। জানা গিয়েছে ২৯ বছর আগে কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ৭ নম্বর ভাণ্ডার গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব ভাণ্ডার গ্রামের একটি জমিতে চাষ করছিলেন কৃষক নরেশ বর্মণ। গোকুল চন্দ্র বর্মণের জমিতে চাষ করার সময় নরেশ বাবুর লাঙ্গলের ফলায় আটকে যায় একটি পাথর। সঙ্গে সঙ্গে কোদাল দিয়ে পাথরটিকে তুলে পরিস্কার করলে দেখা যায় কালো পাথরের খোঁদায় করা লক্ষ্মী নারায়নের মূর্তি।মূর্তিটি লম্বায় প্রায় দেড় ফুট, চওড়ায় এক ফুট। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মূর্তিটিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করা হলে, গ্রামবাসীদের বাঁধার মুখে পরে প্রশাসনের কর্তাদের খালি হাতে ফিরেতে হয়েছিল।

 

গ্রামের রাজবংশী সমাজের মানুষদের দাবি ছিল যেহেতু তাদের জমিতেই লক্ষীনারায়ণের মূর্তি পাওয়া গেছে তাই এই মূর্তি প্রশাসনের কাউকে দেওয়া হবে না। গ্রামে মন্দির বানিয়ে সেই মন্দিরে গ্রাম্য দেবতা হিসাবে লক্ষী নারায়ণ ঠাকুরকে পূজা করা হবে।এরপর ২৯ বছর আগে পূর্ব ভাণ্ডার গ্রামের বাসিন্দারা মন্দির বানিয়ে মূর্তিটির পুজো শুরু করেন।সারা বছর নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে দু বেলা পুজো হয়। তবে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনটিতে মহাসমরহে সঙ্গে পুজোর আয়োজন করা হয় এখানে।এই গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে নয় বরং মন্দিরে সকল মহিলারা একত্রিত হয়ে কোজাগরী পূর্ণিমাতে মা লক্ষ্মীর পুজো করেন।কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো এখানে রাতে হয়। লক্ষ্মী-নারায়ণ মন্দির কমিটির একজন বলেন, ” গ্রামে বিয়ে, অন্নপ্রাশন হলেও লক্ষ্মী-নারায়ণ মন্দিরে এসে গ্রামবাসীরা প্রথমে পুজো দিয়ে যান। এই মন্দিরে গোটা বছর ধরে প্রচুর সোনা ও রুপার গহনা দান করেন ভক্তরা।”পূর্ব ভাণ্ডার গ্রামের লক্ষ্মী নারায়ণের পূজাকে কেন্দ্র করে আসে পাশের গ্রাম থেকে কয়েক হাজার লোকের সমাগম হয়। এখানে বিশাল মেলা বসার পাশাপাশি, তিন দিন তিন রাত ধরে চলে বাউল গানের আসর। এই পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে দূরদূরান্তের অতিথীরাও এসে হাজির হন। মা লক্ষ্মী এখানে গ্রামের দেবী। দুর্গা পূজার মতোই এই গ্রামে লক্ষ্মী পুজোতেও সকলে মেতে ওঠেন।পূর্ব ভান্ডার গ্রামের লক্ষী নারায়নের পূজার নাম ডাক বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামের মন্দিরের লক্ষ্মীনারায়ণের মাহাত্ম্য থাকায় । এই পুজো উপলক্ষে কালিয়াগঞ্জের পূর্ব ভান্ডার গ্রামের লক্ষী নারায়ণ মন্দির প্রাঙ্গনে তিন দিন ধরে গ্রামের মানুষদের প্রসাদ খাওয়ানোর ব্যাবস্থা থাকে বলে জানা যায়। কালিয়াগঞ্জ শহরের পার্শ্ববর্তী পূর্ব ভান্ডার গ্রামের লক্ষী পূজাকে কেন্দ্র করে চলছে গ্রামের মানুষদের মধ্যে জোর তৎপরতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *