October 27, 2024

হাসপাতালে পৌঁছে ফিরতে হলো অন্তঃসত্ত্বাকে

1 min read



বিশ্বজিৎ মণ্ডল, মালদা : হাসপাতালে পৌঁছে ফিরতে হলো অন্তঃসত্ত্বাকে,কারণ চিকিৎসক বলেছে দেরি আছে প্রসবের।কিন্তু বাড়ি পৌঁছানোর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই শিশুকন্যার জন্ম দেন মহিলা।ঘটনা কোনো গ্রামীন হাসপাতালের নয়,এমন গাফিলতির ঘটনা সামনে এসেছে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।এই হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের এমন কাণ্ডে উঠেছে প্রশ্ন!হাসপাতালের এমন যদি গাফিলতির বদলে বাড়িতেই প্রসব করার কথা ভাবছে গ্রামের মহিলারা।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

মালদা সদর শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে ইংরেজবাজারের  নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের বুধিয়া গ্রাম। সেই গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ সাকিনা বিবি (৩৪)।রবিবার দুপুর নাগাদ প্রসব যন্ত্রনা বেড়ে যাওয়ায় পরিজনকে নিয়ে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়েছিলেন।  তবে হাসপাতালে পরীক্ষা করে জানান,প্রসবের দেরি আছে।এই বলে অন্তঃসত্ত্বা সাকিনাকে ছেড়ে দেন চিকিৎসকরা।বারবার অন্তঃসত্ত্বাকে অতদূর থেকে আসা সম্ভব নয়,তাই পরিবারের লোকজন চিকিৎসকদের অনুরোধ করেন হাসপাতালে ভরতি করে নেওয়ার জন্য। পরিবারের কাকতিমিনতির পরও চিকিৎসকরা তাতে রাজি না হওয়ায় সাকিনাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন পরিবারের সদস্যরা।কিন্তু রাতেই বাড়িতে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন সাকিনা।
প্রসূতির পরিবার সূত্রে জানাগেছে, প্রসব যন্ত্রনা ওঠায় সাকিনাকে মেডিকেলে নিয়ে ভরতি করেন। সঙ্গে ছিলেন এলাকার আশা কর্মী সাবিরা মেহবুবা। তিনিই অ্যাম্বুলেন্সে সকিনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। চিকিৎসকরা সাকিনাকে পরীক্ষা করে জানান প্রসব হতে দেরি রয়েছে। তাই সাকিনাকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকদের আশা কর্মী সাবিরা বারবার জানান, সাকিনার প্রসব হয়ে যাবে। তাঁকে যেন হাসপাতাল থেকে ছুটি না দেওয়া হয়। তাছাড়া তাঁদের বাড়িতে লোকজন নেই। তাই বারবার হাসপাতালে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই  সকিনাকে মালদা মেডিকেলে চিকিৎসা করাচ্ছেন। অভিযোগ, চিকিৎসকরা কোনও কথাই শুনতে চাননি। শুধু তাই নয়, এক নার্স এনিয়ে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেন। শেষ পর্যন্ত সাকিনাকে বাড়ি নিয়ে চলে আসেন পরিজনেরা। সন্ধ্যার দিকে সাকিনার প্রসবযন্ত্রণা আরও বেড়ে যায়।শেষমেষ সাড়ে সাতটা নাগাদ কন্যাসন্তানের জন্ম সাকিনা।
সাকিনার কাছে থাকা হাসপাতালের নথি থেকে জানা যাচ্ছে,  তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন নবেন্দু ভট্টাচার্য, অনিতা দাস, সোহম চৌধুরি, এস চৌধুরি ও সত্যেন্দু শেখর নামে ছয় জন চিকিৎসক। তাঁদের মধ্যে নবেন্দুবাবু প্রসূতি বিভাগের প্রধান।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

এপ্রসঙ্গে মালদা মেডিকেলের MSVP (মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপাল) অমিত দাঁ জানান,”এমন ঘটনা কখনই মেনে নেওয়া যায় না।দুর্ভাগ্যজনক। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে খবর এসেছে।ইতিমধ্যেই আমরা একটি নির্দেশিকা জারি করে দিচ্ছি যাতে কোনও অন্তঃসত্ত্বা বা প্রসূতি হাসপাতালে ভরতি হলে ৭২ ঘণ্টা তাঁকে যেন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। যতক্ষণ সিনিয়র চিকৎসক দেখে না বলবেন যে তার প্রসবে দেরি আছে ততক্ষণ তাঁকে ছাড়া যাবে না। এরকম কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করব। কেন ওই প্রসূতিকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল, সেটাও জানতে চাইব। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের বৈঠকেও আলোচনা করা হবে। এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য প্রসূতি বিভাগের প্রধানকে মাথায় রেখে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এই হাসপাতালে প্রতি মাসে ১৫০০ এর বেশি মহিলা প্রসব করে। তার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ প্রসূতির অস্ত্রোপচার হয়। বুধিয়ার ওই প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। অর্থাৎ তাঁর প্রসব নিয়ে কোনও সমস্যা ছিল না”।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

যেখানে সরকার হাসপাতালে প্রসবের জন্য প্রচার চালাচ্ছে, সেখানেই হাসপাতালের এমন ভূমিকায় ক্ষুব্ধ সাকিনার পরিবার। সাকিনার প্রসব করিয়েছেন বুধিয়া গ্রামেরই প্রশিক্ষিত দাই মিনতি রবিদাস। মা ও সদ্যোজাত বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। শুধু সাকিনাই নয়,হাসপাতালের এমন ভূমিকায় তাঁদের এলাকায় আরও অনেক মহিলা বাড়িতেই প্রসব করেছেন বলে জানান মিনতিদেবী।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *