October 27, 2024

বর্তমান সরকারের হাত ধরে কুমারগঞ্জ আজ এক উন্নত জনপদ (কুমারগঞ্জের একাল ও সেকাল )

1 min read
কমল কুমার বিশ্বাস (কুমারগঞ্জ)23শে জুলাই:-কুমারগঞ্জ ব্লক হলো  দক্ষিণ  দিনাজপুর  জেলার  একটি  সীমান্তবর্তী  ব্লক যার  তিন  দিকেই  বাংলাদেশ | এই ব্লকের প্রাণ  ভোমরা  হলো সদাচঞ্চল  স্রোতস্বীনি  আত্রেয়ী নদী| এই ব্লকের প্রায়  90%  মানুষই  কৃষিকাজ  বা  কৃষিজ  ব্যবসায় জড়িত |

তাই এই এলাকার  আর্থসামাজিক  অবস্থার  সাথে  আত্রেয়ী নদীর  ভূমিকা অনস্বীকার্য| কৃষিক্ষেত্রই বলুন  বা নদী থেকে  মৎস  আহরণের ক্ষেত্রেই বলুন ,আত্রেয়ী নদীর ব্যাপ্তি  সর্বত্র | কিন্তু  সেই  লাইফলাইন  আজ  জলশূন্য| কুমারগঞ্জের সামজিয়ার  ঠিক  এক  কিলোমিটার  দূরে  বাংলাদেশ  বাঁধ  দিয়ে  এই নদীর জল  আটকে  রাখায়  কুমারগঞ্জ ও বালুরঘাট  ব্লকের বিস্তীর্ণ  এলাকার কৃষি  জমি  সেচের  অভাবে  কৃষিকাজ ব্যাহত  তদসহ  নদীর দুই  তীরের  বেশকিছু  গ্রাম  আজ তীব্র  জলকষ্টে  দিন  অতিবাহিত করছে এবং  নদিয়ালী  মাছ  এর  ওপর নির্ভরশীল  পরিবার  গুলিও  কর্মশূন্য হয়ে  পড়েছে  |

এই ব্লকে একটিও  শহর  নেই  ,218 টি  গ্রাম নিয়ে  এই ব্লক ,যার আয়তন  প্রায় 290 বর্গ  কিলোমিটার |আত্রেয়ী নদী যেমন  এই ব্লকের চালিকা  শক্তি  তেমনি  বিভিন্ন  সময়  রুদ্রমূর্তি  ধারণ  করে  এলাকাবাসীকে  তার  ভয়াল  অস্তিত্বের  জানান  দিয়েছে |1995 সালের  ভয়াবহ  বন্যার  ফলে  রসুলপুর  ও বালুপাড়ার  প্রায় আট  কিলোমিটার এলাকায় নদীতীরে  ভূস্খলন  ঘটে ,এছাড়াও  দাউদপুরে পাকা  রাস্তা সহ বিশাল  ভূভাগ  নদীগর্ভে  বিলীন  হয়েযায় ,এনাতুল্লাপুর  ও গোবিন্দপুর  ব্রিজেরও ব্যাপক  ক্ষতি  হয় |


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

              সেইসময়  প্রাকৃতিক  দুর্যোগের  করালগ্রাস থেকে বাঁচতে  মানুষের  একমাত্র  ভরসা  ছিল  বিভিন্ন সরকারি  ভবন | পরবর্তীতে  এলাকায়  ছয়টি  ফ্লাডশেল্টার তৈরী  হয় গোপালগঞ্জ ,রসুলপুর,


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

আমুলিয়া,আজাদপুর ,  বড়ম ও সাহাজাদপুরে  |2011 সালের জনগণনা  অনুযায়ী  কুমারগঞ্জে প্রায় এক লক্ষ  সত্তর  হাজার  মানুষের বাস ,যার মধ্যে তপসীলি জাতির প্রায় চুয়াল্লিশ  হাজার ও তপসীলি উপজাতির  প্রায় ত্রিশ  হাজার মানুষের বাস |এইধরণের একটি পিছিয়ে পরা এলাকার উন্নয়নের  জন্য  স্বাধীনোত্তর  কালে  কোনো  সরকারই সেভাবে  তাকায়নি | এলাকার ধর্ম- বর্ণ  নিৰ্বিশেষে  মানুষ  কখনো  কংগ্রেস ,কখনো বাম  কে  ভোট  দিয়ে ক্ষমতায়  আনলেও  এলাকার উন্নয়নে  তাদের  মনোনিবেশ  করানো  যায়নি  কোনোকালেই |

 এমতাবস্থায়  2008 সাল  থেকেই  মানুষের ক্ষোভ  পুঞ্জীভূত  হতে থাকে বাম অপশাসনের  বিরুদ্ধে ,অনুন্নয়নের  বিরুদ্ধে এবং সেই গণআন্দোলনের  রূপ দেন  মমতা  ব্যানার্জী |এরমদ্ধেই  কুমারগঞ্জ ব্লকের জন্য দীর্ঘদিনের   দাবীমত একটি ডিগ্রি  কলেজ  অনুমোদন  হলেও  কুমারগঞ্জ এর বাম নেতৃত্বের  উদাসীনতায়  সেটি  চলে যায়  পাতিরাম  শ্মশান  সংলগ্ন  নদীতীরে | এটাই  বারুদে  অগ্নি  সংযোগের  কাজকরে  |কুমারগঞ্জ এলাকার সমস্ত  লোক  তখন  ক্ষোভে  ফুঁসতে  থাকে  এবং এই ক্ষোভকেই  মূলধন  করে 2011 সালে  নির্বাচনী  বৈতরণী  পার  হলো তৃণমূল  কংগ্রেস প্রার্থী মাহামুদা বেগম |

 নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিকে  ছাপিয়ে  গিয়ে  একনাগাড়ে  উন্নয়নের ঘোড়া  ছুটতে  থাকে নতুন  সরকারের নেতৃত্বে  |2016 সালের মধ্যে এলাকায় উল্লেখ  উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন  ঘটে | একটি ডিগ্রি কলেজ ,একটি আইটিআই  কলেজ ,কিষান  মান্ডি,এফসিআই  গোডাউন ,নদীবাঁধ ,সংখ্যালঘু    ছাত্রী  হোস্টেল ,কর্মতীর্থ ,প্রচুর  রাস্তাঘাট , উচ্চ বাতিস্তম্ভ  ইত্যাদি | কিন্তু এতসব  উন্নয়ন মূলক  কাজ  সত্ত্বেও  মানুষ জনের  ভেতরে  একটা  ক্ষোভ লক্ষ্য করাগেলো |

 এর কারণ  হলো দুর্নীতি  ও স্বজনপোষণ | বিশেষত  2014 সালের প্রাথমিক  শিক্ষক  নিয়োগে  তৎকালীন  বিধায়কের  মেয়ের  চাকরি এবং সমগ্র  ব্লকে মেধাবী  ছাত্রছাত্রীদের  চাকরি না  পাওয়া |জনগণের  মুখে  একটি চলতি  কথা  হয়ে দাঁড়ালো  –ফেলো  করি  পাও  টেট |এরপর  সিভিক  পুলিশ  / ভলান্টিয়ার  নিয়োগে দুর্নীতির  অভিযোগ | কোনোরূপ  শারীরিক মাপজোক ছাড়া বা লিখিত  পরীক্ষা  ছাড়া দলীয়  ভাবে  নিয়োগের  অভিযোগ উঠতে  শুরুকরে | এছাড়াও দূরদর্শিতার  অভাব  পরিলক্ষিত  হলো কর্মতীর্থ  ও সংখ্যালঘু ছাত্রী হোস্টেল তৈরীকে কেন্দ্রকরে | যা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী এলাকার উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে উদ্বোধন করলেও  আজও  চালু  করা গেলোনা |এছাড়াও কুমারগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড  থেকে  দশ মাইল  এর রাস্তা,যা প্রায় দশ কোটি  টাকা  খরচ  করে তৈরী হলেও নির্মাণ  এর একমাসের  মধ্যেই  চলাচলের  অযোগ্য হয়ে পরে |

               এরকম  অবস্থায়  দলীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে একাট্টা  হয়ে বিরোধিতায় নামে  কুমারগঞ্জ ব্লকের তৃণমূল নেতৃত্বের একটা বৃহদ  অংশ | মূলতঃ স্বজনপোষণ  ও দলীয় নেতৃত্বকে  গুরুত্ব  না দেয়ায় বিধায়ক  নিঃসঙ্গ  হয়ে পড়েন |উন্নয়নমূলক  প্রচুর কাজ  হওয়া সত্ত্বেও বিরোধী  হওয়া বইতে  শুরু করায় তৃণমূল নেতৃত্ব  একপ্রকার  বাধ্য হয়েই 2016 তে  নতুন মুখ  খুঁজতে শুরু করেন | শুরুহয়  নিজেদের  মধ্যে ইঁদুর  দৌড় | শেষঅবধি একপ্রকার আশাতীত  ভাবেই  প্রার্থী হন তোরাফ হোসেন মন্ডল |


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

               ভোট চলাকালীন  বিরোধীদের  তুলনায় নিজদলীয়  নেতৃত্বের একটা  বড় অংশ  তাকে  হারাবার  খেলায়  মত্ত  হয়েওঠে | তবু  মমতা ব্যানার্জীর  উন্নয়ন ও বাম রাজত্বের  অভিশপ্ত  দিনের  কথা মাথায়  রেখে  এলাকাবাসী  তৃণমূল প্রার্থী কেই  জয়ী  করেন |

             বর্তমান  বিধায়কের বিরুদ্ধে শত  কুৎসা  সত্ত্বেও শান্ত  স্বভাবের  এই মানুষটি  লক্ষে  অবিচল  থেকে সকলকে  একসাথে  নিয়ে কাজ করে যাবার  চেষ্টা  চালাচ্ছেন | তিনি  বিধায়ক কম , সাধারণ  মানুষের  বন্ধু  হবার  চেষ্টাতে  মত্ত  | না আছে  কোনো দামি  গাড়ি ,না আছে কোনো দাম্ভিকতা |দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি খড়গহস্ত |তার প্রতিফলন  কুমারগঞ্জ কলেজের শিক্ষক নিয়োগে |মেধাবী  ছাত্র ছাত্রীরাই  সুযোগ  পেয়েছে |

               একান্ত  সাক্ষাৎকারে  তোরাফ বাবু  জানিয়েছেন  একটা স্বচ্ছ প্রশাসন  ও একটা উন্নততর  কুমারগঞ্জ গড়ে  তোলাই  তার স্বপ্ন |”আমি প্রতিনিয়ত নিজের  সাথে লড়াই  চালাই কিভাবে  দুর্নীতি মুক্ত  ভাবে কুমারগঞ্জ এর উন্নয়ন করা  যায় |”  তিনি বলেন  এমন  কিছু  করবোনা  যাতে  পাঁচ  বছর পর  মানুষের কাছে  ধিকৃত হতে হয়|
                 যদিও  দিওর অঞ্চলের  গোষ্ঠী  কোন্দল  কে মেটাতে  গিয়ে দলীয় সম্মেলনে অঙ্গনারী  চাকরি নিয়ে তার বেফাঁস  মন্তব্য  তার ক্লিন  ইমেজ  কে  অনেকটাই কলুষিত  করে ছিল l 
       সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের নেতৃত্বে পুরো জেলার সাথে সাথে কুমারগঞ্জ ব্লকেও ব্যাপক সাফল্য পায় শাসক শিবির l কুমারগঞ্জ এর সাধারণ মানুষজন আশায় বুক বাঁধছেন তাদের অপূর্ণ চাহিদাগুলো পূরণ হবে আগামী দিন গুলোতে l জেলা পরিষদের জয়ী প্রার্থী মফিজুদ্দিন মিয়ার ওপর মানুষের প্রত্যাশার পরিমান অপরিসীম l 


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

        উন্নয়নের নিরিখে যদি বিচার করা যায় তবে বিগত বাম আমলের চৌত্রিশ বছর কে বড্ডো ফিকে দেখায় তৃণমূলের মাত্র সাত বছরের উন্নয়নের তুলনায় l বর্তমান সরকারের আমলে কুমারগঞ্জ হলো একটি উন্নত জনপদ l কি নেই বর্তমানে এই ব্লকে l এক কথায় এক পরিপূর্ণ ব্লকে পরিণত হয়েছে কুমারগঞ্জ l এখন শুধু প্রয়োজন সুষ্ঠ ভাবে ও পরিকল্পিত উপায়ে কুমারগঞ্জের উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা গুলির বাস্তবায়ন l


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *