December 5, 2024

নীলকন্ঠ স্বর্গ আশ্রমের অনাথ শিশুদের জন্য কালিয়াগঞ্জের কন্যা সুদুর আমেরিকা থেকে হাত বাড়ালেন।

1 min read
জয়ন্ত বোস, বর্তমানের কথা বহুরূপে সম্মুখে তোমার, ছাড়ি কোথা খুঁজিছে ঈশ্বর ? জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর “। স্বামী বিবেকানন্দের নন্দিত এই চিরন্তন পঙক্তি দুটিই তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছে মানবসেবায় ব্রতী হতে। প্রতিষ্ঠা করেছেন ” নীলকন্ঠ স্বর্গ আশ্রম” নামে মানবকল্যাণময়ী অনাথালয় এক শিশু স্বর্গ ।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});



(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

 এই অনাথালয় অনাথ অসহায় শিশু কিশোরদের স্বপ্নের ঠিকানা। অনাথ আশ্রমের সাথেই সমাজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান একটি দাতব্য চিকিৎসালয়ও গড়ে তুলেছেন। সিক্ত হয়েছেন অসংখ্য মানুষের ভালোবাসায়। সদা হাস্যোজ্জ্বল বিশাল চিত্তের এই মানুষটির নাম রনজিত কুমার দত্ত।তার নিজের প্রচেষ্টায় নিজের হাতে গড়া এই অনাথ আশ্রম কে নিয়েই আজকের প্রতিবেদন। রনজিৎ কুমার দত্ত ৬২ বছরের একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক।বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহরে।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

 শিক্ষাকতা করতেন দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমন্ডি ব্লকের মহিপালের সন্নিকটে বাগডোলা এফ পি স্কুলে। শিক্ষক জীবনে অসংখ্য ছেলেমেয়েদের স্নেহ মমতায় শিক্ষা দানে শিক্ষিত করে তুলতে প্রাথমিক স্তরের ভূমিকা নিয়েছিলেন কিন্তু যে স্বপ্ন আশা,  ভালোবাসা, মায়া, মমতার টানে ও বিবেকানন্দের বাণীতে উদ্বুদ্ধ হয়ে সেই স্বপ্ন কে বাস্তবে রুপ দিয়েছিলেন ১৯৯৮ সালে নিজের খরচে নিজস্ব প্রচেষ্টায় অনাথ শিশুদের জন্য এই শিশু স্বর্গ টি গড়ে তুলে।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

 নিজের সামান্য বেতনের রোজগারে এই অনাথ আশ্রমের অনাথ শিশু কিশোরদের থাকা, খাওয়া, বস্ত্র ও পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছেন। এই ভাবনাকে বাস্তবে রুপ দিতে পেরে আজ তিনি অনাথ শিশু কিশোরদের পরম স্নেহময় পরমপিতা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি ব্লকের মহিপাল থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে মোনতাইল গ্রামে পাকা রাস্তার পাশে ৮৩ শতক জমির উপর গড়ে উঠেছে নীলকন্ঠ স্বর্গ আশ্রম নামে এই শিশু স্বর্গ।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

 এলাকার এক কৃষক ৭৫ বছরের কাইচালু সরকার এই আশ্রমের জন্য জমিটি দান করেন। পশ্চিমমুখী আশ্রমে ঢুকতেই চোখে পড়ে মৌসুমী ফুল ও ফলের গাছ।বাগান পেড়োলেই আশ্রমের প্রশস্ত আঙ্গিনা। আঙ্গিনায় অনাথ শিশু কিশোররা শরীরচর্চা ও খেলাধুলা করছে। ঘড়িতে তখন বিকেল ৪ টা। একদিকে টিনের চাল দেওয়া লম্বা একটি ঘড় যেখানে অনাথ শিশু কিশোররা থাকে। বর্তমানে সরকারি প্রচেষ্টায় কুশমন্ডি ব্লকের বিডিও অমূল্য চন্দ্র সরকার একটি পাকা ঘড় সহ পাকা শৌচাগার নির্মাণ করে দিয়েছেন। অনাথ শিশুদের কলরবে গমগম করছে শিশু স্বর্গটি। 


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

ওদের চোখে মুখে স্বপ্নের ঝিলিক। এই আনন্দিত নিষ্পাপ মুখগুলো দেখে কে বলবে ওদের কেউ নেই, ওরা অনাথ ? সবমিলিয়ে এই নিসর্গ মন্ডিত আশ্রমে এই পরিবেশে এসে এক বিশেষ খবর করার ক্লান্তি দূর হয়ে গেল।এক অনাবিল আনন্দে ভড়ে গেল মন। ৩০ জন শিশু কিশোর থাকে এই আশ্রমে ।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

 এদের মধ্যে ২৫ জন তফশিলী উপজাতি ও ৫ জন তফশিলী জাতির। মালদা, হরিরামপুর, দৌলতপুর ও স্থানীয় এলাকার হত দরিদ্র এই অনাথরা। ২ জন বয়স্কা মহিলা সহকারীনি ও রনজিত কুমার দত্তের জীবনের সাথে সুখ দুঃখ, হাঁসি কান্না, আনন্দ বেদনায় একাকার হয়ে আছে আশ্রিতদের জীবন। সাধ থাকলেও সাধ্যের সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক কিছুই করতে পারছেন না এই অনাথ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক রনজিত কুমার দত্ত। নিজের পেনশন ও মানুষের সাহায্য নিয়েই কোনরকমে চলছে এই অনাথ আশ্রম টি।

 আশ্রমের শিশু কিশোররা আশ্রমের  নিকটবর্তী বাগডোমা জুনিয়র স্কুলের চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র।যারা বর্ণভেদের শিকার, নিচু জাত বলে পরিত্যাক্ত- ওঁরা্ং, মাহাতু, বুনবাসাক, হাজং, মাডডি তাদের সার্বিক উন্নয়নে ও শিক্ষাদানে শিক্ষিত করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে মানুষের মতো মানুষ হয়ে – এক স্বপ্নময় চোখে বললেন আশ্রমের কর্নধার রনজিত কুমার দত্ত।

 এই প্রতিবেদনের প্রতিবেদক এক বিশেষ কারণে নীলকন্ঠ স্বর্গ আশ্রমের ইতিকথা তুলে ধরেছেন। গত ২৬ জুন কালিয়াগঞ্জের হরিহরপুর নিবাসী ধনকোল হাটের জমিদার স্বর্গীয় গোপেন কৃষ্ণ রায় চৌধুরীর সহধর্মিণী বিজলী রানী রায় চৌধুরী ইহলোক ত্যাগ করে স্বর্গলাভ করেন। স্বর্গীয়া চৌধুরী রানীর কনিষ্ঠ পুত্র গগন রায় চৌধুরীর কন্যা সুদুর আমেরিকার ওমাহার নবরাসকা প্রবাসী ইন্দ্রজা চ্যাটার্জী তার ঠাকুমার স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই অনাথ আশ্রমের শিশু কিশোরদের জন্য আন্তরিক টানে সামান্য সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});



(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

 তার এই আন্তরিক সহযোগিতা নিয়ে গগন রায় চৌধুরী পরিবার সহ পৌঁছে যায় এই প্রতিবেদনের প্রতিবেদক কে নিয়ে নীলকন্ঠ স্বর্গ আশ্রমে। হতদরিদ্র অনাথ শিশু কিশোরদের জন্য জামাপ্যান্ট, বয়স্ক পরিচারিকাদের শাড়ি এবং আশ্রমের কর্নধার তথা আশ্রমের পরমপিতার জন্য বস্ত্র বিতরণ করে সকলকেই মিস্টি মুখ করানোই ছিল প্রবাসী কন্যার সামান্য ইচ্ছা ও মনের বাসনা। নীলকন্ঠ স্বর্গ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক রনজিত কুমার দত্ত বলেন আগামী দিনে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা পেলে বর্তমানের আর্থিক পরিকাঠামোহীন , আর্থিক অনটনে চলা এই শিশু স্বর্গ টি একটি মন্দিরা লয়ে পরিনত হবেই এবং তার উপলব্ধি ” পূজা করে ঈশ্বরকে পেতে চান না, এই অনাথ শ্রেষ্ঠ জীবদের সেবাই তার পরম ধর্ম ” ।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *