ঘোর দুশ্চিন্তায় ৪০ লক্ষ মানুষ, পাঁচ পুরুষের বাসিন্দাও বাদ
1 min read
পাঁচ-ছয় পুরুষ ধরে আসামের বাসিন্দা, বৈধ কাগজপত্রও আছে। দুবারের বিধায়ক। এমনকি প্রথম খসড়া তালিকায় নাম ছিল। অথচ নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে তাঁর নাম। তিনি কাটিগড়া বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক তথা জমিয়ত উলেমা হিন্দের রাজ্য স্তরের নেতা আতাউর রহমান মাঝার ভুঁইয়া।
এন আর সি থেকে নাম বাদ পড়েছে হাইলাকান্দি জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক এফ আর লস্করের। নাম বাদ পড়েছে বরাক উপত্যকার স্বাধীনতা সংগ্রামী কাছাড় জেলার বাসিন্দা প্রয়াত প্রমোদ ভট্টাচার্যের পরিবারের সব সদস্যদের। আরেক স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রয়াত দীনেশ পুরকায়স্থের একমাত্র ছেলে আসাম রাইফেলসের উচ্চপদস্থ আধিকারিক দীপংকর পুরকায়স্থ ও তাঁর পরিবারের নাম বাদ পড়েছে। বরাক উপত্যকায় আই পি টি এ-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত নৃত্যশিল্পী মুকুন্দদাস ভট্টাচার্যের পরিবারের নাম এন আর সি তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আসাম বিধানসভার উপাধ্যক্ষের স্ত্রী অর্চনা পালের নাম তালিকায় নেই। এই রকম অজস্র উদাহরণ ক্রমশ সামনে আসছে আসামে। সোমবার এন আর সি তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ৪০ লক্ষ মানুষ। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে একই পরিবারের কারোর নাম আছে, কারোর নেই। মহিলাদের বাদ পড়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দরিদ্রতর অংশের মানুষের নাম বাদ পড়েছে বেশি। এন আর সি সেবা কেন্দ্রে কাগজপত্র নিয়ে দৌড়োদৌড়ি করা যাঁদের পক্ষে কঠিন ছিল, তাঁদের ছাঁটাই করা হয়েছে বেশি। অভিযোগ উঠেছে, এন আর সি প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্বের নির্দিষ্ট প্রতিফলন রয়েছে। উগ্র জাতীয়তাবাদী এবং বি জে পি সরকারের আমলে হিন্দুত্ববাদীরা এই পঞ্জি তৈরির প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছে। এন আর সি কর্তৃপক্ষ জেলাভিত্তিক সংখ্যা সরকারিভাবে না জানালেও প্রশাসনের রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট ধুবরি, বঙ্গাইগাঁও, কোকরাঝাড়, কাছাড়, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দিতে বাদ পড়ার সংখ্যা বেশি। গত ৩১ শে ডিসেম্বর প্রকাশিত আংশিক খসড়া তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত থাকলেও চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় নাম কেটে ফেলা হয়েছে অসংখ্য আবেদনকারীর। এদিকে বাদ পড়া ৪০ লক্ষ মানুষ কার্যত দিশাহারা। ফের আবেদনের জন্য তাঁদের বলা হলেও নতুন করে কী নথি দেবেন, বুঝতে পারছেন না। কারণ ভারতীয় হিসেবে ঘরে যে সমস্ত নথি ছিল, সবই আগে দেওয়া হয়েছে। চর অঞ্চলের যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের আর কোনও নথিই নেই। বন্যায় বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। সেসময় ঘরে থাকা সব নথি জলে ডুবে গেছে। এখন তাঁরা কী করবেন? পঞ্চায়েতের শংসাপত্র গ্রহণ না করায় প্রায় ২২/২৩ লক্ষ মহিলার নাম বাদ পড়েছে। এঁদের কাছে বিকল্প নথিও নেই। এসব প্রশ্ন নিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের দুশ্চিন্তা বাড়লেও বি জে পি সরকার এ বিষয়ে নির্বিকার। এন আর সি তালিকা ঘোষণাকে ঐতিহাসিক বলে সন্তুষ্টিতে ভুগছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});