October 24, 2024

কালিয়াগঞ্জের সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের নক্ষত্র শরদিন্দু দাশগুপ্ত(বাসুদা) র জীবনাবসান

1 min read
তপন চক্রবর্তী–উত্তর দিনাজপুর--কালিয়াগঞ্জ তথা উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রচার বিমুখ সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের নক্ষত্র শরদিন্দু দাশগুপ্ত(বাসুদা)আর আমাদের মধ্যে নেই।মঙ্গলবার কলকাতার এক বেসরকারি নার্সিং হোমে বিকাল ৫-৩৫মিনিটে সেপ্টিসেমিয়া রোগে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর তার মৃত্যু হয়।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী,এক পুত্র এক কন্যা ,জামাতা,পুত্ৰ বধূ নাতি নাতনি রেখে গেছেন।কালিয়াগঞ্জ শহরে বাসুদার মৃত্যুর খবর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬”টার দিকে  এলে শহরে শোকের ছায়া নেসিমে আসে।শরদিন্দু দাশগুপ্ত(বাসুদা)১৯৬২সালে কালিয়াগঞ্জ পার্বতী সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হয়েই ছাত্রদের কাছে সুনাম অর্জন করতে সমর্থ হয়।শিক্ষক হয়ে ছাত্রদের  কিভাবে আপন করে নিতে পারে তা বাসুদা দেখিয়েছেন।বাসুদা  শুধু শিক্ষকই ছিলেন না তিনি কালিয়াগঞ্জের সাহিত্য ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে  তার কাজের নিরিখে প্রতিষ্ঠা পান।
তিনি ছিলেন কালিয়াগঞ্জের অপরাজিতা নাট্য গোষ্ঠীর কর্নধার অন্যদিকে কালিয়াগঞ্জের ভ্রাম্যমান সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংস্থা প্রতীতির প্রাণ পুরুষ হয়ে সুদীর্ঘ৪২বছর ধরে সংস্থাটিকে পুত্রসম ভালো বেশে কালিয়াগঞ্জের সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে উজ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।  এই মানুষটি কোথায় ছিলেন না?কালিয়াগঞ্জে রামকৃষ্ণ সেবা শ্রম সমিতির সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন।কালিয়াগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম পরিচালিত বাণী তীর্থ শিশুদের বিদ্যালয়টির নামকরণ বাসুদাই করেছিলেন।বাসুদার বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রবন্ধ, কবিতা অনেক ক্ষেত্রেই কলকাতার নামী দামী লেখকদের থেকে কোন অংশেই কম নয়।
শুধু মাত্র প্রচার বিমুখ হবার ফলে মানুষটির ক্ষুরধার লেখনী সেভাবে প্রচারের ধার ধারেনি।কালিয়াগঞ্জের সংস্কৃতি সন্ধ্যা মানেই বাসুদার উপস্থিতি বিশেষভাবে সমাদর পেত।আর সেই আপাদমস্তক সাংস্কৃতিবান নিরহঙ্কার মানুষটির অভাব আমরা প্রতিনিয়ত অনুভব করবো।এই প্রতিবেদক বাসুদার ছাত্র হয়েও বাসুদার বন্ধু সুলভ ব্যবহার ও ভালোবাসা মনেই হতনা তিনি আমার শিক্ষাগুরু ছিলেন।এই ভাবেই তিনি শিক্ষক হয়েও বাসুদা হয়ে সবার হৃদয় জয় করে সবার হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছিলেন। শরদিন্দু দাশগুপ্তের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েই কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার চেয়ারম্যান কার্তিক পাল ছুটে যান তার কালিয়াগঞ্জ স্টেশন রোডের বাড়িতে।
শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে তার পরিবার পরি জনদের সমবেদনা জানান।রায়গঞ্জ থেকে আসেন করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শুভেন্দু মুখার্জী,কালিয়াগঞ্জ প্রতীতি সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংস্থার সদস্য করুণা চক্রবর্তী,অরুন দাস,তপন কুমার চক্রবর্তী,রাজকুমার জাজদিয়া,তৃণমূল যুব কংগ্রেসের অনির্বান চক্রবর্তী,নজমু নাট্য নিকেতনের সম্পাদক চন্দন চক্রবর্তী,প্রাক্তন পৌর পতি অরুন কুমার দে সরকার সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। শরদিন্দু দাশগুপ্তের মরদেহ কলকাতা থেকে বাড়িতে আসার পর সেখান তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য প্রচুর মানুষের ভীড় হয়।সেখান থেকে তার প্রাণের রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম এ নিয়েগেলে সবাই শ্রদ্ধা জানায়।ছিলেন সনৎ মুখার্জি,প্রাণকৃষ্ণ ভৌমিক সহ অনেকেই। পরবর্তীতে সেখান থেকে দীর্ঘদিনের কর্মক্ষেত্র পার্বতী সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হলে শিক্ষকগন তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানন। এর পর কালিয়াগঞ্জ শান্তি কলোনির মহা  শ্মশানে তাকে নিয়ে যাওয়া হলে তার শেষ কৃত্য সম্পন্ন হয় তার পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *