October 23, 2024

অসুস্থ মেয়েকে সুস্থ করতে পথে পথে ঘুরছেন বছর নব্বইয়ের আশালতা

1 min read
কমল কুমার বিশ্বাস ,বালুরঘাট,27 শে অক্টোবর:– অসুস্থ মেয়েকে সুস্থ করতে পথে পথে ঘুরছেন বছর নব্বইয়ের আশালতা l সাহিত্যের আশালতাকে মরিয়া প্রমান দিতে হয়েছিল সে মরেনাই ;  কিন্তু বাস্তবের আশালতাদের পরিণতি আরো করুন l 


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

 অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা হত দরিদ্র অশীতিপর মা l পাশে নেই কেও,হতাশাই একমাত্র সম্বল l
বছর চল্লিশের স্বামী পরিত্যক্তা   মেয়ের আশ্রয় এখন সহায় সম্বলহীন তার মা l মেয়েকে সুস্থ করে তোলার মরিয়া চেষ্টা নিয়ে পথে পথে ভিক্ষা বৃত্তি করছেন বৃদ্ধা l বৃদ্ধার করুন কাহিনী এইচ.ই.বেটস এর “দি অক্স ” গল্পের মিসেস  থাড়লো কেও অবলীলায় হার মানাবে l 
আশি পঁচাশি বছরের বৃদ্ধার হার না মানা করুন কাহিনী শুনলে যেকোনো মানুষের চোখে জল আসবেই l  গ্লোবালাইসেশান এর যুগে এক মুঠ খাওয়া জোগাড় করতে এই বৃদ্ধাকে রোজ পঁচিশ ত্রিশ কিলোমিটার পায়ে হাটতে হয় l এ লজ্জা কার ? বৃদ্ধার না এই সমাজের l উত্তর কিন্তু  বৃদ্ধার কাছে আজও অধরা l  বছর কুড়ি আগে সুধা দাসের বিয়ে হয় মালদার পাকুয়া আশ্রমপুরের দেবেন মন্ডলের সঙ্গে l দুটি সন্তানও হয় দম্পতির l স্বামী ,এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সুখে দুঃখেই দিন কাটছিলো তার l কিন্তু তার এই সুখ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি কালের পরিহাসে l হঠাৎ করেই সুধার  শরীরে অসাড়তা আসে ,শরীরের কিছু অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ফুলে ওঠে l সুধার  শরীরের এই সমস্যায় হঠাৎ করেই তার  মনের মানুষ এর (স্বামীর) তার প্রতি ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতায় আমূল পরিবর্তন ঘটায় l মেয়ের প্রতি এমন অবিচার চলতে থাকায় সুধার মা সুমতি দাস মালদার পাকুয়ায় জামাই বাড়ি থেকে চিকিৎসার জন্য মেয়েকে কুমারগঞ্জ ব্লকের রসুলপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন l কিন্তু তার পর থেকে বহুবার জামাই বাবাজীবনের সাথে যোগাযোগ করেও মেয়েকে তার স্বামীর বাড়ি পাঠাতে পারেন নি l দীর্ঘ নয় বছর ধরে কিঞ্চিৎ বিষয় আসয় যা ছিল সব শেষ করে বৃদ্ধা মা মরণপণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন মেয়েকে সুস্থ করে তোলার l কিন্তু কালের পরিহাসই বলুন বা অদৃষ্টের দোষ বৃদ্ধার সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে l স্বামী হারা বিধবা সহায়সম্বলহীন বৃদ্ধা এখন প্রথম পরীক্ষায় ফেল করে দ্বিতীয় পরীক্ষায় বসেছে l এই পরীক্ষার হার্ডেল আরো কঠিন পূর্বের পরীক্ষার তুলনায় l কি পরীক্ষার কথা বলতে চাইছি এতক্ষনে নিশ্চই বুঝে ফেলেছেন l এই পরীক্ষা হলো বাঁচার অন্তিম পরীক্ষা l বিধবা মা ও স্বামী পরিত্যক্তা বিকলাঙ্গপ্রায় মেয়ের বেঁচে থাকার এযেন এক অন্তিম পরীক্ষা l এক মুঠো অন্নের সংস্থান করতে গিয়ে রীতিমতো রোজ রোজ যেন একটি ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে নব্বই ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধা সুমতি দাস কে l কি শীত ,কি বর্ষা লড়তে তো তাকে হবেই l নইলে অসুস্থ মেয়ের মুখে অন্ন যে উঠবে না l সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়ে কোনো লাভ না পেয়ে সে রাস্তা মাড়ানো তিনি বন্ধ করে দিয়েছেন l কারণ হিসেবে তিনি বলেন ওই আপিস এ যাবার বদলে দশ বাড়ি ঘুরলে কয়েক মুঠো চাল তো জুটবে l  বৃদ্ধার কাতর আকুতি তাকে ও তার মেয়েকে এক মুঠো ভাতের ব্যবস্থার l অশ্রুসিক্ত চোখে তিনি জানান আমি মারা গেলে আমার মেয়ের মুখে ভাত টুকুও তো বন্ধ হয়ে যাবে l তাই মরতেও আমার মানা l এপ্রসঙ্গে স্থানীয় সমঝিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান জৈনুর বিবি জানান ,বৃদ্ধার অবস্থা খুবই করুন l তার বাঁচার জন্য খাদ্য ও একটি ঘর ভীষণ প্রয়োজন l সোমবার ব্লক অফিসে খুললে সব ঘটনা জানিয়ে তার একটা ব্যবস্থা করার জন্য আমি সচেষ্ট হবো l স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য হোচিমিন সরকার জানান,আমি ঘটনা জানা মাত্রই এক হাজার টাকা ও কিছু খাদ্যের ব্যবস্থা করেছি ব্যক্তিগত ভাবে l আগামী সোম বার উনার মেয়ের চিকিৎসা ও বৃদ্ধা ও তার মেয়ের সরকারি সাহায্যের ব্যাপারে ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের সাথে কথা বলবো l


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *