October 28, 2024

কালিয়াগঞ্জ এর বিজেপির বিধায়ক দল ছাড়তেই মুখ ভার বিজেপির নেতা কর্মী দের

1 min read

কালিয়াগঞ্জ এর  বিজেপির  বিধায়ক দল ছাড়তেই মুখ ভার বিজেপির নেতা কর্মী দের

তনময় চক্রবর্তী উত্তর দিনাজপুর  কালিয়াগঞ্জ এর  বিজেপির  বিধায়ক দল ছাড়তেই মুখ ভার বিজেপির নেতা কর্মী দের।অবস্থা সামাল দিতে কালিয়াগঞ্জ এ শুরু হয়েছে বিজেপির অভ্যন্তরে দফায় দফায় বৈঠক।অনেকে আবার স্থানীয় বিজেপির নেতৃত্বের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে বিজেপির মিটিংয়ে ও আসছেন না।অন্য দিকে বিজেপির নেতৃত্ব ও আবার এই অবস্থা সামাল দেবার মিটিংয়ে অনেক বিজেপি নেতাদের ও ডাকছেন না। স্বভাবত বেসমাল  হয়ে   পড়েছে বর্তমানে কালিয়াগঞ্জে বিজেপি নেতৃত্ব। উল্লেখ্য গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই কালিয়াগঞ্জে বিজেপির মধ্যে নব্য বনাম পুরাতন বিজেপি নেতৃত্ব দের মধ্যে একটা ঠান্ডা লড়াই চলছিল। একে অপরের সঙ্গে এতটাই দূরত্ব তৈরি করে ফেলেছেন যা কিনা আর সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না। যার বহিঃপ্রকাশ সম্প্রতি ঘটে গেল কালিয়াগঞ্জ এর বিজেপির বিধায়ক সৌমেন রায় এর দল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। এদিকে সৌমেন রায় দল পরিবর্তন করায় কালিয়াগঞ্জ এর বেশকিছু বিজেপি নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ  হয়েছেন স্থানীয় টাউন  মন্ডলের সভাপতি উপর। বিক্ষুব্ধরা জানান, বিধানসভা নির্বাচনের পরে কালিয়াগঞ্জ এর সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি করা যেত যদি একসঙ্গে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা যেত।

কিন্তু তা না করে বিধায়ক এর সঙ্গে কোনো সমন্বয় রাখত না  কালিয়াগঞ্জ  বিজেপি শহর মন্ডল কমিটি।ফলে দেখা যেত একদিকে যেমন বিজেপির বিধায়ক থাকাকালীন  সৌমেন বাবুকে তার বিধানসভা কেন্দ্রে যখন তিনি আসতেন তখন আলাদা কর্মসূচি নিয়ে কাজ করতে ।অন্যদিকে বিজেপি শহর মন্ডল কমিটিকে দেখা যেত বিধায়কের সঙ্গে কোন যোগাযোগ না রেখে আলাদা কর্মসূচি নিতে দলীয় ভাবে ।এমন টা দীর্ঘ দিন ধরে চলছিল।কালিয়াগঞ্জ এর বিজেপি নেতাদের মধ্যে অনেকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী করেন বিজেপির শহর মন্ডল কমিটিকে।তাদের খামখেয়ালিপনার জন্য আজ বিজেপি কে হারাতে হল তাদের বিধায়ক কে। অথচ বিধায়ক এর সাথে সমন্বয় রেখে যদি কাজ করত শহর বিজেপি মন্ডল কমিটি তাহলে আখেরে লাভবান  হতো কালিয়াগঞ্জ এ বিজেপির সংঘটন।

কিন্তু সেটা না করে কোন এক অজ্ঞাত কারনে বিধানসভা জয়ের পর থেকে  বিধায়কের সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই করতে গিয়ে অনেকটা আত্মসমর্পণ করতে হলো পৌর নির্বাচনের আগে কালিয়াগঞ্জ এর বিজেপিকে তৃণমূলের কাছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা বলেন , কালিয়াগঞ্জে যদি এমন নেতৃত্ব আগামী দিনেও দল  সামলান তাহলে শহরে বিজেপির ঘরে প্রদীপ জ্বালানোর মত কর্মী সমর্থক পাওয়া যাবে না। অথচ বিজেপি নেতৃত্ব যদি সঠিক উপায়ে দল পরিচালনা করত তাহলে আগামী দিনে কালিয়াগঞ্জে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে একটা শক্ত চ্যালেঞ্জ এর উপর দাঁড় করিয়ে দিতে পারত। কিন্তু এখন বিধায়ক দল পরিবর্তন করার পর দলের কর্মীদের মধ্যে এতটাই মনোবল ভেঙে গিয়েছে যে আগামীতে তারা বিজেপি করবেন কিনা সে বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করতে শুরু করে দিয়েছে। অনেকে আবার ইতিমধ্যেই  এক পা বাড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের কাছে।

বিক্ষুব্ধ বিজেপির  কর্মীরা বলেন ,বিধায়ক কে সামনে রেখে বিজেপি কালিয়াগঞ্জ এ অনেক কিছু করতে পারতেন।কিন্তু স্থানীয় নেতৃত্তের উদাসীনতায় আজ কালিয়াগঞ্জে বিজেপির অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে আগামী দিনে কোন  বিজেপি  দলীয় কোন কর্মসূচি নিলে সেখানে  কত জন উপস্থিত হবে সে নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিজেপি নেতা বলেন দলীয় বিধায়ক তাদের দল যখন ছাড়লেন তখন যখন তাদের মন খারাপ ,সেই  সময় তিনি শুনতে  পেরেছেন  কালিয়াগঞ্জ  বিজেপি টাউন মন্ডল সভাপতি ভবানী চরণ সিংহ নাকি  দলীয় অফিসের সামনে তার মনপুত কয়েকজন বিজেপি নেতা ও সমর্থক দের ডেকে মিষ্টি মুখ ও করিয়েছেন আনন্দে।

এর চেয়ে লজ্জা আর কিছু হতে পারে না। অবিলম্বে শহর  মন্ডল সভাপতি ভবানী চরণ সিংহ এর পদত্যাগ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। বিক্ষুব্ধ এই বিজেপি নেতা বলেন এখন  আবার শহর মন্ডল সভাপতি  শুরু করেছেন কে কে  আছে  বিধায়কের আপন  লোক এখন বিজেপির মধ্যে।এবার সেই  সমস্ত নেতাদের তিনি দল থেকে তাড়ানোর জন্য উঠে পড়ে লেগে গেছেন।প্রথম পর্যায়ে সেই নেতাকে এখন দলের সোশ্যাল মিডিয়ার দলীয়  গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে ।

এর পর তাদের নাকি পাকাপাকি ভাবে দল থেকে বের করে দেওয়া হবে বলে জানা যায়। বিক্ষুব্ধ কয়েকজন নেতা বলেন কালিয়াগঞ্জে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে সেখানে শুধুমাত্র টাউন মন্ডল সভাপতি ছাড়া আর কেউই বিজেপিতে  থাকতে পারবে না।আসন্ন  পৌরসভা নির্বাচন কে সামনে রেখে যখন তৃণমূল কংগ্রেস তাদের ভোটে জেতার জন্য নানান ধরনের কৌসুলি  ছক  করে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নানান ধরনের দলীয় কর্মসূচি করে চলছে সেই সময় দেখা যাচ্ছে বিজেপির  নেতাদের  চুপ  হয়ে বাড়িতে বসে থাকতে । অনেকে আবার কী  কারনে কলকাতায়  গেছেন কিছু বোঝা  যাছে   না ।

 

এখানে  নেই কোন দলের  কর্মসূচি।ফলে বিভিন্ন ওয়ার্ডে হতাশ হয়ে পড়েছে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা।বিজেপির কালিয়াগঞ্জ এর কিছু বিক্ষুব্ধ নেতারা আরো বলেন কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচনে যখন প্রথমবার বিজেপির বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছে তখন সৌজন্যের খাতিরে কালিয়াগঞ্জ বিজেপি শহর মন্ডলের নেতাদের উচিত ছিল বিধায়ককে সম্বর্ধনা  দেওয়া।কিন্তু বিধায়ক যেদিন দল ছাড়লেন তার আগের দিন  অবধি তাকে  দেয়া হয়নি কোন সম্বর্ধনা।এটা বিধায়কের কাছে চরম অপমান ছাড়া আর কিছু নয়।

কিছু বিক্ষুব্ধ নেতা বলেন, কতিপয় কিছু নেতাদের ডেকে এনে মাঝে মাঝে দলীয় কার্যালয়ে মিটিং করেন টাউন মন্ডল সভাপতি।কিন্তু সেই মিটিং এও ডাক পান না তারা।এই ভাবে দল চলতে পারে না। অবিলম্বে বিজেপি  টাউন মন্ডলের সভাপতির  পদত্যাগ না করলে আগামী দিনে কালিয়াগঞ্জ থেকে বিজেপি কে খুজে পাওয়া যাবে  না । এদিকে  কালিয়াগঞ্জ এর  বিজেপি  বিধায়ক  সৌমেন রায়  দল ছাড়ার পর মন্তব্য করেছেন, বিজেপিতে কোন কাজের পরিবেশ নেই।এখানে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না ।

এখন নিজেকে অনেক গর্ব  মনে হচ্ছে ।কারন যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষের জন্য যে ভাবে কাজ করে যাচ্ছে তাতে তিনি খুব ই অনুপ্রাণিত।আগামী দিনে তিনিও  চান  মুখ্যমন্ত্রী আশীর্বাদ নিয়ে কালিয়াগঞ্জ শহরের উন্নয়ন গতিতে সুপার এক্সপ্রেস এর গতিতে  বাড়িয়ে দিতে।অন্য দিকে বিধায়কের দেখা দেখি অনেক কালিয়াগঞ্জ এর বিজেপি নেতারা এখন দল ছাড়ার চিন্তা ভাবনা করছেন।এর মধ্যে অনেকেই কলকাতা গিয়ে বসে রয়েছেন তৃণমূলে যাওয়ার জন্য।

 

অনেকে আবার  কালিয়াগঞ্জে  বসে রয়েছেন নতুন জামা কাপড় পড়ে  রেডি হয়ে  তৃণমূলে যাওয়ার জন্য।এখন শুধু মাত্র  সময়ের  অপেক্ষা।এদিকে কালিয়াগঞ্জ এর বিজেপি নেতা কমল সরকার বলেন  বিধায়ক চলে যাওয়ায় আমাদের মন খারাপ।

আমরা খুব ই দুঃখিত।তবে দল এই ধাক্কা সামাল  দিয়ে উঠবে খুব শীগ্রই।তিনি বলেন দলে কোন গোষ্ঠী কোন্দল নেই। যেটা বাজারের রটেছে  সেটা অপপ্রচার মাত্র। আগামী পৌরসভা নির্বাচনে তারা পুরো টিম নিয়ে মাঠে খেলতে নামবে শাসকদলের বিরুদ্ধে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *