October 24, 2024

মাকর হাটের সম্প্রীতির মেলার সুবাদে আপনজনের সাথে চোখের দেখাতে তারকাটা কোন বাধা নয়

1 min read
সুতীর্থ দেব  ও তন্ময় দাস , রায়গঞ্জ আবার ৪৭এর  দেশ ভাগের যন্ত্রণার কথা  মনে পরে গেল ৮০ বছরের বেলমতি  বর্মনের। তিনি আজ সকালে এসেছেন হেমতাবাদের মাকর হাটে মিলন মেলাতে। পাঁচ ঘন্টা পরে তিনি অবশেষে খুঁজে পান ছোট ছেলে রবিনকে।  তারকাটার ফাঁক  দিয়ে দেখা ও কথা বলা। তারপরই সময় শেষ। কান্নায় ভেঙে পরলেন বেলমতি বর্মন। ছেলে রবিন ও চোখের জল আটকাতে পারল না।শুক্রবার  হেমতাবাদের মালন হাট থেকে বিন্দল সীমান্ত পর্যন্ত এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে এই মিলন মেলা। সকাল ১০টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত চলে এই মেলা।জানা গেল ২০০২ সাল  থেকে শুরু হয়েছে এই মেলা। তবে এই মেলা জমে বেশি চৈনগরের মাকর হাটে।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

 সীমান্ত বরাবর  ১০ কিমি ধরে চলছে মেলা। এপার বাংলা ও ওপার বাংলার মানুষ যারা মেলায় এসেছেন তাদের প্রত্যেকের চোখ তারকাটার ওপারে নিজের আত্মীয় স্বজনের দিকে। কেউ বা খুঁজে  পান কেউ বা পান না তাদের আত্মীয়দের। যখনই পাচ্ছেন নিজের লোকদের তখনই শুরু হয় কান্না। এপার ওপারের স্বজনহারাদের কান্নায় ভিজে গেল মিলন মেলার মাটি।লোকে লোকারণ্য। চারিদিকে মানুষের ঢ্ল। যেদিকে চোখ যায় শুধু মানুষের মাথা। দুপারেই বসেছে দোকান। ফলমুল, বিড়ি সিগারেট কিনে আত্মীয়রা স্বজনদের জন্য ছুড়ে দিচ্ছেন ওপারে। 


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

ওপার থেকেও   অনেক কিছু ছুড়ে দিচ্ছেন।  বিন্দোলের সোনালী রায় এবারে ২০০ শাড়ি নিয়ে এসেছিল বেচতে। ভীড় বেশি তাই এবার সব শাড়ি বিক্রি হয়ে গেছে। আত্মীয়রা স্বজনদের খোঁজ পেলেই স্মৃতি উপহার দিচ্ছে শাড়ি দিয়ে। মালদা, কালিয়াচক, হরিশ্চন্দ্রপুর, রায়গঞ্জ,হেমতাবাদ,বিন্দোল, দুরমনপুর,ইত্যাদি জায়গা  থেকে অনেকেই এসেছেন। ওপারের দিনাজপুর, বিরল, মাধববাটি, ছোট তিলাইন,পিরগঞ্জ, অনন্তপুর,মধুপুর ইত্যাদি জায়গা থেকে হাজার হাজার মানুষ ছুটে এসেছেন স্বজনদের একবার চোখের দেখা দেখতে।
 মুলত মিলন মেলায় মুসলমান সমাজের মানুষ, রাজবংশী ও সাঁওতাল সমাজের মানুষ বেশি এসেছিলেন। হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে  মেলায় আসা নাসিরুদ্দিন সরকার বলেন পাখিদের থেকেও আমরা অধম। ওদের জন্য তারকাটা নেই। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের জন্য তারকাটা। মানুষের আবেগ কি আর তারকাটার বেরা দিয়ে আটকানো যায়? বিশ্ব ভাতৃত্ব গড়ে উঠবে কি তারকাটার বেড়া দিয়ে? আক্ষেপ করে বললেন ৭৮ বছরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ভুবন সরকার।আধুনিক যুগে ফোন, হোয়াটস আপ ও ফেসবুকের যুগেও হাজার হাজার মানুষ তার আত্মীয়দের  একটু সামনাসামনি  দেখার জন্য মেলায় এসে এই মেলার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বাড়িয়ে দিয়ে গেলেন।


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *