বৈশাখীর সঙ্গে শোভনের রোড শো দেখে কি আপ্লুত বিজেপি
1 min readবৈশাখীর সঙ্গে শোভনের রোড শো দেখে কি আপ্লুত বিজেপি
‘তোমাকে দেখছি কুঁদঘাটগামী বাসে, তোমাকে দেখছি গড়িয়ার দিকে গেলে, ঢাকুরিয়া ভেবে সেলিমপুরেই নামি, আসলে কিন্তু তোমাকেই দেখে ফেলে…..’ লিখেছিলেন কবীর সুমন। গেয়েওছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় সেই সেলিমপুরেই বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে সওয়াল করলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। যেন বৈশাখীর সঙ্গে ‘অবিচারের’ জবাব দিতেই বিবাগী হয়েছিলেন তিনি, যেন বৈশাখীর রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠালাভেই রাজনীতিতে তাঁর মোক্ষলাভ! এ দুর্লভ বইকি। আর ম্যাচিং ম্যাচিং ছিল না! শোভন পরেছিলেন সাদা পাঞ্চাবির উপর নীল হাফ স্লিভ জ্যাকেট। বৈশাখীর সাজ যেমন হয়… জরি পাড়ের শাড়ি গলায় সোনার হার।
এ সাজে ম্যাটাডোরে চড়ে রাজনৈতিক রোড শো-ও কলকাতায় অভিনব। তা কী বললেন শোভন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তির্যক বাছা বাছা কিছু কথা বলেন একদা দিদির ‘কানন’। সেলিমপুরের মঞ্চে দাঁড়িয়ে শোভনবাবু বলেন, তাঁদের বন্ধুত্ব নিয়ে যখন কেউ বিকৃত মন্তব্য করে তখন কষ্ট হয়। ‘আমরা ব্র্যান্ড নই, বন্ধু।’অনেকে বলছেন, এ যেন রোম্যান্টিক সিনেমার ক্লাইমেক্স। শোভনবাবুর যখন এ সব বলছিলেন তখন দেখা যায় হাততালির সঙ্গে দু’চারটে শিশের শব্দও ভেসে আসছে। এদিন তিনি বলেন, ‘আইনি কাজে বৈশাখী আমাকে সাহায্য করতেন। আমি অনুমতি নিয়েই করেছিলাম।’ তাঁর ক্ষোভ, তারপরেও তাঁকে বিকৃত আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। শুধুমাত্র তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের কারণেই ২০১৮-র মার্চে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপা থেকে সরানো হয়েছিল। এরপর ধাপে ধাপে দিদির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান শোভন। বলেন, পঞ্চায়েতে ভোট হয়নি, বাংলায় তৃণমূলকে সমূলে উত্পাটিত করতে হবে, কেন্দ্রের প্রকল্প বাংলায় অন্য নামে নিজের বলে চালিয়ে দিচ্ছেন মমতা ইত্যাদি প্রভৃতি। তৃণমূলের একাংশ যখন বলতে শুরু করেছে এঁরা সবাই বেইমান, মীরজাফর। আসলে এঁদের কিছুই নেই, সবাই মমতার আলোয় আলোকিত, তখন শোভন এদিন বোঝাতে চান, এসব বলার আগে যেন দুবার ভাবেন তৃণমূলের নেতারা। কারণ তাঁদের লড়াইয়ের জন্যই মুখ্যমন্ত্রী হয়ে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে পৌঁছেছিলেন মমতা। জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছিলেন সিপিএমের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তুলে বলেন, কে লালা? কেন গরু, কয়লা পাচারে শুধু তৃণমূলেরই নাম জড়াচ্ছে?তবে অনেকেই মনে করছেন, জনতার মুখরিত সখ্যকে যেন বৈশাখীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের সিলমোহর হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলেন শোভন। যা নিয়ে বিরক্ত বিজেপির নেতারা। অনেকে বলছেন, দলের জনসভাকে নিজেদের গণস্বীকৃতি পাওয়ার মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন শোভন-বৈশাখী।