৯৫ বছরের বৃদ্ধা কাঞ্চবালা মানবিক সহৃদয়ের ছোঁয়ায় আপাতত প্রানে বাঁচলেন।
1 min read৯৫ বছরের বৃদ্ধা কাঞ্চবালা মানবিক সহৃদয়ের ছোঁয়ায় আপাতত প্রানে বাঁচলেন।
১৮ ডিসেম্বর, শুক্রবার। জয়ন্ত বোস,তনময় চক্রবর্তীকালিয়াগঞ্জ,উঃ দিনাজপুর।এই ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে সাতসকালে এক কঠিন মর্মস্পর্শী নিদারুণ দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে রইলো উঃ দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ বিডিও অফিসের পাশে হাসপাতাল পাড়ায় ত্রিধারা ক্লাবের সামনে। ৯৫ বছরের ক্রাচে ভর করে কুঁজো হয়ে কোনরকমে হেঁটে চলা এক হতদরিদ্র হতভাগিনী মা কাঞ্চবালা থরথর করে কেঁপেই চলেছেন আর বসে বসে অঝোড়ে কাঁদছেন। কি যে মর্মান্তিক দৃশ্য চোখে না দেখলে কারো বিশ্বাস হবে না।
এমনি পরিস্থিতিতে মানবিক হৃদয়ের হাতের স্পর্শ পেল অসহায় বৃদ্ধা মা কাঞ্চবালা। কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি তথা ঐ এলাকার বাসিন্দা মানবিক হৃদয়ের যুবক বিভাস সাহা কয়েকজনকে সাথে করে এগিয়ে এসে বৃদ্ধা কাঞ্চবালার পাশে দাঁড়ালেন এবং তৎক্ষণাৎ টোটো করে তাঁকে উঠিয়ে, কম্বল গায়ে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসক কে দেখিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এই মুহূর্তে বৃদ্ধার অস্থায়ী ঠিকানা কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের বেডে। সমাজসেবী বিভাস সাহা সাথীদের নিয়ে বৃদ্ধা কে হাসপাতালে ভর্তি করে এক মানবিক দ্বায়িত্ব শেষ করেন নি, তারপরেও দুইবেলা বৃদ্ধার খোঁজখবর নেওয়া ও বৃদ্ধার খাওয়ার ব্যবস্থাও করেছে। ৯৫ বছরের বৃদ্ধা কাঞ্চবালা উঃ দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ২ নং ধনকৈল গ্রাম পঞ্চায়েত অধীন মধ্য দূর্গাপুরের বাসিন্দা।
তাঁর তিন পুত্র সন্তান, তাদের বৌ বাচ্চা সহ সংসারে এই বৃদ্ধার ঠায় নেই। কুঁজো হয়ে কোনোরকমে ক্রাচে ভর করে ভিক্ষাবৃত্তি করেই নিজের মুখের খাওয়ার টুকু জোগাড় করে চলেছেন কিন্তু নিজের পেটের সন্তানরা হতভাগিনী মা কে সেবাযত্ন করা দূরে থাক এই ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। এমনকি তাঁর পুত্র বধুরা এই বৃদ্ধার গায়ে জল ছিটিয়ে তাকে ভিজিয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে দূর দূর করে বের করে দিয়েছেন। অঝোড়ে কাঁদতে কাঁদতে এবং কাঁপতে কাঁপতে বৃদ্ধা অসহায় কাঞ্চবালা বলছিলেন। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত কিংবা পঞ্চায়েত সমিতি এমনকি এলাকার কোনো সহৃদয় ব্যক্তিদের কেউ ৯৫ বছরের অসহায় বৃদ্ধার পাশে এসে দাঁড়ান নি এবং সন্তান ও পুত্রবধূ দের দ্বারা দিনের পর দিন এই অসহায় বৃদ্ধা মা এর উপর অমানবিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন কিনা সন্দেহ। যদি সকলেই এসে এই বৃদ্ধার পাশে দাঁড়াতেন তাহলে কাঞ্চবালা কে এই কঠিন অসহায় পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হতো না। কাঞ্চবালার পাশে এসে মানবিক সহৃদয় সন্তান বিভাস সাহা তার সাথীদের যদি দেখা না যেত তাহলে এই সমাজ এক অসহায় বৃদ্ধা মাকে হারাতো। না, হারিয়ে যেতে দেয় নি বিভাস সাহারা। নিজের পেটের সন্তানদের কাছে যখন কাঞ্চবালার জন্য এক মুঠো অন্ন হয় না, মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় না, শুধু লাঞ্ছিত হতে হয় , অত্যাচারের শিকার হতে হয় ঠিক সেই সময় পরম প্রেমময় ঈশ্বর বিভাস সাহাদের পাঠিয়েছে কাঞ্চবালার পাশে এক হৃদয়স্পর্শী মানবিকতায়। আজকের এই প্রতিবেদনে সর্বস্তরের মানুষের কাছে , বিভিন্ন প্রশাসনের কাছে ৯৫ বছরের অসহায় বৃদ্ধা কাঞ্চবালার নিদারুণ কষ্টের ও দুঃখের পাশে এসে দাঁড়ানোর অনুরোধে এই প্রতিবেদন টি প্রকাশিত করা হলো। সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতায় এবং প্রচেষ্টায় ৯৫ বছরের অসহায় হতভাগিনী বৃদ্ধা মা কাঞ্চবালা এই পৃথিবীর বুকে সকলের মাঝে বেঁচে থাকুন এবং এই সমাজে সহৃদয় মানবিক বিভাস সাহার মতো অজস্র সন্তানদের মর্মস্পর্শী আন্তরিকতার সহযোগিতায় এমন অসহায় বৃদ্ধা মাদের মুখে একটু হাসি ও সুখ প্রস্ফুটিত হয়ে উঠুক এটাই সকলের কাম্য। বেঁচে থাকুক অসহায় কাঞ্চবালা।