October 28, 2024

তৃণমূলের ক্ষমতায় উত্থানের অন্যতম কারিগর শুভেন্দু অধিকারী

1 min read

তৃণমূলের ক্ষমতায় উত্থানের অন্যতম কারিগর শুভেন্দু অধিকারী

নন্দীগ্রাম তৃণমূলের ক্ষমতায় উত্থানের অন্যতম ভিত্তিভূমি। শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক জীবনের টার্নিং পয়েন্টও সেই নন্দীগ্রাম। পূর্ব মেদিনীপুরে অধিকারী পরিবারের দাপট সন্দেহাতীত। আর নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর একাধিপত্য নিয়েও কারোর মনে কোনও সন্দেহ নেই।পঞ্চাশের কোঠায় বয়স। অকৃতদার। ধ্যান-জ্ঞান-পরিবার বলতে একটাই, রাজনীতি। কথায় বার্তায় এখনও মেঠো ছাপ, কিন্তু, তাঁর নাম অনেকদিন আগেই পৌঁছে গেছে দিল্লির অলিন্দেও।দিল্লির বহু তাবড় নেতার মুখেও, এখন শুভেন্দুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা।

আর হবেই বা না কেন, পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিতে গত ৩ দশক ধরে অধিকারী পরিবারের রমরমা সন্দেহাতীত।আর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পর শুভেন্দু কার্যত হয়ে ওঠেন বঙ্গ রাজনীতির অরণ্যদেব! তাঁকে ঘিরে নানা গল্প, নানা মিথ।আটের দশকের শেষপর্বে কাঁথির প্রভাতকুমার কলেজে ছাত্র রাজনীতিতে হাতেখড়ি শুভেন্দুর। কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদের হয়ে শুভেন্দুর রাজনৈতিক জীবনের শুরু।১৯৯৫ সালে কাঁথি পুরসভা ভোটে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে কাউন্সিলর হন শুভেন্দু। ২০০১ সালে মুগবেড়িয়া বিধানসভা কেন্দ্রে শুভেন্দুকে প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।কিন্তু, তিনি তৎকালীন মৎস্যমন্ত্রী কিরণময় নন্দের কাছে হেরে যান। ২০০৪ সালের লোকসভা ভোটে তমলুক কেন্দ্রে সিপিএম লক্ষ্মণ শেঠের কাছে পরাজিত হন শুভেন্দু।২০০৬ সালের বিধানসভা ভোটে দক্ষিণ কাঁথি কেন্দ্র থেকে প্রথমবার জিতে বিধায়ক হন শুভেন্দু অধিকারী। ২০০৬ সালের বিধানসভা ভোটে দক্ষিণ কাঁথি কেন্দ্রটি মেজ ছেলেকে ছেড়ে দিয়ে শিশির এগরায় প্রার্থী হন। জেতেন দু’জনেই। প্রথম বার বিধায়ক হন শুভেন্দু।২০০৭ সালের নন্দীগ্রাম আন্দোলন শুভেন্দুর জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠে অধিকারী পরিবারের মেজ ছেলে! গোটা রাজ্য তাঁর নাম জানতে শুরু করে।তৃণমূল ক্ষমতায় আসার ৩ বছর আগে ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রথমবার কোনও জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল। আর সেটা ছিল শুভেন্দুর গড় পূর্ব মেদিনীপুর।এরইসঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনাও দখল করে তৃণমূল। সেখানেও প্রচার করেছিলেন শুভেন্দু। ২০০৮ সালেই মদন মিত্রকে সরিয়ে শুভেন্দুকে যুব তৃণমূলের সভাপতি করেন মমতা।২০০৯-এর লোকসভা ভোটে তমলুকে লক্ষ্মণ শেঠকে হারিয়ে প্রথম বার সাংসদ হন শুভেন্দু। তার আগে ২০০৬ সালে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান পদে বাবার জায়গায় বসেন শুভেন্দু।২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ফের পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি তমলুক কেন্দ্রে জেতেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু, তাঁকে যুব তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে সৌমিত্র খাঁকে বসানো হয়। যে সৌমিত্র খাঁ এখন বিজেপি সাংসদ।সেইসময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ‘যুবা’ নামে একটি সংগঠন তৈরি হয়েছে। সেই প্রথম দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি শুভেন্দুর ক্ষোভের খবর প্রথম সামনে আসে।২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে জয়ী হন শুভেন্দু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় পরিবহণমন্ত্রী করা হয় তাঁকে।২০১৯-এর লোকসভা ভোটে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় তৃণমূলের ফল ভাল না হওয়ায় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে শুভেন্দুকে সরানো হয়।২০২০-র অগস্টে তৃণমূলের রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠনের দায়িত্ব থেকে সরানো হয় শুভেন্দুকে। দলীয় পর্যবেক্ষকের পদটাই তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তখন একাধিক জেলার দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের দূরত্ব তৈরির জল্পনা জোরাল হয়। অবশেষে শুভেন্দু মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেন।রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, শুভেন্দুর ভবিষ্যত পদক্ষেপের ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করছে বিধানসভা ভোটের সমীকরণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *