October 28, 2024

দেশীয় ধানের সংরক্ষন ও প্রজনন বিদ্যার দ্বারা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ, সাফল্য ও আশা–অধ্যাপক সুভাষ চন্দ্র রায়-উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ-উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

1 min read

দেশীয় ধানের সংরক্ষন ও প্রজনন বিদ্যার দ্বারা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ, সাফল্য ও আশা–অধ্যাপক সুভাষ চন্দ্র রায়-উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ-উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

দেশি ধানের প্রকার ভেদ–পশ্চিমবঙ্গে প্রায় সাড়ে চার হাজার রকমের দেশি ধান রয়েছে।উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে পঁয়ষট্টি রকমের দেশি ধান

সংরক্ষন করা আছে তুলাইপঞ্জি,কালোনুনিয়া,কাকামিনিসাল,বেগুনবিজ,কাটাকাটারীরভোগ,গোবিন্দভোগ,বাদশাভোগ, কামিনী,পারিজাত,বিল্লি,দুধ রাজ,রূপসাল,আউশধান, বাসমতি,লালমিহি,কেমা,মোহনভোগ,জোশুয়া,সাদানুনিয়া,কালোভাত,বুনধান বা জংলী ধান যেগুলিকে প্রজনন বিদ্যার কাজে লাগানো হচ্ছে,উচ্চফলনশীল,উন্নতমানের ধান উৎপাদনের জন্য। তাৎপর্য–বিভিন্ন প্রকার দেশীয় ধানে বিভিন্ন ধরনের জিনগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট পাওয়া যায়।যেমন কেউ বন্যা প্রতিরোধকারী,কেও খরা সহনশীলতা হতে পারে,কেও বা রোগ পোকার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম,কেও জলদি পেকে যায়।দেশীয় ধানে পুষ্টিগুণেরও প্রকার ভেদ আছে।যেমন কালোভাত(ব্ল্যাক রাইস)প্রচুর পরিমানে আন্টি এক্সিডেন্ট থাকে।লাল চালে রেড রাইস) বেশি পরিমাণ জিঙ্ক ও আয়রন পাওয়া যায়, এ ছাড়া সুগন্ধি চাল পুষ্টিতে ভরপুর থাকে।

উদ্দেশ্য–সেজন্য দেশি ধান গুলিকে বাঁচিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরী,যাতে জিনগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি হারিয়ে না যায়।এমনিতেই অনেক দেশি ধান বিলুপ্ত হয়ে গেছে চাষিদের খেত থেকে। দেশীয় ধানের বিশেষ বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুলিকে যা লাভজনক ও দরকারি-সেগুলিকে প্রজনন বিদ্যার মাধ্যমে (ব্রিডিং)ব্যবহার করে উন্নত মানেরউচ্চ ফলনশীল ধান উৎপাদন করতে জে আসবে।সংরক্ষনের পদ্বতি–দেশি ধান গুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে সব থেকে সহজ পদ্বতি প্রয়োগ করে। যেমন চাসবাদ করে সংরক্ষনের ব্যবস্থা করা।লক্ষ-খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষার জন্য দেশি ধানের সংরক্ষন এবং প্রজনন বিদ্যার মাধ্যমে উন্নতমানের উচ্চ ফলনশীল ধানের উৎপাদন করা,যাতে করে ক্ষুধা দূরীকরণ (জিরো হাঙ্গার)উন্নত স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করা যায় সকল ভারতবাসীর,কেননা প্রায় ৩০ শতাংশ শিশু ও মহিলা অপুষ্টি জনিত রোগের স্বীকার হন,লুকানো ক্ষুধার কারনে(হিডেন হাঙ্গার) সেই ক্ষুধা দূরীকরণ দরকার।ভারতের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ (৫৯ কোটি)কৃষির সঙ্গে যুক্ত এবং ৬৮ শতাংশ মানুষ গ্রামে বসবাস করেন,যদি কৃষি নির্ভর গ্রামীন ভারতের আর্থ সামাজিক ব্যবস্থ্যার উন্নয়ন করা যায় কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমেই তাহলেই আত্মনির্ভর ভারত ও খাদ্যে শ্বয়ম্ভরতা বজায় রাখা সম্ভব,ভারতের মত কৃষি নির্ভর দেশে খাদ্য নির্ষপত্তা মানেই জাতীয় নিরাপত্তা এটাও মনে রাখতে হবে।প্রজনন পদ্বতি ব্যবহার করা হয়েছে—তুলাইপঞ্জির মানোন্নয়নে জন্য বাসমতি ও আই আর-৬৪ এর সঙ্গে প্রজনন ঘটানো হয়েছে,গাছ ছোট হয়েছে ও জলদি পাকছে ১৩০ দিন,যেখানে তুলাইপঞ্জির ১৫০ দিন লাগে,বুনোধানকেও প্রজননের কাজে লাগানো হয়েছে,খরা ও বন্যা প্রতিরোধ কারী বৈশিষ্ট্যের জন্য বাদশা ভোগ ধানের প্রজনন ঘটানো হয়েছে বুনধানের সঙ্গে ও স্বর্ণ-সাব ওয়ানের সঙ্গে যাতে বন্যা প্রতিরোধকারী বাদশা ভোগ তৈরি করা যায়।এ রকমভাবে উন্নত মানের ধানের প্রজনন বিদ্যার প্রয়োগ চলছে খরা, বন্যা ও রোগ প্রতিরোধকারী উচ্চ ফলনশীল পুষ্টি সমৃদ্ধ ধান উৎপাদনের জন্য অদূর ভবিষ্যতে ব্রিডিংএর সাফল্য আশা করছি।বাসমতির বৈশিষ্ট্যযুক্ত উন্নত মানের উচ্চ ফলনশীল ধান তৈরিতে সক্ষম হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে যেটা পশ্চিমবঙ্গে চাষ করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *