রাতে একটু ভাল করে ঘুমাবো আমাকে একটা চৌকি কিনে দিবি। অসহায় বৃদ্ধার আবেদনে সাড়া দিলেন মানবিক প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল
1 min readরাতে একটু ভাল করে ঘুমাবো আমাকে একটা চৌকি কিনে দিবি। অসহায় বৃদ্ধার আবেদনে সাড়া দিলেন মানবিক প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল
তন্ময় চক্রবর্তী ও বাবা একটা চৌকি কিনে দিবি , আমি রাতে একটু ভালো করে ঘুমাবো। মাটিতে ঘুমাই। সাপ পোকা মাকড় এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায়। আমার ঘরে আমার গোপাল ছাড়া আর কেউ নেই। তুই আমাকে একটা চৌকি কিনে দে না ? আর আমার ঘরের মেঝেটা একটু প্লাস্টার করে দে না। আজ এই ভাবেই দেখা গেল কালিয়াগঞ্জ এর মানবিক হৃদয়ের মানুষ বলে পরিচিত পৌরসভার প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল কে কাছে পেয়ে এক বৃদ্ধার কাকুতি মিনতি। সেই বৃদ্ধার নাম নিত্য বালা দাস। যা রোজগার বলতে কিছুই নেই।
ভিক্ষাবৃত্তি করে যেটুকু হয় সেটা দিয়েই কোনরকমে চলেন তিনি। মাঝেমধ্যে কিছু মানুষ তার দিকে তাকিয়ে কিছু সাহায্য করে তবে সেটা সাময়িক। আজ পড়ন্ত দুপুরে যখন কালিয়াগঞ্জ এর পৌর প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল তার বাড়িতে গেলেন শান্তি কলোনিতে তখন এই নিত্য বালা দাস তার ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে তে তার ছোট্ট গোপাল ঠাকুরের এর পাশে ছিলেন। হঠাৎ প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পালের আগমন তার বাড়িতে হওয়ায় প্রথমে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন প্রথমে। কি করবেন ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না তিনি । এরপর অশীতিপর এই বৃদ্ধা কার্তিক বাবু সামনে এসে দাড়ালেন এবং বললেন ব্যাটা তুই অনেক বড় হবি। আমার আশীর্বাদ তোর উপর রইল। তুই সকল কাজে জয়ী হবি।
এরপর কার্তিক বাবু তার সমস্ত ঘরগুলো ঘুরে ঘুরে দেখলেন এবং তার প্রকৃত সমস্যা নিজে চোখে দেখে তিনি সেখানেই নিত্য বালা দাস কে আশ্বাস দিলেন আগামী কালকের মধ্যে তার থাকার জন্য চৌকি তার বাড়িতে পৌঁছে যাবে। আর মেঝেতে তাকে শুতে হবে না কোনোদিনও । এর পাশাপাশি কার্তিক বাবু এদিন আর ও বলেন খুব তাড়াতাড়ি তার বাড়ীর মেঝে ও পাকা তিনি করে দিবেন। যা শুনে অত্যন্ত আনন্দিত নিত্য বালা দাস।
তিনি বলেন তিনি খুব কষ্টের মধ্যে দিন গুজরান করছেন মাটিতে শুয়ে। মাঝেমধ্যেই সাপ তার ঘরে ঢুকে যায়। এছাড়াও তার শরীরের অবস্থা খুব ভালো নয়। এর মধ্যেই তাকে কষ্ট করে থাকতে হয়। কিছু সহৃদয় মানুষ আছে তারা মাঝেমধ্যে কিছুটা সাহায্য করেন। এদিন নিত্য বালা দাস খুব খুশি হন প্রশাসক কে কাছে পেয়ে। পরিশেষে প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল নিত্য বালা দাস কে প্রণাম করে আশীর্বাদ নেন। এবং তাকে আশ্বাস দেন সব সময় তিনি তার পাশে থাকবেন। এদিকে মানবিক মানসিকতার পরিচয় দেওয়ায় এলাকার মানুষরা ও ভীষণ খুশি পৌর প্রশাসক কার্তিক পালের উপর।উল্লেখ্য এই নিত্য বালা দাস কিছুদিন আগেও মাটির ঘরে বসবাস করত। সেই মাটির ঘরের চাল দিয়ে একটু বৃষ্টি হলেই জল পড়তো। আর তখন তিনি ঠাকুর ঘরে বারান্দায় শুয়ে থাকতেন।এমন অবস্থার কথা একদিন মৃত্যু বেলা দাস পৌরসভায় এসে প্রশাসককে জানানোর পর প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল তিনি তার মাটির ঘরের বদলে টিন দিয়ে এবং এডবেস্টার দিয়ে ঘর তৈরি করে দেন আজ সেই ঘরেই তিনি দিনযাপন করছেন কার্তিক বাবুর সহযোগিতাতেই।
ভালোমানুষ নই রে মোরা ভালোমানুষ নই…’ বর্তমান বিশ্বে কবিগুরুর এই লাইনটা খুব প্রাসঙ্গিক। আজকের দিনের মানুষের কাছে নিজের স্বার্থের বাইরে বাকি সব ভুল। আজকে দিনে ‘মানুষ, মানুষেরই জন্য’ নয়। বিপদের সময়ে মানুষ এগিয়ে না এসে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
তবে কি এই চিত্রের ব্যতিক্রম হয় না? প্রশ্নটা স্বভাবতই খুব প্রাসঙ্গিক। অবশ্যই আছে। নাহলে পৃথিবী রসাতলে তলিয়ে যেত। মানুষের বিবেক, মানসিকতা এখনও অবশিষ্ট আছে কিছু মানুষের মধ্যে। সংখ্যাটা কম হলেও আছে। সেইরকমই এক উদাহরণ পাওয়া গেল উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর বুকে পৌরসভার মানবিক প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল এর উদার মানসিকতার। করোনার মতো কঠিন পরিস্থিতিতে ও এই মানুষটি মানুষের পাশে থেকে যে ভাবে কাজ করে চলছে প্রতিনিয়ত। তা এক কথায় নজীর বিহীন । আজ তাই কালিয়াগঞ্জ বাসীর কাছে যার নাম সবচেয়ে প্রিয় হয়ে উঠেছে দিনের পর দিন তার নাম কালিয়াগঞ্জ এর পৌর প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল ।