October 27, 2024

নেই প্রিয় দা। তাই শ্রী কলোনির শ্রী হারিয়ে গেছে।

1 min read

নেই প্রিয় দা। তাই শ্রী কলোনির শ্রী হারিয়ে গেছে।

 

তনময় চক্রবর্তী। করোনায় আবহে এবার মানুষের মন খারাপ। দিকে দিকে পুজো হল শুধুমাত্র নমো নমো। তার উপর শ্রী কলোনিতে নেই সেই পুজো। একদিন যে পুজোর ইমেজে কালিয়াগঞ্জ এর শ্রী কলোনির শ্রী র নাম জগৎ জুড়ে ছিল। কারণ একটাই পাড়ার ছেলে বৈদ্য ছিল দেশের হিরো।

অর্থাৎ যে বৈদ্য কথা বলছি তিনি হলেন সবার প্রিয় সকলের কাছের মানুষ সেই প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। দূর্গাপুজা এলেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কালিয়াগঞ্জের ভূমিপুত্র প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সির নাম মনে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সির মৃত্যুর পর কালিয়াগঞ্জের শ্রীকলোনী এলাকা শুনশান। তিনি অসুস্থ হবার পর কয়েক বছর ঘট পুজা হয়৷ সেই পুজাও বন্ধ হয়ে গেছে।

 

পুজো এলে শ্রীকলোনী এলাকার বাসিন্দাদের মনে শূন্যতা থেকেই যায়।উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের শ্রীকলোনীর স্থানীয় বাসিন্দা ছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি। ছাত্রাবস্থা থেকে কংগ্রেস রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। জেলা ছাড়িয়ে কলকাতা এবং পরবর্তী সর্বভারতীয় রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছিলেন।

দাসমুন্সির পৈতিক বাড়িতে হয় দূর্গাপুজো। বাড়িতে বিশালাকারে দূর্গা মন্দির রয়েছে। এমনই একজন মানুষের বাড়িতে দূর্গা পুজো মানেই তার যে জৌলুষ কম হবে না এটা বলাই যায়। রথযাত্রা দিনে কাঠামো পুজোর মধ্যে দিয়ে দূর্গাপুজো শুরু হয়ে যেত। সর্বভারতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করায় প্রিয়বাবু বাড়ির সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রাখতে না পারলেও ষষ্ঠীর দিন অবশ্যই কালিয়াহঞ্জের বাড়িতে এসে পৌছতেন। বাড়িতে এসেই দুস্থ অসহায় মানুষদের হাতে নতুন বস্ত্র তুলে দেবার মধ্যে দিয়েই তিনি পুজোর কাজ শুরু করতেন।

পুজো আর্চনার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরবঙ্গে সমস্ত কংগ্রেস নেতাদের তিনি আমন্ত্রণ করে রাজনীতির জনসংযোগ বাড়িয়ে নিতেন। অষ্টমীর দিনে তাঁর বাড়িতে প্রদেশ থেকে শুরু করে দিল্লির কংগ্রেস নেতারা উপস্থিত হতেন।

পুজোর দিনগুলোতে শ্রীকলোনীতে চাঁদের হাট বসত। পুলিশ প্রশাসনের কড়াকড়িতে শ্রীকলোনীতে সাধারণ মানুষের প্রবেশের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি হত। অষ্টমীর রাতে প্রিয়বাবু ও তার পত্নী দীপা দাসমুন্সিকে নিয়ে ধুনিচি নাঁচ করতেন। যা দেখতে দূরদূরান্তের মানুষ উপস্থিত হতেন।প্রিয়বাবু ১৯৯৮ সালে সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তিনি অসুস্থ হবার পর প্রিয়বাবু ডান হাত হিসেবে পরিচিত কালিয়াগঞ্জ পৌরপতি অরুণ দে সরকার ঘটপুজোর মধ্যে দিয়ে পুজোর প্রচলন চালিয়ে গেছেন। ২০১৮ সালে প্রিয়বাবুর মৃত্যুর পর সেই পুজোও বন্ধ হয়ে গেছে। আজ পুজো এলেই শ্রীকলোনী এলাকার বাসিন্দাদের মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে।

প্রিয়বাবু প্রয়াত হবার পর আর কালিয়াগঞ্জ এ খুব বেশি আসেননি তাঁর পত্নী দীপা দাসমুন্সি। ছেলেকে নিয়ে দিল্লিতেই থাকেন। বাড়ির বর্তমানে দেখভালের দায়িত্বে আছেন জয়দেব চন্দ্র বিশ্বাস নামে এক বৃদ্ধর। তাঁর আক্ষেপ প্রিয়বাবু বেঁচে থাকতে এই বাড়িতে ধুমধাম করে পুজো হত। আজ সবই ইতিহাস।

 

প্রিয়বাবু অসুস্থ থাকাকালীন কয়েক বছর ঘট পুজো হয়েছে।কয়েকবছর সেটাও বন্ধ। আজ এই বাড়ির দিকে ফিরেও তাকায় না কেউ। সবদিকে যখন সবাই পুজার আনন্দে মেতে উঠেছেন, তখন এই বাড়িতে অন্ধকার।

তাই মন খুবই খারাপ। প্রিয়বাবুর প্রতিবেশী কানাই পাল জানান, বিগত দিন গুলোর কথা মনে পড়লে মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। কালিয়াগঞ্জে অনেক পুজো হলেও প্রিয়বাবুর বাড়িতে পুজো না হওয়ার কষ্ট তাঁরা ভুলতে পারেন না।

প্রিয়বাবুর বাড়ির পুজোর আলদা অনুভূতি।এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না। তাই চিরাচরিত নিয়মে এইভাবেই চলে যাবে দিনের পর দিন আর শুধু রয়ে যাবে সেই ইতিহাস শেষ স্মৃতি টুকু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *