December 5, 2024

প্রিয়পত্নী দীপা দাশমুন্সির প্রচারে এবারে কি মিছিল ?

1 min read

প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির আবেগকে আরও জোরলো করার জন্য  রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে লোকসভা নির্বাচনের ময়দানে প্রিয়-দীপার একমাত্র ছেলে প্রিয়দীপ ওরফে মিছিলকে নামানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস রায়গঞ্জ কেন্দ্রে দলের এবারের প্রার্থী প্রিয়পত্নী দীপা দাশমুন্সির কাছে মিছিলকে জেলায় প্রচারে নিয়ে আসার জন্য আবেদন করেছে। যদিও দীপাদেবী এই ব্যাপারে এখনও চূড়ান্তভাবে কিছু বলেননি। মিছিলের পরীক্ষা শেষ হলে তাঁকে লন্ডন থেকে আনার বিষয়টি দীপাদেবী ভাবছেন।

জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছে, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গে উত্তর দিনাজপুরবাসীর আলাদা ভাবাবেগ জড়িয়ে আছে। আজ তিনি নেই। তবুও তাঁর গুরুত্ব বিন্দুমাত্র কমেনি। সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই কংগ্রেস ছেড়ে অন্যদলে নাম লিখিয়েছেন কিন্তু যাঁরা প্রকৃত অর্থে কংগ্রেসকে নিয়ে থাকতে চান, প্রিয়র আদর্শ অনুসরণ করেন তাঁরা দলের দুর্যোগের দিনেও দলের সঙ্গে আছেন। প্রিয়-দীপা’র একমাত্র সন্তান মিছিল এলে দল প্রচারে অনেকটাই এগিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে প্রয়াত কং-নেতা প্রিয়র আবেগও এখানে ভোটারদের মধ্যে বড়সড় প্রভাব ফেলবে। 

দেশের রাজনীতিতে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির অন্যন্য পরিচিত রয়েছে। জেলায় তিনি ‘প্রিয়দা’ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৯ সালে বামেদের হাত থেকে রায়গঞ্জ আসনটি ছিনিয়ে নিয়ে প্রথমবার তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। সেসময় জেলার গ্রামগুলি বামেদের দুর্ভেদ্য দুর্গ ছিল। পরে ধীরে ধীরে তিনি গ্রামগুলিতে কংগ্রেসের সংগঠনকে সাজিয়ে মজবুত করে তোলন। বামেদের দখলেই থাকা ত্রিস্তর পঞ্চায়েত তিনি ছিনিয়ে নেন। জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম সবই দখল করে কংগ্রেস। তাঁর রাজনৈতিক চলের কাছে জেলায় বামেরা সেসময়ে একেবারে ছন্নছাড়া হয়ে যায়। ২০০৪ সালে ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তৎকালীন ইউপিএ সরকারের সময় তিনি উত্তর দিনাজপুরে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল করার উদ্যোগ নেন। সংসদ সদস্য থাকাকালীনই তিনি অসুস্থ হন। প্রায় ন’বছর চিকিৎসার পরে ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। ২০০৯ সালের লোকসভায় তাঁর স্ত্রী দীপাদেবী সংসদ সদস্য নির্বচিত হন। সেসময় মিছিলকে নিয়ে দীপাদেবী প্রচার করেছিলেন। এখন উচ্চশিক্ষার জন্য প্রিয়দীপ ওরফে মিছিল লন্ডনের একটি কলেজে পড়ছে। ২০১৪ সালের ভোটে দীপাদেবী সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের কাছে পরাজিত হন। রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি বলেন, আমিও চাইছি মিছিল ভোটের প্রচারে রায়গঞ্জে আসুক। ছেলে এখন পড়াশুনার জন্য লন্ডনে আছে। মিছিল জানিয়েছে ওর পরীক্ষা চলছে। এর মধ্যে সময় পেলে নিশ্চয় প্রিয়দীপকে নিয়ে আসা হবে। উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, আমরা দীপাদেবীর কাছে আবেদন করেছি যাতে তিনি ছেলে মিছিলকে প্রচারে নিয়ে আসেন। কারণ মিছিল ওর বাবা প্রিয়রঞ্জনবাবুর শেষকৃত্যে এসে নিজেই বলে গিয়েছিল লোকসভা ভোটের সময় সে আসবে। তাই আমরা চাইছি প্রিয়দীপ মায়ের হয়ে রায়গঞ্জে এসে প্রচার করে যাক। রাজনৈতিক মহলের আলোচনা প্রিয়’র সাজানো সংগঠন এখন আর জেলায় নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের আমলে দলবদলের হাওয়ায় কংগ্রেসের নির্বাচিত একাধিক সদস্য, নেতাকর্মী দলবদল করে ঘাসফুলে কিংবা অন্য দলে চলে গিয়েছেন। গ্রাম পঞ্চায়েতে কয়েকটি আসন থাকলেও জেলার পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের একটিও আসন বর্তমানে আর তাদের দখলে নেই। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেস এবারও দীপাকে প্রার্থী করেছে। লড়াইটা এবার অন্যবারের তুলনায় যে কিছুটা কঠিন সেটা কমবেশি সব রাজনৈতিক দলই বুঝতে পারছে। এবারও প্রিয়’র স্বপ্ন এইমসকে হাতিয়ার করে কংগ্রেস প্রচারে নেমেছে। রাজনৈতিক মহলেরই একটি অংশ বলছে এইমস ইস্যু অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে। এবার নতুন কোনও চমক কংগ্রেসকে দিতে হবে। দলেরই একটি অংশের মতে এমন অবস্থায় মিছিলকে প্রচারে নামালে ভোটারদের মনে প্রিয়’র সেন্টিমেন্ট ম্যাজিকের মতো করে কাজ করতে পারে। সেলক্ষ্যেই প্রিয়জায়া প্রার্থী দীপার কাছে তাঁদের একমাত্র সন্তানকে প্রচারের ময়দানে নামানোর আর্জি জেলা কংগ্রেস রেখেছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *