২১শে জুলাই কালিয়াগঞ্জে গনতন্ত্রের কালো দিবস, অভিশাপ না আশির্বাদ ? বর্তমানের কথার চাঞ্চল্যকর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট।
1 min read২১শে জুলাই কালিয়াগঞ্জে গনতন্ত্রের কালো দিবস, অভিশাপ না আশির্বাদ ? বর্তমানের কথার চাঞ্চল্যকর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট।
জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ।রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষার অধিকার আদায়ের মাস ছিল ফেব্রুয়ারি। তারিখটি ছিল ২১ অর্থাৎ ২১শে ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে (অধুনা স্বাধীন দেশ বাংলাদেশ) বাংলা ভাষা কে মাতৃভাষা রুপে প্রতিষ্ঠার দাবীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের গেটের পাশে আন্দোলনকারী ছাত্রদের জমায়েত শুরু হয় এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত গ্রহন করে মিছিল করে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের দিকে যাবার উদ্যোগ নিতেই পাকিস্তান সরকার পুলিশ ও আর্মি নামিয়ে মাতৃভাষা আন্দোলনরত ছাত্রদের বিক্ষোভ কে সামাল দিতে এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করতে থাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকার রাজপথে লুটিয়ে পড়ে ছাত্ররা। রক্তে লাল হয়ে যায় ঢাকার রাজপথ। মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার দাবীতে সেদিনের ২১শে শহীদ হয়েছিল অসংখ্য মায়ের সন্তান।
আর এইদিন টি উপলক্ষে একটি বিখ্যাত গান ” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি। ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী,আমি কি ভুলিতে পারি।” না ভুলে যায় নি কেউ, আর ভুলে যায় নি বলেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১শে ফেব্রুয়ারি।এই দিনটিতে ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল সংগ্রামী বাঙালি। ইংরেজি ক্যালেন্ডারে সে দিনটি ছিল ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী।
ঠিক তদ্রুপ ২১ অর্থাৎ ২১শে জুলাই, ১৯৯৩ কলকাতার রাজপথ। ভোটাধিকারে আইডেনটিটির দাবীতে অর্থাৎ ” নো আইডেনটিটি, নো ভোট” এই দাবীতে বন্দেমাতরম ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত হয়েছিল ১৯৯৩ সালে সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যুব কংগ্রেস কর্মীদের মিছিল। হাজার হাজার যুব কংগ্রেস কর্মীরা কলকাতার রাজপথে নেমে বন্দেমাতরম ধ্বনিতে ” নো আইডেনটিটি, নো ভোট” স্লোগান দিতে দিতে রাইটার্স বিল্ডিং অভিযানে সামিল হয়েছিল যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে।
পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করতে থাকে আন্দোলনকারীদের উপর। বুলেটের আঘাতে লুটিয়ে পরে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীরা। কলকাতার রাজপথ লাল হয়ে যায় রক্তে আর রক্তে। সেই দিনটিও ছিল ২১ অর্থাৎ ২১শে জুলাই। এই দিনটি কেই শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসে থাকাকালীন এবং পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেও যা ঐতিহাসিক শহীদ দিবস।
আর এই ২১ শে জুলাই তেও মায়ের কোল খালি হয়ে যাওয়া ১৩ টি তাজা যুবকের মৃত্যু আজও কেউ ভুলতে পারে নি বলেই ঐ ২১ এর সুরে বলতে দেখা যায় ” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে জুলাই, ভোটাধিকারে আইডেনটিটির জন্য মমতা তোমায় স্যালুট জানাই”। কিন্তু আফশোষ করে, দুঃখে , বেদনাদায়ক হৃদয়ে কয়েকজন প্রবীন নাগরিকরা বললেন কালিয়াগঞ্জ কংগ্রেসের বর্তমান তথাকথিত নেতৃত্ব যিনি বলেছেন ২১শে জুলাই দিনটি নাকি কালিয়াগঞ্জে কালো দিন। এই দিনটিতেই নাকি মানুষের বিশ্বাসের উপর আঘাত করে কালিয়াগঞ্জের গনতন্ত্র কে হত্যা করা হয়েছিল। এই উক্তিতে আশ্চর্য ও সত্যতা বিশ্লেষণে প্রথমেই এই প্রতিবেদনের হেডিং দেওয়া হয়েছে অভিশাপ না আশীর্বাদ। তবে কালিয়াগঞ্জ শহরের প্রবীনদের কথার মধ্যে যে বিশ্লেষণ টি এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে তাহলো কালিয়াগঞ্জ শহরের জনগনের বিশ্বাস কংগ্রেসের উপর ছিল, সেই বিশ্বাস কে আঘাত করে গনতন্ত্র কে হত্যা করা হয়েছিল কোন দিনে ২০১৬ সালের ২১শে জুলাই , নাকি জনগনের বিশ্বাস কে যত্নে লালন-পালন করে দীর্ঘ ২২ টা বছর কালিয়াগঞ্জ কে অনুন্নয়নের আতুড় ঘরে ফেলে রেখে দেওয়া দিনগুলো? আবার অনেকেই এই প্রসঙ্গে বলছেন রায়গঞ্জে এইমস হাসপাতাল গড়ে উঠার স্বপ্ন দেখানোর কারিগর প্রিয় নেতা প্রিয় রঞ্জন দাসমুন্সীর সহধর্মিনী দীপা দাসমুন্সীর উপর তো মানুষের বিশ্বাস জন্মেছিল, তিনি হয়েছিলেন সাংসদ আর এখনকার কংগ্রেসের দোসর ভাই সেইসময়ে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার, রায়গঞ্জে এইমস গড়ে তুলতে পারলেন না সেইদিন জনগনের বিশ্বাস নামক বস্তুটি কোথায় ছিল ? কালিয়াগঞ্জের মানুষের বিশ্বাস, সূর্য পশ্চিম দিকে উঠলেও বিশ্বাস, জাতীয় কংগ্রেসে কালিয়াগঞ্জের ভূমিপুত্রের অবস্থানগত মানুষের বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস দল ত্যাগ করে অন্য দলে চলে যাওয়াটা কি সেদিন বর্তমানের তথাকথিত কংগ্রেস নেতৃত্বের ভাষায় বিশ্বাস ভঙ্গ নয়, কালো দিবস নয়? ঐতিহাসিক শহীদ দিবস ২১শে জুলাই তো প্রকৃতপক্ষে কংগ্রেস কর্মীদের শহীদ হওয়াকে কেন্দ্র করেই, কিন্ত কালিয়াগঞ্জ কংগ্রেস নেতৃত্ব এমন উক্তি করলেন যেখানে এই দিনটিকে কালো দিবস বলে আখ্যায়িত করে নিজেরাই কলঙ্কিত হলেন। ৭৩ বছরের কালিয়াগঞ্জ শহরের এক পরিচিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কংগ্রেস পরিবারের অভিভাবক বললেন মানুষের বিশ্বাস কে আঘাত করে নয়, গনতন্ত্র কে হত্যা করেও নয় বরং ভারতবর্ষের গনতন্ত্রের সিস্টেমে মানুষের বিশ্বাস কে পাথেয় করে কালিয়াগঞ্জের বর্তমান পৌর প্রশাসক তথা প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পাল সদলবলে কলকাতায় ২১শের শহীদ স্মরন সভাতে যোগদান করে মাত্র ৪ বছর সময়ে কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার যে বিস্তীর্ণ উন্নয়নের রুপরেখার তুলির টান দিতে পেরেছে তা কিন্তু অভিশাপ নয়, সকল স্তরের জনগনের আশীর্বাদ। মাতৃভাষা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারির কথা এখনোও কেউ ভুলতে পারে নি, পারবেও না কিন্তু পুলিশের গুলিতে ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে জুলাই এর গনতন্ত্র হত্যাকারী বামফ্রন্ট কে বুকে টেনে রাজনৈতিক প্লাটফর্মে পার্টনার হিসেবে পরিচয় দিতে তথাকথিত ইন্টেলেকচুয়াল কংগ্রেস নেতৃত্ব কি বলবেন কালো দিবস নাকি গনতন্ত্র হত্যা হয়েছে? জনগনের বিশ্বাস কে পাথেয় করে, হত্যা না করে শুধুমাত্র প্রলোভন দেখিয়ে বিগত ২২ বছরে কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার উন্নয়ন এবং কালিয়াগঞ্জের তথাকথিত কংগ্রেস নেতৃত্বের ভাষায় মানুষের বিশ্বাস কে আঘাত করে গনতন্ত্র কে হত্যা করে ৪ বছরের কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার উন্নয়নের ছবি আঁকার জায়গা তৈরী হোক ৬ নং ওয়ার্ডে রসিদপুরে অবস্থিত কালিয়াগঞ্জ স্টেডিয়াম ময়দানে। তবে এই প্রতিবেদনে আবারো সেই গানের কলিতে ” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে জুলাই, আমি কি ভুলিতে পারি ” , না কেউ ভুলে যায় নি। কংগ্রেস নেতৃত্বরা ভুলে যান নি তবে রক্তে রাঙ্গানো একুশে জুলাই দিনটিকে কালো দিবস বলে আখ্যায়িত করেছেন। জনগনের বিশ্বাস কে আঘাত করা, গনতন্ত্র কে হত্যা করার বিষয়ে বিগত বিধানসভার উপ নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জের পৌর এলাকার জনগন দেখিয়ে দিয়েছে ইভিএম মেশিনে বোতাম টিপে এবং আগামী নির্বাচনে জনগন আরো দেখিয়ে দেবে এমনকি কংগ্রেস নেতৃত্ব দেখবেন, এই কথাগুলো অকপটে প্রতিবেদককে জানালেন রাজনৈতিক আঙ্গিনার বাহিরে অরাজনৈতিক সচেতন ব্যাক্তিরা। তবে তাদের বক্তব্য তর্কের খাতিরে গনতন্ত্র কে হত্যা করে এবং মানুষের বিশ্বাস কে আঘাত করে যা হয়েছে সব কিছুই পৌর জনগনের আশীর্বাদের ফল।