গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভে সামিল হল পরিযায়ী শ্রমিক
1 min readগ্রাম পঞ্চায়েত ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভে সামিল হল পরিযায়ী শ্রমিক
বিশ্বজিৎ মন্ডল মানিকচক : গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভে সামিল হল পরিযায়ী শ্রমিক সহ তাদের পরিবারবর্গ। গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান সহ সরকারি আধিকারিকদের আটকে রেখে চলে বিক্ষোভ। সোমবার বিকেলে এই ঘটনার জোরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে মালদার মানিকচক ব্লকের মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন চত্বরে। ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি মানিকচক থানার পুলিশ কর্তারা পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। যদিও পুলিশের সামনেই প্রধানকে ঘিরে ধরে পরিযায়ী শ্রমিকরা চালাতে থাকে জবাব তলব।
পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রধান সহ সরকারি আধিকারিকদের ঘেরাও মুক্ত করে পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে বের করতে সক্ষম হন।বিজেপি পরিচালিত মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদে রয়েছেন বিউটি মন্ডল। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দিন কয়েক আগে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে পঞ্চায়েতের বিজেপির উপপ্রধান শংকর মন্ডল সহ অন্যান্য সদস্যরা।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মত তদন্তে নেমেছে প্রশাসনিক কর্তারা। সোমবার বিকেলে পঞ্চায়েত ভবনে অভিযোগের তদন্তের স্বার্থে পৌঁছান ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা।ঠিক এই মুহূর্তে শতাধিক পরিযায়ী শ্রমিক ও তাদের পরিবারবর্গ পঞ্চায়েত ঘেরাও করে। নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে স্লোগান তুলতে থাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পঞ্চায়েত। ঘটনার খবর যায় মানিকচক থানায়। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশকর্তারা। পুলিশের হস্তক্ষেপে ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের ঘেরাও মুক্ত করে ব্লকের উদ্দেশ্যে পাঠায় পুলিশ প্রশাসন।এরপর পঞ্চায়েত প্রধান বিউটি মন্ডল সহ অন্যান্য কর্মীদের উদ্ধার করে পঞ্চায়েত চত্বর থেকে বের করতে সক্ষম হয় পুলিশ। যদিও শ্রমিকদের এই বিক্ষোভের জেরে খানিকটা বেগ পেতে হয় পুলিশকেও। যদিও এই প্রসঙ্গে আটকে থাকা ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা কিছু বলতে চাননি।পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিযোগ, ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসার পর প্রশাসনের নির্দেশ মত কোয়ারেন্টাইনে 14 দিন কাটিয়েছেন। কিন্তু এই কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রগুলিতে চরম অব্যবস্থার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। তবুও সকল মানুষের স্বার্থে সেই কষ্টের মধ্যে দিন পার করেছেন। বর্তমানে তারা কর্মহীন। আর্থিক অনটন থেকে শুরু করে পরিবারের খাদ্যের সংকট সমস্তটায় রয়েছে। ইতিমধ্যে লকডাউন বাড়ছে তারা এমনটাও জানতে পেরেছেন। এই কঠিন অবস্থায় দিন কাটবে কি করে কিছুই কূলকিনারা পাচ্ছেন না। পঞ্চায়েতের তরফে ভিনরাজ্য থেকে ফিরে আসার পর এখনো কোনরকম সুবিধা পাননি। কর্মহীন অবস্থায় এলাকায় একশো দিনের কাজ টুকুও বন্ধ রয়েছে। সেই কাজ হলে অন্তত পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার মতো অর্থ উপার্জন হতো বলে মনে করছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।ফলে তারা পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের কাছে কিছু খাদ্যসামগ্রীর আবেদন জানিয়েছেন। তারপরও কোন ব্যবস্থায় হয়নি। তাই এদিন সকাল থেকে পঞ্চায়েতে ভিড় জমাতে থাকে পরিযায়ী শ্রমিক সহ তাদের পরিবারবর্গ।বেলা গড়িয়ে গেলেও কোনরকম সুদুত্তর আশ্বাস কিছুই মেলেনি। প্রধানকে বলা হলেও কোনো উদ্যোগ নেননি। চরম হয়রানির শিকার হয়ে অবশেষে পঞ্চায়েত ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। অতি শীঘ্রই খাদ্যের সুব্যবস্থা করতে হবে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক ও তার পরিবারবর্গের।এমনটাই দাবি বিক্ষোভকারী শ্রমিক ও তাদের পরিবারবর্গের।এপ্রসঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি উপপ্রধান শংকর মন্ডলের অভিযোগ, প্রধানের বিরুদ্ধে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করোনা মোকাবিলায় খরচ দেখি আত্মসাৎ করার অভিযোগ প্রশাসনের কাছে দায়ের করেছিলাম। তারই তদন্তে এসেছিল আধিকারিকরা। তখনই পরিযায়ী শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। ব্লক প্রশাসনের তরফে পরিযায়ী শ্রমিকদের খাদ্যশস্য বন্টনের তালিকা পাঠানো হয়েছিল পঞ্চায়েতে। কিন্তু সেই তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করেনি প্রধান। সেই কারণেই শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়েছেন। এই ঘটনায় কোন বিজেপি বা অন্যান্য দলের সদস্যরা জড়িত নয়।আমরা চাই দুর্নীতিগ্রস্ত এই প্রধানের যথোপযুক্ত শাস্তি হোক।যদিও সমস্ত ঘটনার পেছনে বিজেপির সদস্য সহ উপপ্রধান শঙ্কর মন্ডল জড়িত বলে দাবি বিজেপির প্রধান বিউটি মন্ডলের।তিনি বলেন,অভিযোগের বিভিন্ন দিক খতিয়ে তদন্তের জন্য ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা এদিন পঞ্চায়েতে এসেছিলেন।সেই আধিকারিকদের বিজেপির সদস্য ও উপপ্রধান চক্রান্ত করে কিছু লোক জড়ো করে বিক্ষোভ করিয়েছে।আমাকে ফাঁসিয়ে পদ থেকে সরানোর জন্যই এই চক্রান্ত চালাচ্ছে।