October 24, 2024

নিজেকে সবজান্তা করোনা ভাইরাস স্পেশালিস্ট না ভেবে ভাবুন সংক্রমণের ছোবল।

1 min read

নিজেকে সবজান্তা করোনা ভাইরাস স্পেশালিস্ট না ভেবে ভাবুন সংক্রমণের ছোবল।

জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ। কি ভাবছেন গ্রীন জোন ঘোষনায় নিজেকে খুব বীরশ্রেষ্ঠ মানুষ। ভাবতেই পারেন , আপনার একান্ত অনুভূতি এবং নিজের প্রতি কঠিন আত্মবিশ্বাস। আর কঠিন আত্মবিশ্বাস জন্ম দিয়েছে আপনার অন্দরে এক সবজান্তা করোনা ভাইরাস স্পেশালিস্ট মানসিকতার। এই ধর্ম ইউজ করুন অবশ্যই নিজের জন্য, আপনার পরিবারের জন্য কিন্তু কখনোই দয়া করে পরিবারের বাহিরে বেরিয়ে এসে বিজ্ঞ সবজান্তা গোছের মানসিকতায় সমাজের অপকার টা করবেন না।

এই অধিকার রাষ্ট্র আপনাকে দেয় নি। গ্রীন জোন তাই না। আলিপুরদুয়ার গতকাল গ্রীন জোন ছিল , আজ কিন্তু অরেঞ্জ জোনে পরিণত হয়ে গেল। খবর রাখেন কি। আপনি আপনার পেশাগত জায়গায় বিজ্ঞ, সবজান্তার পরিচয় দিন কোনো কিছুই যায় আসবে না কিন্তু এই মহামারী নোবেল ভাইরাস কে নিয়ে বিশ্ব জুড়ে এখনও কেউ বা কাহারা নিজেদের বিজ্ঞ ভাবতে দিনরাত রিসার্চ করেই চলেছেন। আর আপনি সামান্য একজন সমাজে নিজের ভাবমূর্তি কে বিশাল কিছু মনে করে সবজান্তা বিজ্ঞ করোনা ভাইরাস স্পেশালিস্ট ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন। এখানে ওখানে বসে সভা পর্ষদ বসিয়ে এই তথ্য, ঐ তথ্য , কিছু না জানা ইংরাজি শব্দ উচ্চারণ করে জাহির করতে চাইছেন আপনি অনেক কিছুই বোঝেন আর বাকিদের বোঝাচ্ছেন। নিজেই লকডাউন ভাঙছেন ও অন্যদের সচেতন করছেন লকডাউন কিভাবে ভাঙ্গতে হয়। এই মানসিকতা বর্জন করে উন্মুক্ত হাওয়ায় ভেসে না বেড়িয়ে ভাবুন ছোবল কি জিনিষ। এক অদৃশ্য ছোবল। পরিযায়ী শ্রমিকেরা কিভাবে বর্তমানে রেড জোন থেকে গ্রীন জোনে প্রবেশ করছে তার খবর প্রশাসনের কাছে নেই। আর নেই বলেই গ্রীন জোন অরেঞ্জ হতে শুরু করেছে , এরপরে রেড জোনে পরিনত হবে। আজ এই প্রতিবেদন আপনাদের মতো ইন্টেলেকচুয়াল সমাজসচেতন বিজ্ঞ সবজান্তা গোছের ভদ্র মহোদয়দের জন্য যারা নোবেলের ছোবল নিয়ে ভাবছেন না , ভাবছেন ও আনন্দে আছেন আমার এলাকা গ্রীন জোন ঘোষনার মধ্যে। কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকার বহু পরিযায়ী শ্রমিক আজকেই কলকাতার বিভিন্ন জায়গা থেকে বাড়ি ফিরেছেন। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেল বিভিন্ন উপায়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। কোথাও কোনো উপযুক্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা না করেই বাড়ি প্রবেশের পথে। এরা রাতেই বাড়িতে ঢুকবেন। ঐ বাড়িতে অন্য ৪-৬ জন সদস্য আছেন। স্থানীয় প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান। দায়িত্ব এড়িয়ে বলছেন এরা বাড়িতেই হোম কোয়ারেন্টাইন এ থাকবে। অবশ্যই থাকবে , কিন্তু এই পরিযায়ী শ্রমিক যখন বাড়িতে প্রবেশ করলেন তখন বাড়ির অন্য সদস্যরাও কিন্তু হোম কোয়ারেন্টাইন এ আবদ্ধ হয়ে গেল। পরের দিন ঐ বাড়ির অন্য সদস্য বাজারে আসছেন, কোথাও বসছেন , কারোর সংস্পর্শে আসছেন। ব্যাস, ঐ অদৃশ্য বিশ্ব ত্রাস নোবেল কিভাবে যে কাকে ছোবল বসিয়ে দিচ্ছে তা ধুলায় অন্ধকার। আর এই অন্ধকারে থেকেও সমাজের এক শ্রেণীর বিজ্ঞ সবজান্তা লকডাউন ভঙ্গকারীরা সমাজ কে জানান দিচ্ছে আমাদের এলাকা, আমাদের জেলা গ্রীন জোন জানিস ঘোষণা হয়েছে। আরে মশাই অদৃশ্য নোবেলের ছোবলে যখন দুঃস্থ গরীব মানুষেরা দংশিত হবে তখন এদের হাতে ত্রান তুলে দিতেও আপনাদের দেখা যাবে না। পরিবারসহ নিজেদের বাঁচাতে আপ্রান চেষ্টা করবেন তখন‌। কি প্রয়োজন, এখন থেকেই নিজে বাঁচুন, পরিবারের সকলকে বাঁচান, সমাজ কে বাঁচান, সমাজের সকলকে বাঁচান এবং সুস্থ রাখুন , লকডাউন মানুন‌‌ এবং লকডাউন মানতে সকলকে সচেতন করুন ঘড়ে বসেই‌ , এমনকি প্রশাসন কে সহযোগিতা করুন ছোবলের হাত থেকে বাঁচতে। আর বন্ধ করুন বিজ্ঞ ও সবজান্তার বহিঃপ্রকাশ। বিশ্ব ত্রাস অদৃশ্য নোবেলের অহংকার আপনার চেয়ে কতগুন বেশী জানেন।জানেন না বলেই বিজ্ঞ সবজান্তা হয়ে লকডাউন আইন ভেঙ্গে কার্যকলাপ করেছেন। দয়া করে বন্ধ করেন। সংবাদ মাধ্যম বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলকে সচেতন করছেন, আগাম সতর্কতা করছেন। এই মুহূর্তে লকডাউন চলছে দেশজুড়ে। নিজেদের ক্লীন ভাবতে পারেন বাট গ্রীন ভেবে আনন্দ করবার সময় নয়, বাহিরে বের হওয়ার সময় নয়, সোশ্যাল দূরত্ব কে অমান্য করবার সময় নয়, নিজেদের বিজ্ঞ সবজান্তা ভাববার সময় নয়। পৃথিবী আবার যখন শান্ত হবে তখন ছোবলের হাত থেকে বেঁচে থাকলে বিজ্ঞতার পরিচয় দিতে পারবেন , সময় আসুক।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *