October 24, 2024

চিন্তাহীন সংসারের পাশে এক দুশ্চিন্তায় মাস্ক পরা প্রতিবেশীদের কথা।

1 min read

চিন্তাহীন সংসারের পাশে এক দুশ্চিন্তায় মাস্ক পরা প্রতিবেশীদের কথা।

জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ।আজকের এই প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী প্রয়াত হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া একটি বাংলা ছায়াছবির গানের কথা মনে পরে গেল ” শোনো বন্ধু শোনো প্রানহীন এই শহরের ইতি কথা, ইটের পাঁজরে লোহার খাঁচায় দারুণ মর্ম ব্যাথা “। সত্যি আজ শহর কিংবা গ্রামই হোক বিস্তীর্ণ এলাকার পর এলাকা কোনো প্রান নেই। এক অদৃশ্য ছোবলের আতঙ্কে সকল স্তরের মানুষ যেমন বিশ্বজুড়ে গৃহবন্দী তেমনি আমাদের এই দেশে, আমাদের রাজ্যে, আমাদের শহরে, আমাদের গ্রামে।

একদিকে ছোবলের দংশনে মৃত্যু মিছিল অপরদিকে ছোবলের আতঙ্কে ঘড় বন্দি। শুনশান রাস্তাঘাট শ্মশানে পরিণত শহর, গ্রাম আজ প্রানহীন হয়ে পরেছে। লোহার খাঁচায় ইটের দেওয়ালে এক নিদারুণ মর্ম ব্যাথার ছোয়াও লেগেছে ঐ মাটির দেওয়ালেও। গৃহবন্দী অবস্থায় সকল স্তরের মানুষ ঐ চার দেওয়ালের মধ্যে থেকে তাদের প্রানের ব্যাথায় ছটপট করছেন। এই ব্যাথার নেপথ্যে রয়েছে মানুষের রোজগার। তবুও আজ লকডাউন এ চিন্তাহীন সংসারের পাশে মাস্ক পরা দুশ্চিন্তায় থাকা প্রতিবেশীদের নিদারুণ মর্ম ব্যাথার নিঃশব্দ আওয়াজ।

এক একটি ছোট, মাঝারি, বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গুলো লকডাউন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে এক দুইজন থেকে ২০-২৫ জন এবং তারও বেশী সংখ্যক মানুষ কাজ করে তাদের সংসার চালান। আজ লকডাউনে সব বন্ধ তখন প্রতিটি পরিবারের চার দেওয়ালের করুন অবস্থা, তাদের মর্ম ব্যাথার কথা কেউ কি উপলব্ধি করতে পারছেন।

চিন্তাহীন সংসারের মানুষেরা নাক মুখে মাস্ক পরে শুধু বলতেই পারছেন ঐ মর্ম ব্যাথায় জর্জরিত মানুষদের যে তোমরা মুখে মাস্ক দাও নি কেন, সোশ্যাল দূরত্ব বজায় রাখছো না কেন কিন্তু মাস্ক খুলে তাদের মুখে কিছু খাবার পৌঁছে দিতে দেখা যাচ্ছে না তেমনভাবে চিন্তাহীন সংসারের মানুষজনদের। আজ প্রায় এক মাস হতে চললো কর্মহীন হয়ে মানুষ গৃহবন্দী কিন্তু ছুটিতে থাকা কর্মবিরতিতে মোটা অংকের মাস মাইনে পাওয়া সংসারের মুখে

 

যেমন মাস্ক তেমনি মুখে নিশ্চিন্তে দুইবেলা অন্নের জোগাড়ে অন্তহীন গৃহবন্দীতে এক অনাবিল আনন্দের মাঝে প্রানহীন দের খবর কে রাখে। সরকার থেকে তো সব ধরনের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রানহীন দের প্রানের অক্সিজেন দিতে, সেখানে চিন্তাহীন সংসার গুলো ঐ লোহার খাঁচায় ইটের পাঁজর থেকে বেড়িয়ে এসে মুখে মাস্ক পরেই আসুন না দারুন মর্ম ব্যাথায় কর্মহীন, রোজগার বিহীন মাস্ক পরা মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে একটু সহানুভুতির হাত বাড়িয়ে দিতে। জীবন তো জীবনের জন্যেই, মানুষ তো মানুষের জন্যেই। এই সমাজ দেখিয়েছে মূমূর্ষ রুগীদের রক্তের প্রয়োজনে প্রতিটি রক্তদান শিবিরে অধিক সংখ্যক এই কর্মহীন, রোজগার বিহীন মানুষদের ছুটে এসে রক্তদান করতে। আগামী ১মাস,২ মাস,৩ মাস কিংবা ৪ মাস নাহয় কিছু পরিমান ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স কমবে কিন্তু শয়ে শয়ে জীবন যে নতুন সূর্যের নতুন আলো দেখতে পারবে প্রানহীন এই শহর, গ্রামের মাস্ক পরা দুশ্চিন্তায় দিনরাত কাটানো পরিবারগুলো। বাড়িতে ভালো ভালো রান্নার রেসিপি করে ফেসবুকে পোস্ট করতে সত্যি সকলের ভালো লাগে কিন্তু কর্মহীন, রোজগার বিহীন সংসার গুলোর জন্য কিছু করাটাও যে কতখানি মানসিক তৃপ্তি তার প্রকাশ ৬ ইঞ্চির মনিটরের জায়গায় আটবে না হয়তো। কিন্তু হৃদয়ের মনিটরে গাঁথা থাকবে এই আন্তরিক সহযোগিতার ছবি। লকডাউনে বন্ধ ছোট, বড়, মাঝারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক দের যেমন রোজগার বন্ধ হয়ে নিজেদের সংসার টানার পাশাপাশি দোকানে কর্মচারীদের সংসার চালানোর কথাও ভাবতে হচ্ছে। এর মধ্যেই কারো সামর্থ হচ্ছে কারোর বা হচ্ছে না, চেষ্টা করছেন। কি করুন দৃশ্য মুখে ফুটে উঠছে না তার কারণ সংক্রমনের আতঙ্কে মুখ ঢাকা পরে আছে ঐ মাস্কে। তাই আজকের প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে যেমন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গানের কলি দিয়ে শুরু করেছিলাম সেই মর্ম ব্যাথা দুশ্চিন্তায় মাস্ক পরা সংসারের মুখগুলো চিন্তাহীন সংসারের মানুষদের কি বলতে চাইছে মান্না দের বিখ্যাত সেই গানের কলিতে ” এমন বন্ধু আর কে আছে তোমার মতো মিস্টার, কখনও বা প্রতিবেশী কভু তুমি জননী কখনও বা স্নেহময়ী সিস্টার সিস্টার।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *