জয়ন্ত বোস, বর্তমানের কথা :তিন দিনে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে। তিন দিনের শেষ তারিখ ৫ মে উত্তর দিনাজপুর জেলার সর্বত্রই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন। ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র ওঠানো ও জমাদানের পর্ব শেষ হয়েছে।
শাষক দল তৃণমূল কংগ্রেস সহ সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে কোথাও ত্রিমুখী, কোথাও চতুর্মুখী লড়াইয়ে অবতীর্ণ। তবে মনোনয়নপত্র স্ক্রুটুনির পরে দেখা দিয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলার অনেকাংশে ত্রিস্তরের আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে কারণ বিরোধীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা করতে পারেন নি। এসবের মাঝে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন গ্রামের জনগণের কাছে একটা বড় উত্সব পার্বনের আকার ধারণ করে।
সকাল থেকে শুরু করে রাত অবধি যেমন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের, কর্মীদের ভোট প্রচারে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় ঠিক এরই পাশাপাশি যারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন তারাও ব্যাস্ত হয়ে পরেন নির্বাচনী পর্যালোচনায় বিভিন্ন চায়ের দোকানে বসে চায়ের আড্ডায় ,আর চায়ের দোকানগুলোতে টেলিভিশনে নির্বাচনী খবরের সাথে চলে চায়ের আড্ডায় বসে থাকা ভোটারদের একে অপরের সাথে তর্ক বিতর্কের পালা । সংবাদ প্রতিবেদনের জন্য খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন অঞ্চলের এরকম কয়েকটি জমজমাট সান্ধ্যকালীন চা হাউসের আড্ডার খবর এই প্রতিবেদনে।
ভোটারদের রাজনৈতিক আড্ডায় তাঁরা যে যে রাজনৈতিক দলের সাপোর্টার তাদের মুখে নিজের দলের আলোচনা ও বিরোধী দলের সমালোচনায় চুলচেরা বিশ্লেষণের ঢেউ আছড়ে পরছে চায়ের আড্ডায় কিন্তু উচ্চস্বরে শুধুমাত্র তর্ক বিতর্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তর্ক বিতর্ক, আলোচনা সমালোচনার মাঝে শাষক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী দলগুলোর সাপোর্টার ভোটাররা তাদের ক্ষোভ বিক্ষোভ নিয়েও মশগুল।
বিরোধী দলগুলোর ভোটারদের মুখে যেমন শাষক দল বিরোধী সমালোচনার সুর তেমনি কোথাও কোথাও শাষক দলের সাপোর্টার ভোটাররা এক একটি জায়গায় জটলা আড্ডায় নিজের দলের প্রার্থীদের ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমালোচনায় মশগুল। শাষক দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা বিরোধী দলের ভোটারদের, নিজের দলের লবি,গোষ্ঠি বাজি, ক্ষোভ থাকা ভোটারদের কিভাবে ট্যাকল করবেন আর বিরোধী দলের প্রার্থীরা কিভাবে সেটা কাজে লাগাবেন সেটা প্রতিটি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বের নির্বাচনী রণনীতি কৌশল ।
তবে চায়ের আড্ডায় শাষক দল বিরোধী ভোটারদের গলায় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নের সুর কিন্তু বেজে উঠলেও তাদের সাথে শাষক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাপোর্টার ভোটারদের একটা অংশ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের বিগত দিনের পঞ্চায়েতী কার্যকলাপে ও তাদের ব্যাবহারের তিতিবিরক্তির সুর বেজে উঠছে। আর এই সুরের মাঝে ভোটারদের ভোটদান সিদ্ধান্তের এক নতুন ভাবনার অন্য সুর বাজতে শুরু করেছে। উন্নয়নের দোলায় ও রাজনৈতিক চাওয়া পাওয়ার লোভে শাষক দল বিরোধী যে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়ী করানোর পরে টাটা বাইবাই করে শাষক দলে চলে যাবে কিনা এই ভাবনাই চায়ের দোকানে ভোটারদের আড্ডাকে ভাবিয়ে তুলেছে। এই ভাবনা কাঠির সুর ৫ মে উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়ে সকল বুথে ভোটাররা কিভাবে সুরারোপিত করবেন আগামী দিনই বলবে।