January 11, 2025

তরঙ্গপুর বড়াল হরলাল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের মীরা দেবশর্মা অভাব অনটনের মধ্যেও পড়াশুনা চালিয়ে মাধ্যমিকে সফল

1 min read

উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের তরঙ্গপুর বড়াল হরলাল উচ্চ বালিকা
বিদ্যালয়ের মীরা দেবশর্মা
অভাব অনটনের মধ্যেও পড়াশুনা চালিয়ে
গিয়ে  মাধ্যমিকে ৬১২ পেয়ে স্কুলের মুখ
উজ্জ্বল করেছে।নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে মীরার এই ফলে স্কুলের শিক্ষিকা সহ
প্রতিবেশীরা সকলেই খুশি।আগামী দিনে সে অঙ্কের শিক্ষিকা হতে চায়। তরঙ্গপুর বড়াল
হরলাল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সোমা বাগচি বলেন
, মীরা আমাদের
স্কুলে পঞ্চম শ্রেণী থেকে পড়াশুনা করছে।

 বাড়িতে অভাব থাকলেও পড়াশুনার ক্ষেত্রে
কখনই মেয়েটি ফাঁকি দেয়নি। কঠোর পরিশ্রম ও চেষ্টার জন্যই সে অসাধারণ ফল করেছে।
অভাবের সঙ্গে লড়াই করে মীরা ভালো ফল করায় আমরা সকলেই খুশি।
    মীরার বাবা চিত্র
দেবশর্মা বছর দু
য়েক আগে আচমকাই অসুস্থ হয়ে মারা যান।এরপরই পরিবারটির মাথায় আকাশ
ভেঙে পড়ে।
স্বামীর মৃত্যুর পর ওর মা কল্যাণীদেবী সংসারের হাল ধরেন।  কিন্তু উচ্চ শিক্ষার জন্য তার আর্থিক সংকট
প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। 


মীরা বলে, আমি আশা করেছিলাম আরও ভালো ফল হবে। কিন্তু একাদশ শ্রেণীতে
কীভাবে ভর্তি হব এবং আগামী দিনে কী করে পড়াশুনা চালাবো তা নিয়ে চিন্তায় আছি। মায়ের
সামান্য আয়ে কোনওরকমে সংসার চলছে। স্কুলের শিক্ষিকারা পড়াশুনার ক্ষেত্রে আমাকে
সবরকমভাবে সহযোগিতা করেছেন। বইখাতাও তাঁরা কিনে দিতেন। বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে আমি
অঙ্কের শিক্ষিকা হতে চাই।

 কিন্তু আমাদের স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ নেই। এজন্য অন্য
স্কুলে ভর্তি হতে হবে। কোথায় টাকা পাব বুঝে উঠতে পারছি না।
 
মেধাবী ছাত্রীটির মা কল্যাণী দেবশর্মা বলেন, স্বামীর আকস্মিক
মৃত্যুতে আমরা অথৈ জলে পড়ে যাই। স্বামী সেরিকালচার দপ্তরে চাকরি করতেন। কিন্তু সেই
চাকরিটা এখনও পাইনি। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সহায়িকার কাজ করি। মেয়ে মাধ্যমিকে ভালো
ফল করেছে। ছেলে মুস্তাফানগর প্রাথমিক স্কুলে পড়ে। মেয়ের উচ্চ শিক্ষার টাকা কোথা
থেকে পাব সেনিয়ে সবসময়ে চিন্তা হয়।
 মীরা বাংলায় ৮১,
ইংরেজিতে ৮৫, অঙ্কে ৮৭, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৩, জীবনবিজ্ঞানে ৯৩, ইতিহাসে ৮০ এবং
ভূগোলে ৯৩ পেয়েছে। পড়াশুনা করার জন্য নির্দিষ্ট কোনও সময় তার বাঁধা ছিল না।
স্কুলের শিক্ষিকাদের পরামর্শেই সে পড়াশুনা করত। মীরা অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময়েই ওর
বাবা চিত্র দেবশর্মা অসুস্থ হয়ে মারা যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *