কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক শচীন সিংহ রায়ের পাড়ার কসকো ক্লাবের পুজোর উদ্বোধনে বিধায়ক সৌমেন রায় ও কার্তিক চন্দ্র পাল। অনুপস্থিত প্রশাসক। এটা কিসের ইঙ্গিত? তন্ময় চক্রবর্তী উত্তরবঙ্গের মধ্যে প্রতিবছরই যে সমস্ত বিগ বাজেটের শ্যামা পূজো গুলো হয় তার মধ্যে অন্যতম একদিকে যেমন কালিয়াগঞ্জ এর হাসপাতাল পাড়াতে অবস্থিত ত্রিধারা সংঘের পূজা অপরদিকে প্রতিকার কসকো ক্লাবের পুজো।
প্রতিবছরই শ্যামা পূজা ঠিক একদিন আগে এই দুটি ক্লাব এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে থাকে বিশাল চমক। এবারও সবাই ভেবেছিল হয়তবা এবারও এই দুইটি ক্লাবের কর্মকর্তারা চমক দিবেন ।
তার একটি কারণ ও রয়েছে বটে ।সেটি হলো হাসপাতাল পাড়াতে অবস্থিত ত্রিধারা সংঘের পূজার সম্পাদক যেমন রয়েছে কালিয়াগঞ্জ এর বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেসের শহর সভাপতি সুজিত সরকার। অপরদিকে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান পৌর প্রশাসক শচীন সিংহ রায়ের নিজের পাড়ার ক্লাব প্রতিকার কসকো। তাই অনেকের ভেবেছিল এই দুটি ক্লাব এর শ্যামা পূজা তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে মহা ধামাকা অপেক্ষা করছে।
যদিও কানাইলাল আগরওয়াল ও কৌশিক গুন ত্রিধারা ক্লাবের পুজো মণ্ডপ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন একবার। কিন্তু সেখানে বিধায়ককে দেখা যায়নি।অথচ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল, জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কৌশিক গুণ, কালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক সৌমেন রায় এবং কালিয়াগঞ্জ এর বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পাল কে দেখা গেলো কালিয়াগঞ্জ বেশ কয়েকটি ক্লাবের পুজোতে গিয়ে উদ্বোধন করতে।
কিন্তু দেখা গেল না জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল ও বিধায়ক সৌমেন রায় কে ত্রিধারা ক্লাবের পুজোতে উদ্বোধন করতে। ক্লাবের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেককেই বলতে শোনা গেল এই ক্লাবের কর্ণধার কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূলের সভাপতি সুজিত সরকার থাকা সত্বেও বিধায়ক সৌমেন রায় ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল কে একসঙ্গে এনে পুজোর উদ্বোধন করতে না পারাটা নাকি সুজিত সরকার চরম ব্যর্থতা।
যখন কালিয়াগঞ্জ এর বিভিন্ন ক্লাবে ক্লাবে গিয়ে তারা একসঙ্গে পুজোর উদ্বোধন করছে ঠিক তখন এখানে এমন কি হলো যে বিধায়ককে ও আনা গেল না ।তবে কি এখানেই গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ছায়া বিরাজ করছে। তাই অনেক সদস্য ক্লাবের কর্ণধার সুজিত সরকারের উপর ভীষণ ক্ষুব্ধ। অনেক সদস্য বলেন প্রতিবছরই জাঁকজমকভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হলেও এবছর তেমন কিছুই হলো না। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে যেটা জানা গিয়েছে এই ক্লাবের অনেক কর্মকর্তারা বলেছিলেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যদি হয় সেখানে প্রাক্তন কালিয়াগঞ্জ এর পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পাল কে সেখানে রাখতে হবে।কিন্তু সেখানেই নাকি আপত্তি সুজিত সরকারের।
অন্যদিকে ক্লাবের অন্যান্য কর্মকর্তারা বলেন কার্তিক চন্দ্র পাল কালিয়াগঞ্জ শহরের রুপকার। তাকে বাদ দিয়ে কোনভাবেই এই পুজো উদ্বোধন সম্ভব নয়।
তাই ক্লাব সদস্যদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ার ফলে শেষ লগ্নে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ভেস্তে যায়। ফলে একসঙ্গে এই ক্লাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখা গেল না জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল কালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক সৌমেন রায়, তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ এবং কালিয়াগঞ্জ এর প্রাক্তন পৌর পতি কার্তিক চন্দ্র পাল কে। ফলে এ বছর আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা গেল না জাঁকজমকভাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে ।
। অপরদিকে উল্টো চিত্র দেখা গেল কালিয়াগঞ্জ এর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের পতিকার কসকো ক্লাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। যে ক্লাব বর্তমানে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক শচীন সিংহ রায় এর নিজের পাড়ার ক্লাব বলে পরিচিত। যে ক্লাবের সদস্য প্রশাসক নিজেই ক্লাবের জন্মলগ্ন থেকে।কিন্তু আজ দেখা গেল সেই ক্লাবের শ্যামা পূজো উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যেখানে কালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক সৌমেন রায়, তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ, কালিয়াগঞ্জ এর বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পাল উপস্থিত ছিলেন কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন আজ প্রশাসক শচীন সিংহ রায়।অনেকের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে পুজোর তো একটা মিলন উৎসব।সব রাগ দুঃখ ভুলে সবাই একত্রে মিলিত হয় পুজোতে।
কিন্তু এমন কি হলো যে শচীন সিংহ রায় যে তার পাড়ার পুজোতে আজ উপস্থিত থাকতে পারলেন না। অথচ তার দলেরই বিধায়ক সৌমেন রায়, রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ এবং প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পাল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলাকালিন অনেক দর্শনার্থীদের বলতে শোনা গেল এমন একটি শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রশাসক শচীন সিংহ রায় উপস্থিত হওয়া অত্যন্ত দরকার ছিল। পূজোকে কেন্দ্র করে তিনি রাজনিতি করে ভালো করলেন না । তিনি এখানে উপস্থিত না থেকে তার নিম্ন মানসিকতার পরিচয় দিলেন।
তবে যাই হোক না কেন প্রশাসক শচীন সিংহ রায়ের পাড়ার ক্লাবে পুজোতে বিধায়ক, তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক এবং প্রাক্তন পৌরপতির উপস্থিতি নতুন করে আবারো প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পালের তৃণমূলে আসার সম্ভাবনা কে আরো একধাপ উসকে দিল তা কিন্তু বলা যেতেই পারে।আজ এই কসকো ক্লাবের পুজোতে বিধায়ক সৌমেন রায় ও তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ কে দেখা গেল বেশ কিছুক্ষণ ধরে প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পালের সঙ্গে অনেক গল্প করতে। তাদের দেখে মনে হচ্ছিল না যে প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পাল এখন ও তৃণমূলে নেই। কার্তিক বাবুকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনি পুরাতন ঘরেই ফিরে গিয়েছেন।
উল্লেখ থাকে যে কয়েকদিন আগেই কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক শচীন সিংহ রায় একটি দলীয় সভায় গিয়ে হুংকার দিয়ে বলেছিলেন জনতার মাঝে, আমি নকুল সিংহ বলছি কে কাকে সরায় আমি দেখে নিব। কিন্তু তার এই কথা বলার পর দেখা যাচ্ছে যে কাত্তিক পাল কে নিয়ে এত সমালোচনা করছে প্রশাসক শচীন সিংহ রায় সেই কাত্তিক পাল কেই এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস আগামী দিনের কথা চিন্তা করে । কারণ একটাই কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার পৌরপতি থাকাকালীন কার্তিক চন্দ্র পাল যেভাবে শহরের উন্নয়নে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তা মানুষের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে। তাই আগামী পুরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর সেই কার্তিক চন্দ্র পাল কেই সামনে রেখে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন এর বৈতরণী পার করতে পারে কালিয়াগঞ্জ এর তৃণমূল কংগ্রেস তেমনটাই একটি সুত্র মারফৎ খবর । এদিকে কালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক সৌমেন রায়, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি অসীম ঘোষ এবং কালিয়াগঞ্জ এর প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পাল কস কো ক্লাবের পুজো করে সকলকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানান । এদিন দেখা যায় এই ক্লাবের পক্ষে বহু গরিব মানুষদের বস্ত্র বিতরণ করতেকালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক সৌমেন রায়, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি অসীম ঘোষ এবং কালিয়াগঞ্জ এর প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পাল কে ।