কালিয়াগঞ্জ এ বিজেপির কোন কর্মসূচি না থাকায় হতাশ দলের নিচুতলার কর্মীরা।
1 min readকালিয়াগঞ্জ এ বিজেপির কোন কর্মসূচি না থাকায় হতাশ দলের নিচুতলার কর্মীরা।
তনময় চক্রবর্তী রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে না পারায় বিজেপির নিচুতলার নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে দলীয় কর্মসূচিও কার্যত লাটে উঠেছে। ফলে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এ দলের নেতৃত্বের ছন্নছাড়া অবস্থানে পদাধিকারী সহ বহু নেতাকর্মী বিজেপি ছাড়ার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন বলে সূত্রের খবর।কালিয়াগঞ্জ বিজেপি দলের এক পদাধিকারী বলেন, বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে জেলা নেতৃত্ব নিজেদের গুটিয়ে রেখেছে। সেভাবে কোনও কর্মসূচি নেই। এই পরিস্থিতিতে কালিয়াগঞ্জ এ পদাধিকারীদের উপেক্ষা করে বিধায়ক নিজের মর্জিমতো সবকিছু করছেন। এটা দলের রীতি বিরোধী এবং সংগঠনের পক্ষে ক্ষতিকর। কিন্তু, বলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। তাই অনেকেই দল ছাড়ার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন।বিজেপির মণ্ডল স্তরেও এ নিয়ে ক্ষোভ, অসন্তোষ রয়েছে। তাদের অভিযোগ, ভোটের ফল প্রকাশের পর মণ্ডল স্তরের নেতাকর্মীদের কোনও কর্মসূচি দিতে পারেনি।
এই নিষ্ক্রিয়তায় সাধারণ মানুষ বিজেপির কথা ভুলতে বসেছে।কালিয়াগঞ্জ এর বিজেপির মণ্ডল কমিটির এক পদাধিকারী বলেন, সাধারণ মানুষের সামনে আমরা যেতে পারছি না। করোনাকালে গরিব মানুষ সমস্যায় রয়েছে। ভোটের আগে এদেরই অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। ওদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। করোনা মহামারীতে ওইসব মানুষ এখন সঙ্কটে পড়ে আমাদের কাছে আসছেন। কিন্তু, কিছু করতে পারছি না।
নেতাদের তরফে করোনা সঙ্কটে জর্জরিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে না। তাই নিরুপায় হয়ে একপ্রকার পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এভাবে বিজেপি করা যাবে না।আরএক বিজেপি নেতা বলেন , দেখছি ভোটের পর হঠাৎ করে আমাদের বিধায়ক কিছু এলাকায় নিজেদের মতো প্রোগ্রাম করছেন।তার পর তিনি কালিয়াগঞ্জ এ থাকছেন না।সব সময় বাইরে বাইরে থাকছেন। অথচ রায়গঞ্জের বিধায়ক নানান ধরনের জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি করে ইতিমধ্যে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এতে কালিয়াগঞ্জ মানুষের বিজেপির প্রতি ক্ষোভ বাড়ছে। তার থেকেও বড় কথা যেখানে তাঁরা যাচ্ছেন, সেখানকার মণ্ডল নেতৃত্বকে আগে থেকে কিছু জানানো হচ্ছে না। আমাদের দলের নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না।
মণ্ডল সভাপতিদের আগাম জানানো হচ্ছে না। মনে হচ্ছে, বিধায়ক এর মর্জিতেই চলছে দল। এটা দলীয় পদের অপমান।বিজেপির জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এক পদাধিকারী বলেন, গ্রামের ও শহরের অনেক বিজেপি নেতা আছে তাঁদেরও দল ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারছে না।
করোনাকালে তাঁদের নিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচি কেন নেওয়া হচ্ছে না তা বুঝতে পারছি না।এখন যেখানে কালিয়াগঞ্জ এ তৃণমূল প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম করে তাদের সংঘটন কে গুছিয়ে নিচ্ছে ঠিক তখন বিজেপি নেতা দের দেখা যাচ্ছে না মাঠে ময়দানে ।
এর ফলে কালিয়াগঞ্জ মানুষের কাছে বার্তা যাচ্ছে শহরে তৃণমূল ছাড়া আর কোনও দল নেই। উন্নয়নে, মানুষের সঙ্কটে তৃণমূলই ভরসা। বিজেপির নিষ্ক্রিয়তার জন্যই আজ তৃণমূল এই জায়গা করে নিয়েছে। মানুষ ক্রমশ বিজেপির থেকে সরে যাচ্ছে।নিচুতলার কর্মীদের ক্ষোভ, করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বিজেপি কেন তৃণমূলের প্রচারের পাল্টা প্রচারে নামতে পারছে না। দলের এক সদস্য বলেন, তৃণমূলের প্রচার মানুষ বিশ্বাস করছে।
তাই পাড়ায় সাধারণ মানুষের কাছে শুনতে হচ্ছে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজ্যের মানুষকে বিপদে ফেলার জন্য ভ্যাকসিন দিচ্ছে না। বেসরকারি ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন বিক্রি করে দিচ্ছে। এছাড়া পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মানুষের ক্ষোভ তো আছেই।
তাই এখন নিজেকে বিজেপি কর্মী পরিচয় দিতে লজ্জা হয়। এভাবে আর কতদিন নিজেকে গুটিয়ে রাখতে পারব জানি না। কালিয়াগঞ্জ এরবিজেপির এক জেলা নেতা বলেন ভোটের আগে গোটা দেশ জানত পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় আসছে। তা না হওয়ায় দলের নেতাকর্মীরা সত্যিই হতাশ। তাদের বিশ্বাস আবার আমরা কাজে নামব এর ফলে সব ঠিক হয়ে যাবে।