একলা চলোর দাবি জোরালো হচ্ছে বাম শিবিরে
1 min readএকলা চলোর দাবি জোরালো হচ্ছে বাম শিবিরে
এ যেন তুষের আগুন। সেই ২ মে থেকে ধিকিধিকি জ্বলছে। নেভার কোনও নাম নেই। বরং সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই উগরে দিচ্ছেন নিজেদের ক্ষোভ, দুঃখ, যন্ত্রণা। এদিন আলিমুদ্দিনে মহম্মদ সেলিমের সাংবাদিক সম্মেলনের পরে তা যেন আরও বেড়েছে। বস্তুত বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে এই প্রথম আলিমুদ্দিনে সাংবাদিক সম্মেলন হল। ফল ঘোষণার দিন সংযুক্ত মোর্চার তরফে শুধুমাত্র বিমান বসুর একটি বিবৃতি সামনে আসে। কোনও নেতা সামনে আসেননি। তবে কাটাছেঁড়া চলছেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের রাজ্য কমিটির এক নেতা যেমন বললেন, বিধানসভায় মানুষের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য কোনও বাম প্রতিনিধি রইলেন না। এর দায় তো কাউকে নিতেই হবে।
প্রশ্ন উঠেছে, এই দায় কে নেবে?একের পর এক চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত। প্রথমেই ইউপিএ ১ সরকার থেকে বেরিয়ে আসা। সে সময় বহু বাম নেতাকর্মী বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্তের কারণ সাধারণ মানুষকে বোঝানো যায়নি। এরপর ঘুরেফিরে সেই কংগ্রেসের সঙ্গে রাজ্যে জোট বাঁধা। আর রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ, বাম কর্মী সমর্থকদের আক্ষেপ, আইএসএফের সঙ্গে জোট কফিনে শেষ পেরেক পুঁতেছে।এ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ইতিমধ্যেই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সামনে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে দমদম উত্তরের প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্যকে। এমনকী দলের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, তন্ময়ের বক্তব্য পুরোটাই তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। দল তা সমর্থন করে না। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে aajkaal.in কে তন্ময় ভট্টাচার্য বললেন, ‘স্তালিন ‘কপচানোর’ বদলে স্তালিন ‘উদ্ধৃত’ করে, এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করব এখন। তবে আমার বক্তব্য থেকে সরে আসছি না।
এত বড় হারের দায় কাউকে না কাউকে তো নিতেই হবে। ব্রিগেডের মঞ্চে আব্বাস সিদ্দিকি ওঠার পরে যেভাবে ভাষণরত অধীর চৌধুরীকে থামিয়ে দেন আমাদের একজন নেতা সেটা সবার চোখে লেগেছিল। বিমান দা বিষয়টি সামলে দেন। তবে পার্টির অন্দরে রদবদলে প্রয়োজন।’সিপিএমের অন্য অনেক নেতা নিজেদের নাম প্রকাশ্যে না আনার শর্তে তুলে আনছেন ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ। তাঁদের অভিযোগ, শুধুমাত্র রায়গঞ্জ থেকে নিজে দাঁড়াবেন বলেই সে সময় কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ব্যাপারে আগ্রহী হননি সেলিম।
ফলে তাঁর এবং দীপা দাশমুন্সির ভোট কাটাকাটিতে জিতে যান তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়াল। তাঁদের এও অভিযোগ, নিজে চণ্ডীতলা থেকে দাঁড়াবেন বলেই এবার আইএসএফ-এর সঙ্গে জোটের ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন সেলিম। যাতে সংখ্যালঘু ভোট তাঁর ঝুলিতে আসে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন ফেসবুকে লাইভ হয়।
সেখানে প্রচুর কমেন্ট দেখা যাচ্ছে যা অভিযোগে বিদ্ধ করছে বিমান বসু এবং মহম্মদ সেলিমকে। আবার ফেসবুকেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আপ্ত সহায়ক জয়দীপ মুখার্জি লিখেছেন, ‘পার্টির নেতা-নেত্রীদের নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্যা ন ক্লাব অবিলম্বে বন্ধ হোক। সংশ্লিষ্টরা আপত্তি জানান। একেবারে গোড়া থেকে সংশোধন ও আত্ম অনুশীলন শুরু হোক।’সব মিলিয়ে একদিকে শরিক দলগুলোর দূরত্ব বাড়ানো আর অন্যদিকে নিজেদের দলের মধ্যে কঠোর সমালোচনা। এ থেকে আগামী নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আলিমুদ্দিন কোনও উদ্যোগ নেবে কি না সেদিকে তাকিয়ে রয়েছেন দলের একাধিক নেতাকর্মী।