বামেদের নিশানা মোদী, কংগ্রেসের কালো হাত ফর্সা হয়ে গেল কী করে ?
তনময় চক্রবর্তী, কলকাতা থেকে আজ কলকাতা ব্রিগেড সমাবেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বললেন ‘বাংলায় ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি শুরু করেছিল বামেরা। তারা স্লোগান তুলে বলত কংগ্রেসের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও। এমন স্লোগান দিয়ে ওরা ক্ষমতায় এসেছিল। প্রায় তিন দশক ক্ষমতায় ছিল। আমি জানতে চাই, আজ সেই কালো হাত কীভাবে গোরা হয়ে গেল! যে হাতকে বামপন্থীরা কালো বলত তা সাদা হয়ে গেল কী করে? যে হাত ভাঙার কথা বলেছিল, এখন সেই হাতের আশীর্বাদ চাইছে।’২০১৬-র ভোটে যখন জোট হয় তখনও জড়তা কাটিয়ে বহু জায়গায় কর্মীদের নামাতে পারেনি সিপিএম-কংগ্রেস। অনেকের মতে, পুরনো দিনের লোকেদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল।
১০ বছর আগেও ভোট এলে পাড়ায় পাড়ায় সিপিএম স্লোগান দিত, ‘আধা ফ্যাসিস্ত কাটা হাতে একটিও ভোট নয়!, বাহাত্তরের কালো দিন ফিরতে আর দিচ্ছি না!’পাল্টা কংগ্রেস বলত, ‘সাঁইবাড়ির নরখাদক সিপিএম বাংলা থেকে দূর হঠো!’ কিন্তু ‘বৃহত্তর স্বার্থ’ আর ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতি’তে এখন বাম-কংগ্রেস জোট হয়েছে। গত রবিবার অধীর চৌধুরীর গলায় শোনা গিয়েছে ইনকিলাব আর বিমান বসুরা ছুটে যাচ্ছেন বিধান ভবনে। এই রবিবার সেই জোট নিয়েই বামেদের নিশানা করতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সাতের দশকে যে বামপন্থীরা সিদ্ধার্থ রায়ের জমানায় রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন তাঁরা যেমন এই জোটকে মন থেকে মানেননি তেমন যে কংগ্রেসীরা সিপিএম জমানায় নির্যাতিত হয়েছেন তাঁরাও এটাকে ভাল ভাবে নেননি।অনেকের মতে, এদিন হয়তো বামেদের ভোট পেতে মোদী সেই পুরনো স্মৃতিকেই উস্কে দিতে চেয়েছেন। যাতে লোকের মনে পড়ে পাড়ায় পাড়ায় ইন্দিরা গান্ধী সম্পর্কে সিপিএম দেওয়ালে দেওয়ালে কী লিখত বা কংগ্রেসীরা জ্যোতিবাবু, চন্দন বসুদের নিয়ে কী কী বলতেন। যদিও এদিন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের কাছে মানুষের অধিকারটাই শেষ কথা। মানুষের অধিকারের জন্যই সাতাত্তরের বামফ্রন্ট আবার সেই অধিকারের জন্যই এই জোট।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর মুখে তৃণমূলের সমালোচনা সাজে না। কারণ এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ওঁদের সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। আরএসএস-ই মমতাকে দুর্গা আখ্যা দিয়েছিল।’