নিয়োগ-দুর্নীতির ‘কেঁচো খুড়তে গিয়ে কেউটে ‘ মমতার উদ্দেশে মেসেজ ফাঁস করার হুমকি রাজীবের

নিয়োগ দুর্নীতি প্রশ্নে এ বার সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ করে ‘মেসেজ ফাঁস’ করে দেওয়ার হুমকি দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কদিন আগে পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভায় সদস্য ছিলেন রাজীব। কদিন আগে মন্ত্রিসভা ও দল থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তার পর এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের ব্যাপারে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তিনি। ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছে বুধবার দুপুরে।

এদিন আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের কর্মিসভা থেকে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিদি জানিয়েছিলেন, বন সহায়ক পদে নিয়োগে কারসাজি হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘এক জন সে সব করে বিজেপিতে পালিয়ে গেছে। তবে রাজ্য সরকার তা নিয়ে তদন্ত করছে।’ রাজ্যে বনমন্ত্রী ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তো বটেই অনেকেই ধরে নেন যে মমতা নিশানা করেছেন তাঁকেই। তাই জবাব দিতে আর বিলম্ব করেননি এই তরুণ নেতা। বুধবার বিকেলে হুগলির ধনেখালিতে বিজেপির সভা ছিল। সেই মঞ্চে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। শুভেন্দুকে পাশে নিয়ে রাজীব বলেন—

  • মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এদিন আলিপুরদুয়ারে বলেছেন, বন সহায়কের চাকরিতে কারসাজি হয়েছে, উনি তদন্ত করবেন। তা হলে বলি শুনুন, বন সহায়কের নিয়োগ আমি নিরপেক্ষ ভাবে বোর্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলাম।
  • ‘৮ অক্টোবর সকালে বন সহায়ক নিয়োগের ব্যাপারে বীরভূমের এক বড় নেতা ফোনে আমাকে ধমকি দিয়ে বলেছিলেন বন সহায়কের চাকরি সব তাঁকে দিতে হবে’।
  • ‘আমি আপনাকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মেসেজ করে তা জানিয়েছিলাম। আপনি পাল্টা ফোন করে আমাকে বলেছিলেন, সব জেলায় জেলায় তৃণমূলের নেতা কর্মীদের কিছু কিছু করে দিয়ে দাও’।
  • ‘এতোদিন মুখ খুলিনি। আপনার কথার প্রেক্ষিতে মুখ খুলতে বাধ্য হলাম। আমার কাছে ওই মেসেজ এখনও আছে। ৮ অক্টোবর সকাল ৯ টা ৫৮ মিনিটে আপনার সঙ্গে কথা হয়েছিল।’
  • ‘শুধু তা নয়, কোথা কোথা থেকে সুপারিশ এসেছিল, তৃণমূলের কোন নেতা কী সুপারিশ করেছিলেন, কালীঘাট থেকে কী সুপারিশ এসেছিল, কোন বিধায়ক সুপারিশ করেছিলেন সব আমি যত্ন করে রেখে দিয়েছি। কেঁচো খুড়তে খুড়তে কেউটে সাপ আপনি বের করছেন।’
  • ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, আপনি এখনও আলিপুরদুয়ারে রয়েছেন। ওখানে আপনার জেলা সভাপতিকে জিজ্ঞেস করুন উনি কী সুপারিশ করেছিলেন।’
  • ‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, আপনি বন সহায়কের প্যানেল বাতিল করে দিন। তা হলেই বুঝে যাবেন, দুধ কি দুধ পানি কি পানি হয়ে যাবে’।
  • ‘কেবল বন সহায়ক কেন, বিগত দিনে যত চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ হয়েছে, তার জন্য কোথা কোথা থেকে সুপারিশ এসেছে তাও আমি জানি। চ্যালেঞ্জ করছি, তা নিয়েও তদন্ত করে দেখান। পারবেন তো সামলাতে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *