জন্ম দেননি চারশো বছর এই গ্রামে কোনও প্রসূতি সন্তানের
1 min read
ভোপাল, : চারশো বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও অলিখিত প্রথা মেনে মধ্যপ্রদেশের রায়গড়ের শাঙ্কা শ্যামজি গ্রামে কোনও প্রসূতি সন্তানের জন্ম দেন না। অবশ্য প্রথা বলা ঠিক নয়, বলা উচিত ভয়। আর সেই ভয়ের কারণেই গ্রামের বাইরে কোনও হাসপাতালে বা জরুরি প্রসবের ক্ষেত্রে গ্রামের বাইরে নির্মিত এক ঘরে সন্তানের জন্ম দেন প্রসূতিরা।
কথিত আছে, রাজধানী ভোপাল থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরের এই শাঙ্কা শ্যামজি গ্রামে আজ থেকে চারশো বছর আগে ১৬’শ শতকে এক মন্দির নির্মাণের কাজ চলছিল। তখনই এক মহিলা জাঁতায় ধান ভাঙছিলেন। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, সেই আওয়াজে মন্দিরের নির্মাণ কাজে বিঘ্ন ঘটে। এবং দেবী রুষ্ট হয়ে শাপ দেন। তারপর থেকেই সন্তানসম্ভবা কোনও মহিলা গ্রামের ভিতরে সন্তানের জন্ম দেন না। কারণ গ্রামের মধ্যে সন্তানের জন্ম হলে, হয় সেই সদ্যোজাত বিকলাঙ্গ জন্ম নেয়, নয়তো মা বা সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়। গ্রাম পঞ্চায়েত নরেন্দর গুর্জরের মতে, এটা কোনও কুসংস্কার নয়। হাতে–কলমে এর প্রমাণও তাঁরা পেয়েছেন। সে কারণেই চারশো বছরের পুরনো প্রথা ভাঙার সাহস কেউ দেখান না। কোনও প্রসূতিই চাইবেন না যে তাঁর সদ্যোজাতের কোনও ক্ষতি হোক। তাই প্রসবের সময় হলেই চিকিৎসকের পরামর্শমতো অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা গ্রামের বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান। আর বাড়িতে থাকাকালীন প্রসবযন্ত্রণা শুরু হলে জরুরি অবস্থায় প্রসূতিকে গ্রামের বাইরের একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে প্রসব করানো হয়। চারশো বছর আগের এই ভয়ের কারণে এই যুগেও একটা গোটা গ্রাম এই ধরনের বিশ্বাস নিয়েই চলছে। অবশ্য এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ শিক্ষা যে এখনও দেশের প্রত্যন্ত অনেক গ্রামেই পৌঁছয়নি তা এই ঘটনাকে সামনে রাখলেই স্পষ্ট হয়।